Prothomalo:
2025-03-26@13:30:22 GMT

জাতীয় ঐক্যের ভিত সুদৃঢ় হোক

Published: 26th, March 2025 GMT

আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয় এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। এই স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। অসংখ্য মা-বোন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

স্বাধীনতার এই দিনে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি সেই বীর সন্তানদের, যাঁরা দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। স্মরণ করি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি ধীরে ধীরে একটি জনগোষ্ঠীকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। স্মরণ করি জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে, যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন।

স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের সংবিধানেও সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও যে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায়নি, সে কথা মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও স্বীকার করেছেন। এর পেছনে আর্থসামাজিক বৈষম্য ও সুশাসনের ঘাটতি যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতাও। স্বাধীনতার পর থেকে যেসব রাজনৈতিক দল দেশশাসনের ভার নিয়েছে, তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, পূর্বাপর সরকার জনগণের কাছে দেওয়া অঙ্গীকার পূরণের চেয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থেকেছে। নিকট অতীতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণের পাশাপাশি দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটের শাসন কায়েম করেছিল। এর পরিণতি হলো ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মতো চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানেরও মূল লক্ষ্য ছিল দেশে রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা। কিন্তু গত সাড়ে সাত মাসে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। যেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, তা থেকে এর অংশীজনেরা ক্রমেই দূরে সরে গেছে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী দল ও পক্ষগুলোর মধ্যে বিভেদ প্রকট হয়েছে।

দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক শাসনকে মজবুত করতে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে, এ কথা জোর দিয়ে বলা যাবে না। বেশির ভাগই জাতীয় স্বার্থের চেয়ে দলীয় স্বার্থকে বড় করে দেখছে।

এরপরও আমরা আশা করতে চাই, রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে একটা ঐকমত্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা চলছে, তা দূর করার ক্ষেত্রে অবিলম্বে নির্বাচনের বিকল্প নেই। আর সেই নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। গণতন্ত্রে জনগণের রায়ই চূড়ান্ত কথা। এ ক্ষেত্রে ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বাক্‌স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিরঙ্কুশ করার ক্ষেত্রে যেসব আইনি বাধা আছে, সেগুলো বাতিল করতে হবে। একটি কার্যকর ও টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইলে সংবিধানে বর্ণিত প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

এবারের স্বাধীনতা দিবসের অঙ্গীকার হোক বিভেদ নয়, ঐক্য; বিদ্বেষ নয়, সম্প্রীতিই হোক বাংলাদেশের মানুষের সামনে চলার সোপান। স্বাধীনতা দিবস সবার জন্য সুখ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক। সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক স ব ধ নত র জন ত ক দ র জন ত ক জনগণ র র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানালেন ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। 

বুধবার ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন এই তথ‌্য জা‌নিয়েছে।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিনকে পাঠানো বার্তায় ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ভারত সরকার, জনগণ এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বহুমুখী, যা বাণিজ্য, বহুমুখী যোগাযোগ, উন্নয়ন সহযোগিতা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও জনসাধারণের পারস্পরিক বিনিময়ের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ ও ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি, সাগর মতবাদ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বাংলাদেশ।

ভারত বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও অগ্রসরমান দেশ হিসেবে দেখতে চায় ব‌লেও বার্তায় উল্লেখ ক‌রেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী।

অন‌্যদিকে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় দিবসে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। এই দিনটি আমাদের অভিন্ন ইতিহাস ও আত্মত্যাগের প্রতিফলন, যা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তুলেছে।

মো‌দি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের সম্পর্কের পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করে আসছে এবং এই সম্পর্ক বহু ক্ষেত্রে বিকশিত হয়েছে, যা উভয় দেশের জনগণের জন্য বাস্তব সুবিধা বয়ে এনেছে। আমরা পারস্পরিক স্বার্থ ও উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের অংশীদারত্ব আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: সৈয়দা রিজওয়ানা
  • নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া সংবিধান পরিবর্তন করা আসলে কঠিন: জোনায়েদ সাকি
  • স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানালেন ভারতের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী
  • মহান স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছা জানালেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
  • একাত্তরের স্বাধীনতা ও চব্বিশের স্বাধীনতা পরস্পরবিরোধী নয়: নাহিদ ইসলাম
  • ‘সংস্কার ও বিচার ছাড়া ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা হলে জনগণ প্রতিরোধ করবে’
  • ১০০ গাড়ি নিয়ে যারা ইলেকশন ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে আমরা বুঝি: মির্জা ফখরুল
  • সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা হচ্ছে: তারেক রহমান
  • ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করব: হাসনাত আব্দুল্লাহ