গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৩৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণার ১৮ ঘণ্টা পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ২৯ নম্বর সদস্য আবুল প্রধানের নাম কমিটি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

দলের জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলনকে আহ্বায়ক ও চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকীকে সদস্য সচিব করে ৩৫ সদস্যের এ কমিটি সোমবার রাতে অনুমোদন দেয় দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। কমিটিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে এক নম্বর যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নানকে যুগ্ম-আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সোমবার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

অন্যান্য সদস্যরা হলেন, পীরজাদা মাওলানা এসএম রুহুল আমিন, হুমায়ুন মাস্টার, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আজিজুর রহমান  পেরা, সাখাওয়াত  হোসেন সবুজ, ভিপি হেলাল উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, আবু তাহের মুসুল্লি, খায়রুল আহসান মিন্টু,  হোসেন আরমান মাস্টার, নুরুল ইসলাম সিকদার, মোয়াজ্জেম দেওয়ান, পারভেজ আহমেদ, খালেকুজ্জামান বাবলু, জয়নাল আবেদীন রিজভী, বিল্লাল হোসেন  বেপারী, ইব্রাহিম প্রধান, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, এম.

আনোয়ার হোসেন, আব্দুল জলিল মন্ডল,  মেহেরুল ইসলাম বকশী মুরাদ, আব্দুল মান্নান  দেওয়ান, ফ ম মমতাজুদ্দিন, আফজাল হোসেন  বেপারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক, আজগর  হোসেন খান, আবুল মনসুর মন্ডল, রাশেদুল হক, আনোয়ার হোসেন বেপারী, সাখোয়াত  হোসেন  সেলিম ও বাবু বিধান কান্ত বর্মণ।

গাজীপুর জেলা বিএনপির ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির একজন সদস্যকে প্রত্যাহার করায় এখন কমিটিতে ৩৪ সদস্য রয়েছেন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র কম ট র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে ফের বার্ড ফ্লু শনাক্ত, প্রায় ২ হাজার মুরগির মৃত্যু

যশোরের একটি মুরগির খামারে শনাক্ত হয়েছে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু। ২০১৮ সালের পর গত ১২ মার্চ বাংলাদেশে এই ফ্লু শনাক্ত হলো। হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে খামারিদের মাঝে। শনাক্তের পর পরই বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।

পোলট্রি খামারিদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সীমান্ত এলাকায় নেওয়া হয়েছে সতর্কতা। কোনো মৃত বা সন্দেহজনক হাঁস-মুরগি বা পাখি পাওয়া গেলে নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত নিকটবর্তী ল্যাবে পরীক্ষা করে ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেছেন, গত ১২ মার্চ যশোরের সরকারি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। আমরা যে নমুনা পেয়েছি তা পরীক্ষার জন্য দেশের বাইরে পাঠাবো। তবে মৃদু আকারের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি পোলট্রি খামারকে নির্দেশনা দিয়েছি। একই সঙ্গে পোলট্রি খামারিদের সংগঠনকেও আমরা সতর্ক থাকতে বলেছি। যাতে তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, ভ্যাকসিন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সীমান্ত এলাকায় আমাদের কার্যালয়গুলোকে সতর্ক করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষায়িত ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত আছে। বাংলাদেশে খামারে ২০০৭ সালে প্রথম এবং ২০১৮ সালে সর্বশেষ বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়। এবার আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এবারের পরিস্থিতি অন্যবারের মতো না। বার্ড ফ্লু নিয়ে যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝি বা প্রচারণা না ছড়ায়, সেদিকে যেন আমরা সতর্ক থাকি। খামারি বা ক্রেতার আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ক্রেতাসাধারণকে অনুরোধ করব, আতঙ্কিত হয়ে আপনারা হাঁস-মুরগি বা ডিম খাওয়া বন্ধ করবেন না।

গতকাল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আমাকে মার্চের শুরুতে বার্ড ফ্লু শনাক্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ফ্লুর বিস্তার যাতে বাড়তে না পারে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং এই ফ্লু বিস্তার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যশোরের খামারটি পরিদর্শন করেছেন এবং ফ্লুটি কীভাবে বাংলাদেশে এসেছে, তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ফ্লুর পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল বিষয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলতে পারবেন।

বার্ড ফ্লুয়ের প্রাদুর্ভাবে যশোরের খামারে তিন হাজার ৯৭৮টি মুরগির মধ্যে এক হাজার ৯০০টি মারা গেছে। ফ্লু যেন ছড়িয়ে না পরে, সেজন্য বাকি মুরগি মেরে ফেলা হয়। ২০০৭ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম বার্ড ফ্লু দেখা দেয়। সে বছর ১০ লাখেরও বেশি মুরগি এই ফ্লুয়ের কারণে মের ফেলা হয়। ২০০৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে মানুষের শরীরে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়ে।

দেশে মাংসের মোট চাহিদার অর্ধেকের বেশি জোগান দেয় পোলট্রি খাত। পোলট্রি খাতের উদ্যোক্তারা বলেন, দেশে ৯৫ হাজার ৫২৩টি খামার আছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ ও ডলার সংকটে বেড়ে গেছে প্রাণিজ খাদ্যের দাম। করোনার পর থেকে খরচ সামলাতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে ৬২ হাজার ৬৫৬টি খামার।  এবার বার্ড ফ্লু যেন দেশের খামারিদের আরেকটি মহামারিতে না ফেলে, এ জন্য ফ্লু বিস্তার রোধে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে পোল্ট্রিখাত বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ