শিশুকে ধর্ষণ, বৃদ্ধকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
Published: 26th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী অভিযুক্ত বৃদ্ধকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।
গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিশুর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত রেজাউল করিম (৬০) ওই এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রেজাউল শিশুটির বাড়ির পাশে একটি মুদি দোকান চালান। সোমবার সকালে আশপাশের এলাকা নির্জন থাকায় চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুটিকে ডেকে নেয় রেজাউল। পরে দোকান ঘরের পেছনের কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। আহত শিশুকে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ইউএনও সাজ্জাত হোসেন ও ওসি এনায়েত হোসেন শিশুটিকে হাসপাতালে দেখতে যান এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসক নূর ই আজমির ঝিলিক ধর্ষণের আলামত রয়েছে জানিয়ে শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা রেজাউলকে আটক করে গণপিটুনি দেন। এ সময় এলাকাবাসী তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। থানার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে শান্ত করে রেজাউলকে থানায় নিয়ে যায়।
আড়াইহাজার থানার ওসি এনায়েত হোসেন জানান, জনগণের রোষানল থেকে তারা অভিযুক্ত বৃদ্ধকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ফের বার্ড ফ্লু শনাক্ত, প্রায় ২ হাজার মুরগির মৃত্যু
যশোরের একটি মুরগির খামারে শনাক্ত হয়েছে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু। ২০১৮ সালের পর গত ১২ মার্চ বাংলাদেশে এই ফ্লু শনাক্ত হলো। হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে খামারিদের মাঝে। শনাক্তের পর পরই বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।
পোলট্রি খামারিদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশনা দিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সীমান্ত এলাকায় নেওয়া হয়েছে সতর্কতা। কোনো মৃত বা সন্দেহজনক হাঁস-মুরগি বা পাখি পাওয়া গেলে নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত নিকটবর্তী ল্যাবে পরীক্ষা করে ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেছেন, গত ১২ মার্চ যশোরের সরকারি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। আমরা যে নমুনা পেয়েছি তা পরীক্ষার জন্য দেশের বাইরে পাঠাবো। তবে মৃদু আকারের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি পোলট্রি খামারকে নির্দেশনা দিয়েছি। একই সঙ্গে পোলট্রি খামারিদের সংগঠনকেও আমরা সতর্ক থাকতে বলেছি। যাতে তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, ভ্যাকসিন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সীমান্ত এলাকায় আমাদের কার্যালয়গুলোকে সতর্ক করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষায়িত ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত আছে। বাংলাদেশে খামারে ২০০৭ সালে প্রথম এবং ২০১৮ সালে সর্বশেষ বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়। এবার আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ এবারের পরিস্থিতি অন্যবারের মতো না। বার্ড ফ্লু নিয়ে যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝি বা প্রচারণা না ছড়ায়, সেদিকে যেন আমরা সতর্ক থাকি। খামারি বা ক্রেতার আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ক্রেতাসাধারণকে অনুরোধ করব, আতঙ্কিত হয়ে আপনারা হাঁস-মুরগি বা ডিম খাওয়া বন্ধ করবেন না।
গতকাল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আমাকে মার্চের শুরুতে বার্ড ফ্লু শনাক্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ফ্লুর বিস্তার যাতে বাড়তে না পারে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং এই ফ্লু বিস্তার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যশোরের খামারটি পরিদর্শন করেছেন এবং ফ্লুটি কীভাবে বাংলাদেশে এসেছে, তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ফ্লুর পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল বিষয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলতে পারবেন।
বার্ড ফ্লুয়ের প্রাদুর্ভাবে যশোরের খামারে তিন হাজার ৯৭৮টি মুরগির মধ্যে এক হাজার ৯০০টি মারা গেছে। ফ্লু যেন ছড়িয়ে না পরে, সেজন্য বাকি মুরগি মেরে ফেলা হয়। ২০০৭ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম বার্ড ফ্লু দেখা দেয়। সে বছর ১০ লাখেরও বেশি মুরগি এই ফ্লুয়ের কারণে মের ফেলা হয়। ২০০৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে মানুষের শরীরে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়ে।
দেশে মাংসের মোট চাহিদার অর্ধেকের বেশি জোগান দেয় পোলট্রি খাত। পোলট্রি খাতের উদ্যোক্তারা বলেন, দেশে ৯৫ হাজার ৫২৩টি খামার আছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ ও ডলার সংকটে বেড়ে গেছে প্রাণিজ খাদ্যের দাম। করোনার পর থেকে খরচ সামলাতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে ৬২ হাজার ৬৫৬টি খামার। এবার বার্ড ফ্লু যেন দেশের খামারিদের আরেকটি মহামারিতে না ফেলে, এ জন্য ফ্লু বিস্তার রোধে সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে পোল্ট্রিখাত বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।