এবার গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। এলাকাটি দ্রুত খালি না করলে হামলা করা হবে বলেও ‘চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি’ দিয়েছে দখলদার বাহিনী। 

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে আনাদোলু জানায়, ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র আভিখাই আদরায়ে সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, জাবালিয়া এলাকায় বসবাসকারী গাজার সব নাগরিকের জন্য এটি হামলার আগের চূড়ান্ত সতর্কবার্তা। তিনি ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণের ‘পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে’ চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আভিখাই আদরায়ে এর আগেও উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুনের বাসিন্দাদের জন্য একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও গাজা উপত্যকাকে খালি করে ফিলিস্তিনিদের মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা তুলে ধরেন। যা মুসলিম, আরব বিশ্বসহ বিশ্বনেতাদের তোপের মুখে পড়ে। এরই মধ্যে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। সোমবার এক এক্স পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান। 

রয়টার্স জানায়, গাজার যুদ্ধবিরতি পুনরুদ্ধারে একটি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে মিসর। মিসরের নতুন পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, হামাস প্রতি সপ্তাহে পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং প্রথম সপ্তাহের পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর করবে– দুটি নিরাপত্তা সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

এর মধ্যেই ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আলজাজিরা ও  প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিকও আছেন। এ নিয়ে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে প্রায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অন্তত ৪০০ জন নারী ও শিশু। 
  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে এসি ল্যান্ডের পোস্ট, তোপের মুখে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট দেওয়ার জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনীরা কায়ছানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে তাঁকে সরাইল থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগদান করতে বলা হয়েছে। এর আগে ওই পোস্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন ওই কর্মকর্তা। এরপর পুলিশি প্রহরায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

গত বছরের ২০ অক্টোবর সরাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন সিরাজুম মুনীরা কায়ছান। আজ সকালে ফেসবুকে ‘এসি ল্যান্ড সরাইল’ নামের সরকারি আইডি থেকে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নির্মম গণহত্যা চালায়। সেদিন রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ স্বাধীন। এরপর শুরু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত হয়। কিন্তু এর ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ২৬ মার্চেই। তাই এই দিনটি আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক, সংগ্রামের চেতনা এবং আত্মত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল।’

ওই পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পর সকাল পৌনে আটটার দিকে তিনি সরাইলের অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে বিএনপির নেতাদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। পরে পুলিশি পাহারায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। মাঠ থেকে ফিরে তিনি আগের পোস্টটি মুছে দিয়ে নতুন আরেকটি পোস্ট দেন। তিনি লেখেন, ‘ফেসবুক আইডিটি সাময়িক সময়ের জন্য হ্যাকড হয়েছিল, যা পরবর্তী সময়ে পুনরুদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিতর্কিত স্ক্রিনশট ছড়ানো হচ্ছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অনভিপ্রেত।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, সহকারী কমিশনার দায়িত্বশীল পদে থেকে এমনটি করতে পারেন না। তিনি ফেসবুকে আপত্তিকর কথা লিখেছেন। তাঁরা তাঁর বিচার ও প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। শুনেছেন তাঁকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা ওই কর্মকর্তার বিচার চান।

জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার সিরাজুম মুনীরা কায়ছান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই আইডিটা অনেক আগেই খোলা হয়েছে। এটি আজকে হ্যাকড হয়েছিল। আমার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চট্টগ্রামের পথে রওনা হয়েছি।’

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, তাঁকে (সহকারী কমিশনার) দুপুরে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে যোগদান করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত তিনি কোনো লিখিত পাননি। তবে মুঠোফোনে বিষয়গুলো জেনেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ