অনুরাগ বসু নির্মিত বহুল আলোচিত বলিউড সিনেমা ‘মার্ডার’। মহেশ ভাট প্রযোজিত এ সিনেমা ২০০৪ সালে মুক্তি পায়। এতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন মল্লিকা শেরাওয়াত ও ইমরান হাশমি। সিনেমাটিতে তাদের রোমান্স, ঘনিষ্ঠ দৃশ্য নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল।

মূলত, এরপরই বলিউডে ‘সিরিয়াল কিসার’ হিসেবে পরিচিতি পান ইমরান হাশমি। দীর্ঘ অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। জুটি বেঁধেছেন অনেক নায়িকার সঙ্গে। আলিয়া ভাটের সঙ্গেও রোমান্সের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ইমরান হাশমিকে। তবে তা প্রত্যাখান করেন এই তারকা অভিনেতা।

২০১৬ সালে আলিয়া ভাটের বিপরীতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় ইমরান হাশমিকে। এক সাক্ষাৎকারে এই প্রস্তাব ফেরানোর কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি। ইমরান হাশমি বলেছিলেন, “আমি ভাই হিসেবে তার সঙ্গে কাজ করতে পারি, অন্য কোনো কিছু আমাকে পীড়া দেবে। আমি আমার কাজিনের সঙ্গে রোমান্স করতে পারি না। আমার মনে হয় না এমনটা কেউ করেছে, এটা অস্বস্তিকর।”

আরো পড়ুন:

ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে সোনু সুদের স্ত্রী

মা হলেন অ্যামি জ্যাকসন

ব্যক্তিগত জীবনে ইমরান হাশমি ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আলিয়া ভাট হিন্দু ধর্ম অনুসরণ করেন। এসব সমীকরণ মিলিয়ে কেউ কখনো ভাবতেই পারেননি আলিয়া ভাট-ইমরান হাশমি সম্পর্কে চাচাত ভাই-বোন। আলিয়া ভাট-ইমরান হাশমির সম্পর্কের যোগসূত্র কোথায়?

টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানায়, ইমরান হাশমির দাদি মেহেরবানু মোহাম্মদ আলী (পূর্ণিমা দাস ভার্মা নামে জনপ্রিয় ছিলেন)। বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট ও মুকেশ ভাটের মা শিরিন মোহাম্মদ আলীর বোন মেহেরবানু। শিরিন-মেহেরবানুর মা ছিলেন লখনৌর বাসিন্দা এবং তিনি একজন মুসলিম ছিলেন। আর তাদের বাবা ছিলেন তামিল ব্রাহ্মণ রাম শেষাদ্রি আয়াঙ্গার। আলিয়া ভাট মহেশ ভাটের কন্যা। মহেশ ভাট ইমরান হাশমির কাকা আর আলিয়া তার চাচাত বোন।

মেহেরবানু প্রথমে ইমরান হাশমির দাদা সৈয়দ শওকত হাশমিকে বিয়ে করেন। কিন্তু এ বিয়ে ভেঙে যায়। পরে প্রযোজক-পরিচালক ভগবান দাস ভার্মার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মেহেরবানু বা পূর্ণিমা দাস বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী ছিলেন। দাদির পথ অনুসরণ করে অভিনয়ে পা রাখেন ইমরান হাশমি।

ইমরান হাশমি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘টাইগার থ্রি’। ‘টাইগার’ ফ্র্যাঞ্চাইজির এ সিনেমা ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী মুক্তি পায়। এতে আইএসআই-এর প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেলের চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান তিনি।

বর্তমানে ইমরান হাশমির হাতে তেলেগু ভাষার ‘ওজি’ সিনেমার কাজ রয়েছে। সুজিত পরিচালিত এ সিনেমায় আরো অভিনয় করছেন— পবন কল্যাণ, প্রকাশ রাজ, অর্জুন দাস প্রমুখ। ২৫০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে অ্যাকশনার ঘরানার এই সিনেমা। তা ছাড়াও তেলেগু ভাষার ‘জি-টু’, ‘গ্রাউন্ড জিরো’, ‘আওয়ারাপান টু’ সিনেমার কাজও ইমরান হাশমির হাতে রয়েছে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আল য় ভ ট ম হ রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য ঘটনার ‘কেশারি টু’

১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল ভারত উপমহাদেশের পাঞ্জাব রাজ্যের অমৃতসর শহরের জালিয়ানওয়ালাবাগে জড়ো হন ১৫-২০ হাজার ভারতীয়। তাদের অধিকাংশই ছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের। তারা সেখানে একত্র হয়েছিলেন পাঞ্জাবি নববর্ষ উদযাপন করতে। নবান্ন উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি তাদের উদ্দেশ্য ছিল দমন-নিপীড়নমূলক রাওলাত আইনের বিপক্ষে প্রতিবাদ জানানো। এই আইনের ফলে খর্ব হয়েছিল গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। শুরু হয়েছিল বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার এবং অনির্দিষ্ট সাজার অন্যায্য সুযোগ। ফলে সাধারণ মানুষ এক হয়ে নির্বিচারে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বৈশাখী উৎসব উদযাপন করতে আসা জনতা তখনও জানে না কী অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। হঠাৎ সেই বাগানে ঢুকে পড়ে ৫০ জন ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাসদস্য। কর্নেল রেজিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে সাধারণ নাগরিকদের বাগান থেকে বের হওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাঁর আদেশে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে সৈনিকেরা। টানা ১০ মিনিটে প্রায় ১৬৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে সৈনিকেরা। কী হচ্ছে তা বুঝে ওঠার আগেই প্রাণ হারায় উপস্থিত জনতার একাংশ। পালানোর পথ না পেয়ে দেয়াল বেয়ে ওপরে উঠে অন্য পাশে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনেকে। কেউ সফল হয়ে কোনোমতে প্রাণ নিয়ে বেঁচে যান, কেউ ব্যর্থ হয়ে প্রাণটা হারান। ব্রিটিশদের হিসাবে এ হত্যাকাণ্ডে নিহত হন প্রায় ৪০০ জন। ভারতীয়দের হিসাবে তা ১ হাজারের কাছাকাছি।

১০৬ বছর আগের সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত হয়েছে বলিউডের নতুন সিনেমা। নাম ‘কেশারি চ্যাপ্টার টু: দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব জালিয়ানওয়ালাবাগ’। পুষ্পা পালত ও রঘু পালতের লেখা বই ‘দ্য কেস দ্যট শক দ্য এম্পায়ার’ অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন কারণ সিং ত্যাগী। এই সিনেমায় আইনজীবী চেত্তুর সি শংকরণ নায়ারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার। শংকরণ ছিলেন প্রকৃত অর্থে একজন দেশপ্রেমিক আইনজীবী এবং ব্রিটিশ শাসনের তীব্র সমালোচক। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর ব্রিটিশ রাজত্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন আইনজীবী সি শংকরণ নায়ার। সিনেমাটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত অক্ষয় কুমার। তিনি এখন ব্যস্ত সিনেমার প্রচার ও প্রচারণার কাজে।

সিনেমাটি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে অক্ষয় বলেন, ‘আমার দাদু নিজে সেই বিভীষিকা দেখেছিলেন। সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা তিনি আমার বাবাকে বলেছিলেন, আর বাবা আমাকে। ছোট থেকেই জানি– এই ইতিহাস কতটা বেদনার, কতটা সত্য। আমি ইতিহাসবিদ নই। আমি একজন অভিনেতা মাত্র। এ সিনেমাটি একটি বই অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। বইটি পড়ে যা বুঝেছি এবং বাবার কাছ থেকে যা কিছু শুনেছি, ‘কেশারি চ্যাপ্টার ২’ এ সব কিছুরই সংমিশ্রণ। আমি চাই সিনেমাটি সব ধরনের দর্শক দেখুক। তাহলে মানুষ অন্তত বুঝতে পারবে আদতে কী ঘটেছিল সেই সময়।’ কিছুদিন আগে মুক্তি পেয়েছে সিনেমার ট্রেলার। যার ক্যাপশনে লেখা আছে, একজন সাহসী মানুষ তাঁর সাহস দিয়ে পুরো সাম্রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের ইতিহাসে সবচেয়ে অন্ধকার সময়।’ এই সিনেমায় আর মাধবনও ব্রিটিশদের আইনজীবীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। অনন্যা পাণ্ডেকে দেখা যাবে আইনের ছাত্রীর ভূমিকায়। ট্রেলারে দেখা যাচ্ছে, মাধবন আর অক্ষয়ের আইনি লড়াই। যেখানে অক্ষয় কুমারকে বলতে শোনা যাচ্ছে, জালিয়ানওয়ালাবাগের সত্য সারাবিশ্বের সামনে তুলে ধরবেন তিনি। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় অক্ষয় অভিনীত ‘কেশারি’। এ সিনেমায় অক্ষয় দেখিয়েছিলেন, ১৮৯৭ সালের যুদ্ধে শিখ সৈন্যদের বীরত্বের কথা। এবার তিনি নিয়ে এসেছেন ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের কথা। সিনেমাটি আগামীকাল ভারতজুড়ে মুক্তি পাবে। এখন দেখার বিষয় আগের কেশারি সিনেমার মতো এই সিনেমাটি দর্শকরা কেমন পছন্দ করেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ