অনলাইনে যে প্রলোভন দেখিয়ে সাইবার হামলা চালাচ্ছে হ্যাকাররা
Published: 26th, March 2025 GMT
অনলাইনে বিনা মূল্যে যেকোনো ফরম্যাটের ফাইল কনভার্ট করে দেওয়ার প্রলোভনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ব্যাংকিং তথ্য, পাসওয়ার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য হ্যা3/25/2025 9:48:59 PMকাররা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)। সম্প্রতি এক সতর্কবার্তায় এফবিআই জানিয়েছে, ভুয়া ডকুমেন্ট কনভার্টার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদমকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের তৈরি ভুয়া কনভার্টার ওয়েবসাইটগুলোকে সহজেই মানুষের নজরে আনছে হ্যাকাররা।
সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক ওয়েবসাইট ব্লিপিং কম্পিউটারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হ্যাকাররা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিভ্রান্ত করতে নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। এ জন্য বিশ্বাসযোগ্য ওয়েবসাইটের নকল সংস্করণ তৈরি করে সেগুলোর ওয়েব ঠিকানা (ইউআরএল) সামান্য পরিবর্তন করে নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করছে তারা, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা কঠিন। এ সম্পর্কে এফবিআই ডেনভারের জনসংযোগ কর্মকর্তা ভিকি মিগোয়া জানিয়েছেন, আসল ওয়েবসাইটের সঙ্গে হুবহু মিল রেখে ভুয়া ওয়েবসাইটের ঠিকানা তৈরি করছে হ্যাকাররা। কখনো ওয়েব ঠিকানায় মাত্র একটি অক্ষর পরিবর্তন অর্থাৎ ‘সিও’ এর বদলে ‘আইএনসি’ যোগ করে থাকে তারা। এতে ব্যবহারকারীরা বুঝতে পারেন না যে তারা ভুয়া ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন।
এ ধরনের প্রতারণা শুধু ব্যক্তিগত তথ্য চুরির জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে তা নয়, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের তথ্য চুরির জন্যও ব্যবহার করা হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইবার নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভুয়া ফাইল কনভার্টারের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া স্টেটের ড্যাভেনপোর্ট শহরের একটি প্রতিষ্ঠানে র্যানসমওয়্যার হামলা চালানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের প্রতারণা ছোট পরিসরের মনে হলেও এর মাধ্যমে বড় ধরনের সাইবার আক্রমণ হতে পারে।
এফবিআইয়ের তথ্যমতে, সাইবার প্রতারণা ঠেকাতে সচেতনতার বিকল্প নেই। যেকোনো অনলাইন কনভার্টার ব্যবহারের আগে ওয়েব ঠিকানা ভালোভাবে যাচাই করা উচিত। অনেক সময় ভুয়া ওয়েবসাইটের লিংক দেখতে আসল ওয়েবসাইটের মতোই মনে হয়, তবে সামান্য পরিবর্তন থাকে, যা খেয়াল করা দরকার। এ ছাড়া সার্চ ইঞ্জিনে শীর্ষে থাকা বিজ্ঞাপন দেখে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়, কারণ এগুলোর মধ্যে অনেক প্রতারণামূলক হতে পারে। যেকোনো ফাইল কনভার্টার ব্যবহারের আগে এর রিভিউ ও রেটিং যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে নিরাপদ পদ্ধতি হলো পরিচিত প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার বা অ্যাপ ব্যবহার করা, যাতে কোনো তৃতীয় পক্ষের ওয়েবসাইটের ওপর নির্ভর করতে না হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর কনভ র ট র ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়