আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে গুজরাট টাইটান্সকে ১১ রানে হারিয়ে ‘আইপিএল-২০২৫’ আসর শুরু করলো পাঞ্জাব কিংস। নতুন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বে দারুণ সূচনা করলো দলটি। প্রথম ম্যাচেই তিনি ৪২ বলে ৯৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। আর শশাঙ্ক সিং মাত্র ১৬ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন। তাতে পাঞ্জাব কিংস ৫ উইকেট হারিয়ে তাদের দলীয় সর্বোচ্চ ২৪৩ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে। জবাবে দিতে নেমে গুজরাট টাইটান্স ৫ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রানে থামে।
২৪৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গুজরাট অবশ্য দুর্দান্ত সূচনা করেছিল। ওপেনার সাই সুদর্শন ও অধিনায়ক শুভমান গিল মিলে ৬১ রানের জুটি গড়েন। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল গিলকে ব্যক্তিগত ৩৩ রানে আউট করে পাঞ্জাবকে প্রথম সাফল্য এনে দেন। তবে সুদর্শন তার বিধ্বংসী ব্যাটিং চালিয়ে যান। কিন্তু ত্রয়োদশ ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ১৪৫ রানের মাথায় আউট হন তিনি। যাওয়ার আগে ৫টি চার ও ৬ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংস খেলে যান। তার উইকেটটি নেন অর্শদীপ সিং।
এরপর জস বাটলার ও শেরফানে রাদারফোর্ড ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু বদলি খেলোয়াড় বৈশাক বিজয়কুমার ১৫তম ওভারে এসে মাত্র ৫ রান দিয়ে পাঞ্জাবকে এগিয়ে দেন।
বাটলার হাফ সেঞ্চুরি করলেও মার্কো জানসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। এরপর রাহুল তেওটিয়া মাত্র ৬ রান করেই রান আউট হলে আরও পিছিয়ে পড়ে গুজরাট। জেতার জন্য শেষ দিকে অবশ্য দ্রুত রান তোলার দরকার ছিল তাদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাদারফোর্ড ২৮ বলে ৪৬ রান করেও দলকে জেতাতে পারেননি। অর্শদীপ তাকে আউট করে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। ৪ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন এই পেসার। এছাড়া জানসেন ও ম্যাক্সওয়েলও ১টি করে উইকেট নেন।
তার আগে পাঞ্জাব ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করে। প্রিয়াংশ আর্য ২৩ বলে ৪৭ রান করে গুজরাটের বোলারদের ওপর চড়াও হন। ৩.
কাগিসু রাবাদা প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন প্রভসিমরান সিংকে আউট করে। এরপর নতুন অধিনায়ক আইয়ার মাঠে নামেন এবং দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। আর্য তার সঙ্গে জুটি গড়লেও রশিদ খানের স্পিনে পরাস্ত হয়ে আউট হন।
সাই কিশোর পাঞ্জাবের আজমতুল্লাহ ওমরজাই, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং মার্কাস স্টয়েনিসকে আউট করলেও আইয়ার ও শশাঙ্ক সিংয়ের ব্যাটিং তাণ্ডব থামেনি। আইয়ার ৯টি ছক্কা ও ৫টি চারের মাধ্যমে ৯৭ রান করে ৩ রানের আক্ষেপে পোড়েন। শেষ ওভারে শশাঙ্ক ২৩ রান নিয়ে পাঞ্জাবের স্কোর ২৪৩ পর্যন্ত নিয়ে যান। তিনি ৬টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান।
গুজরাটের শেষ দিকের বোলিং ছিল হতাশাজনক। শেষ ৮ ওভারে তারা ১৩৫ রান দিয়ে বসে। ফিল্ডিংও তেমন ভালো ছিল না। যার ফলে পাঞ্জাব কিংস তাদের প্রথম ম্যাচে দারুণ জয় তুলে নেয়।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর উইক ট প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে সোমবার সকালে ঠিকঠাক বিকেএসপিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। সতীর্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমের বাইরে খুনসুটি শেষে শরীর গরম করে মাঠে নামার প্রস্তুতিও নিয়ে নেন। এরপর টসও করতে যান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক।
কিন্তু ড্রেসিংরুমে ফেরার পরই টের পেতে থাকেন শরীর সাড়া দিচ্ছে না। বুক চেপে আসছে। ততক্ষণে বাকিরা বুঝে যান, তামিম হার্ট অ্যাটাক করেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তামিম নিয়ে হুলস্থূল লেগে যায়। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয় প্রস্তুতি। প্রথমে মাইনর ও পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হয়ে পড়া তামিমকে গাজীপুরের কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যবস্থা করা হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।
কিন্তু তামিমের জ্ঞান ফেরাতে ওদিকে চিকিৎসকরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছিলেন না। ২২ মিনিট সময় ধরে সিপিআর ও তিনটি ডিসি শক দিতে হয়েছে। এরপর দ্রুত এনজিওগ্রাম করে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লাগিয়েছে ডাক্তাররা। অবিশ্বাস্য গতিতে হয়েছে সবকিছু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তামিমের জ্ঞান ফিরেছে এবং কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
তামিমের এই অবস্থার ভেতরেও বিকেএসপিতে চলেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ। সচরাচর এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলা স্থগিত করেন। কিন্তু বিকেএসপি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে তামিম যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন মাঠে তার সতীর্থরা খেলছিলেন। মিরাজ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েছেন ৭ উইকেটে।
স্থগিত না করে কীভাবে খেলা চললো, সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সিসিডিএমের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মোহামেডানের ইচ্ছাতেই খেলা চালিয়ে নিয়েছেন তারা। দুই দলকেই সিসিডিএম এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা ম্যাচ স্থগিত করার কথা জানান। কিন্তু ম্যাচটি খেলতে রাজি হয় দুই দলই। এজন্য খেলা বন্ধ হয়নি।
তার ভাষ্য, ‘‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব খেলা চালিয়ে যেতে চাইছিল। শাইনপুকুরও তাই। তারা কেউই চায়নি খেলা বন্ধ হোক। আমরা শুরুতে ভেবেছিলাম এরকম পরিস্থিতিতে খেলা বন্ধ করা যায় কি না। এজন্য ক্লাবগুলোকে জানানো হয়। কিন্তু তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলা চালিয়ে নেয়।’’
জানা গেছে, দুই দলই চেয়েছে ড্রেসিংরুমে কিংবা মাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে। তাতে মাঠের ভেতরে ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। খেলা শেষে মুশফিক, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুলরা ছুটে গেছেন তামিমকে দেখতে হাসপাতালে। কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের কাছাকাছি গিয়ে দেখাও করেছেন দুয়েকজন।
ঢাকা/ইয়াসিন/এনএইচ