ভাণ্ডারিয়ায় জমি ও বালুর ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে আবু সালেহ নামে এক ব্যক্তিকে প্রতিপক্ষ কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আবু সালেহর ভাই আবুল বাশার রুবেল। মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের পাতলাখালী গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। আহত রুবেলকে (২৭) বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় রেক্সোনা বেগম নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আবু সালেহ (৩৭) পাতলাখালী গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক হাওলাদারের ছেলে।
আবু সালেহর বোন আফসানা মিমির ভাষ্য, রাত আড়াইটার দিকে তাঁর চাচাতো ভাই শহিদুল ইসলাম সুমন ১০-১৫ জন সহযোগীকে নিয়ে তাঁর ভাই রুবেলের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাঁর চিৎকারে বড় ভাই আবু সালেহ ও তাঁর স্ত্রী রুবেলের ঘরের কাছে গেলে আবু সালেহকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা।
নিহত আবু সালেহর স্ত্রী লাবণী আক্তার জানান, ঘটনার রাতে তারা ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রাতে তাঁর দেবর রুবেলের চিৎকার শুনে তিনি ও তাঁর স্বামী ঘর থেকে বের হয়ে দেখেন রুবেলকে কুপিয়ে উঠানে ফেলে রেখেছে স্থানীয় সুমন ও তাঁর লোকজন। পরে তারা তাঁর স্বামীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। এ সময় হামলাকারীরা তাঁকে মারধর করে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে আলমারি ভেঙে নগদ ১ লাখ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। পরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে ভাণ্ডারিয়া থানা পুলিশ তাঁর স্বামী ও দেবরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে সেখান থেকে আহত দু’জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে নেওয়ার পথে তাঁর স্বামীর মৃত্যু ঘটে। রুবেলের এক পা কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করেছে হামলাকারীরা।
ভাণ্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ আনওয়ার জানান, জায়গাজমি ও বালুর ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই ভাইকে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুমনের স্ত্রী রেক্সোনা বেগমকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জয়পুরহাটে ছাত্রদলের সাবেক নেতাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা, পিস্তলসহ আটক ১
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম হোসেনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাত সোয়া ১০টার দিকে পাঁচবিবি সুপার মার্কেটের একটি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় স্থানীয় লোকজন ধাওয়া দিয়ে পিস্তলসহ একজনকে ধরে পিটুনি দেন। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে পাঁচবিবি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আটক ব্যক্তির নাম রুবেল হোসেন (৩৪)। তিনি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে শামীম হোসেন ও স্থানীয় দুই সাংবাদিক পাঁচবিবি সুপারমার্কেটের নিউ গার্মেন্টসের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে ছয়জন অপরিচিত ব্যক্তি এসে শামীম হোসেনের ওপর হামলা চালান। শামীম দৌড়ে সরে পড়েন। তখন হামলাকারীরা তিন-চারটি গুলি ছোড়েন। পরে তাঁরা মোটরসাইকেলে করে রেলগেট এলাকার দিকে পালিয়ে যান।
শামীম হোসেনের চিৎকার ও গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারীদের ধাওয়া করেন। রেলগেট এলাকায় রাঁখি হোটেলের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়ে। তখন ওই মোটরসাইকেলে তিন আরোহী সড়কে পড়ে যান। তাঁরা মোটরসাইকেল ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় লোকজন খোঁজাখুঁজি করে একজনকে পিস্তলসহ আটক করে পিটুনি দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
শামীম হোসেন বলেন, ‘পাঁচবিবি উপজেলা পরিষদের অপসারিত চেয়ারম্যান সাবিকুন নাহারের স্বামী শাহ কামালের বাড়ি ফরিদপুরে। সাবেকুন নাহার গত ২৭ রমজান পাঁচবিবি দানেজপুর ডিগ্রি কলেজ মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। বিক্ষুব্ধ লোকজন আগের রাতে ইফতার মাহফিলের প্যান্ডেল ভাঙচুর করায় মাহফিল পণ্ড হয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেকুন নাহারের স্বামী ফরিদপুর থেকে ছয়জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে আমাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছেন।’
এ বিষয়ে জানতে শাহ কামালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া এক বার্তায় সাবেকুন নাহার বলেন, ‘আমরা সপরিবার দেশের বাইরে আছি। শামীমের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনায় তিনি জনসমক্ষে জিরো হয়ে গিয়েছিলেন। এখন গুলির নাটক সাজিয়ে আবার হিরো হতে চাইছেন।’
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের সাবেক নেতা শামীমের ওপর হামলা হয়েছে। পিস্তলসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি ফরিদপুরের বাসিন্দা। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।