আর্জেন্টিনার কাছে ব্রাজিলের ‘অসহায় আত্মসমর্পণ’
Published: 26th, March 2025 GMT
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে কোনোপ্রকার রাখঢাক না রেখেই ব্রাজিলিয়ান তারকা ফুটবলার রাফিনিয়া রোমারিওর সঙ্গে ‘রোমারিও টিভি’ পডকাস্টে বলেছিলেন, ‘আমরা ওদের (আর্জেন্টিনা) গুঁড়িয়ে দেব। কোনো সন্দেহ নেই। একদম গুঁড়িয়ে দেব মাঠের ভেতরে, দরকার পড়লে মাঠের বাইরেও।’
রাফিনিয়ার ওই মন্তব্য যে আর্জেন্টিনা ভক্তদের গায়ে জ্বালা ধরিয়ে ছিল তা অনুমেয়। তবে খেলার মাঠে রাফিনিয়ার কথার জবাব যেন ফুটবলে দেখালেন লিওনেল স্কালোনির আর্জেন্টিনা। ভক্তদের মনকে গোলবৃষ্টিতে সিক্ত করলেন আলভারেজ সিমিওনেরা।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে সুপার ক্লাসিকোতে জেতার জন্য মাঠে নামলেও খেলার শুরুতেই সে স্বপ্ন ভেস্তে যায় ব্রাজিলের। প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করে খেলার ফলাফল যেন নির্ধারণই করে দেয় দরিভাল জুনিয়রের দল। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিলের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখতে হয়েছে ভক্তদের।
বুয়েন্স আইরেসের মনুমেন্তালে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালের ম্যাচে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লিওনেল স্কালোনির দল।
খেলা শুরুর চতুর্থ মিনিটে প্রথম সুযোগ পেয়েই ব্রাজিলের ওপর আঘাত হানে আর্জেন্টিনা। দুই ডিফেন্ডার গিয়ের্মে আরানা ও মুরিলোর মাঝে বল পেয়ে গোল করেন আলভারেজ। ম্যাচের ২০ মিনিট পেরোনোর আগেই সেলেসাওদের বিপক্ষে জোড়া গোলের লিড নেয় আর্জেন্টিনা।
হুলিয়ান আলভারেজ আর এনজো ফার্নান্দেজের কৃতিত্বে খেলা শুরুর আগেই মনোবল ভাঙে ব্রাজিলের ডিফেন্সে। ব্রাজিলের হয়ে কুনহা এক গোল শোধ করলেও ম্যাক অ্যালিস্টার ৩৮ মিনিটে ফের লিড দ্বিগুণ করেন। আর পুরো ৪৫ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ৩-১। এই গোলের পরেই তর্কযুদ্ধে জড়ান দুই দলের ফুটবলাররা। এজন্য দেখতে হয়েছে হলুদ কার্ডও।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৭১তম মিনিটে আর্জেন্টিনার হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন আলমাদার বলদি হিসেবে নামা গুইলিয়ানো সিমিওনে। নিজেদের স্কোর বাড়িয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে ৪র্থ গোলের লিড নিয়ে আসেন তিনি। ম্যাচের ৭১ মিনিটে ব্রাজিলের রক্ষণভাগ ভেদ করে এগিয়ে যান তিনি। অবশ্য তার ক্ষিপ্রতার কাছে একপ্রকার পরাস্তই হতে হয়েছে ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক বেনতো ম্যাথিউসকে। আর্জেন্টিনার হয়ে সবশেষ গোলটি ব্রাজিলের জালে জড়ান সিমিওনে। আর তার গোলেই ৪-১ ব্যবধানে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা।
যদিও প্রথমার্ধে এক গোল দিয়ে ম্যাচে ফেরার কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছিল ব্রাজিল। ৩০তম মিনিটে ব্রাজিলের হয়ে গোল করেন ম্যাথিয়াস কুনহা। তবে সে আশায় পানি ঢেলে দেন ম্যাক অ্যালিস্টার।
অবশ্য মনুমেন্তালে নামার আগেই সুখবর পেয়েছিল আর্জেন্টিনা দল। ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে দলটি। যা নিজেদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসে দ্রুততম। যদিও ব্রাজিলের ম্যাচে ড্র করলেও তারা বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করতে পারতো। তবে বলিভিয়া ও উরুগুয়ের মধ্যকার ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হওয়ায় আগেভাগেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন ব র জ ল ফ টবল আর জ ন ট ন র ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রীকে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাসহ তিনজনকে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ রোববার এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে জোড়া খুনের মামলায় তামান্নাসহ তিনজন আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক প্রথম আলোকে বলেন, জোড়া খুনের মামলায় আসামি তামান্না, মোবারক হোসেন ও মো. বোরহান—এই তিনজনকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ তিনজনকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে এ আদেশ দেওয়া হয়।
জোড়া খুনের ঘটনাটি ঘটে গত ২৯ মার্চ রাতে। ওই দিন রুপালি রঙের একটি প্রাইভেট কার কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে আসতে থাকে। গাড়িটি শাহ আমানত সেতু এলাকা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর পেছন থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল সেটিকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। প্রাইভেট কারের ভেতর থেকেও মোটরসাইকেল আরোহীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে অনেকটা ঝাঁঝরা হয়ে যায় গাড়িটি। নিহত ব্যক্তিরা হলেন বখতিয়ার হোসেন (৩০) ও মো. আবদুল্লাহ (৩২)। তাঁরা সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে জোড়া খুনের আগে চার ঘণ্টা বৈঠক করেন ‘সন্ত্রাসীরা’০৮ এপ্রিল ২০২৫এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের করা মামলায় বলা হয়েছে, দুই সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও সরোয়ার হোসেনের বিরোধের জের ধরে আলোচিত জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে।
সাজ্জাদ ও তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামিসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে বাকলিয়া থানায় মামলা করেন নিহত বখতিয়ারের মা ফিরোজা বেগম। মামলার বাকি পাঁচ আসামি হলেন মো. হাছান, মোবারক হোসেন, মো. খোরশেদ, মো. রায়হান ও মো. বোরহান। তাঁরা সবাই সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
গত ১৫ মার্চ ঢাকার একটি শপিং মলে ঘোরাঘুরি করার সময় সাজ্জাদকে আটক করে তেজগাঁও থানা–পুলিশ। এর আগে তাঁকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তাঁর স্ত্রী তামান্না শারমিনের বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তামান্না শারমিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে (স্বামী) নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রী বললেন, ‘বান্ডিল বান্ডিল টাকা ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব’১৬ মার্চ ২০২৫