ব্যক্তির স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার বোধও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের দাবি দানা বাঁধতে বাঁধতে প্রতিশোধপরায়ণ রাজনীতিতে পর্যবসিত হয়েছিল। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান অস্বীকারের প্রবণতা একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং গণহত্যা দিবস স্মরণে বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উঠে এসেছে এ কথাগুলো। গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে ‘গণহত্যা, অস্বীকারের প্রবণতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ।

সহুল আহমদ তাঁর প্রবন্ধে বলেন, গণহত্যাকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদাহরণ পৃথিবীতে কমই আছে। গণহত্যা বা এ ধরনের অপরাধের ঘটনার সত্যতার অস্বীকার ঠেকাতে সবার আগে দরকার বিচার।

এই প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম ও লেখক সারোয়ার তুষার। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমানুষের অধিকার ও ন্যায্যতার হিস্যা বুঝে নেওয়ার লড়াই। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পক্ষপাতের পঙ্ক থেকে মুক্ত করতে হবে। ১৯৭১ থেকে ২০২৪—গণহত্যার পক্ষগুলো সব সময় জাতিগত অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করে দিয়েছে, মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে।

স্বাগত ভাষণে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ১৯৭১–এর পূর্বকালে এ অঞ্চলের মানুষ সুদীর্ঘকাল রাজনৈতিক আলোচনা, মীমাংসা ইত্যাদি চালিয়েছে। তবে একাত্তরের ২৫ মার্চ সবকিছু ছাপিয়ে সর্বাত্মক স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নই বড় হয়ে উঠেছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্নে সুদীর্ঘকাল লড়াই–সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, স্বপ্নভঙ্গের শিকারও হয়েছে। যে বিপুল জনগোষ্ঠী একাত্তরে গণহত্যার শিকার হয়েছে, তাদের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বদেশে আমরা স্বাধীনতাকে অর্থবহ এবং মানুষের জন্য কল্যাণকর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি কি না, সেটাই আজকের দিনের বড় প্রশ্ন।’

অনুষ্ঠান শেষে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণহত য র স ব ধ নত এক ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফেনীতে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে ফেনীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট ফেনী’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচি থেকে গণহত্যার বিচার দাবি এবং ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ফেনীর মিজান ময়দানে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে জেলার সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ অংশ নেন। পরে র‌্যালি বের হয়। এসময় তারা ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক’, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘বয়কট ইসরায়েলি পণ্য’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

আয়োজকরা জানান, এটি ফেনীর রাজপথে ফিলিস্তিনের পক্ষে সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ।

আরো পড়ুন:

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ 

ওয়াকফ বিল: কলকাতায় বিক্ষোভ চলছেই, মোদির কুশপুতুল দাহ

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মুফতি আব্দুল হান্নান বলেন, “এত গণহত্যার পরও জাতিসংঘ চুপ রয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে নেতানিয়াহু ও তার বাহিনীর বিচার চাই।”

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, “আওয়ামী লীগ আমলে দাঁড়ি-টুপিওয়ালাদের দেখতে অপমান করা হয়েছে। গাজা রক্ষার আগে নিজেদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হবে।”

ফেনী জহিরিয়া মসজিদের খতিব মুফতি ইলিয়াস বিন নাজেম বলেন, “আমরা মেরুদণ্ডহীন জাতিসংঘ চাই না।” 

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবার যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার আশঙ্কার কথা জানাল ফেডারেল রিজার্ভ সান ফ্রান্সিসকো
  • ফেনীতে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল
  • জুলাই আন্দোলনে গুলির নির্দেশ: সহকারী কমিশনার ও অতিরিক্ত এসপি গ্রেপ্তার
  • ট্রাইব্যুনালের মামলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  • আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের রাজনীতি
  • ‘মার্চ ফর গাজা’ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঐক্য: সারজিস
  • গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীতে জনতার ঢল
  • গণহত্যার প্রতিবাদে সরব বাংলাদেশ
  • নতুন আশার আলো
  • গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন দাবি