ঈদের আগে বকেয়া বেতন পরিশোধ ও বোনাসের দাবিতে সচিবালয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে পোশাকশ্রমিকদের কর্মসূচি। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেসক্লাব এলাকায় লাঠিপেটা করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন পোশাকশ্রমিক, ছাত্রসংগঠনের নেতা ও পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা পরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান নেন। রাতে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে পোশাকশ্রমিকেরা শ্রম ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে রওনা দেন। প্রেসক্লাব এলাকায় সড়কে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে পড়ে মিছিলটি। বাধা উপেক্ষা করে সচিবালয়ের দিকে এগোতে চাইলে শ্রমিকদের লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে শ্রমিকদের ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। পুলিশের ধাওয়ায় একপর্যায়ে শ্রমিকেরা ওই এলাকা ছেড়ে যান।

ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, পুলিশের কয়েক সদস্য মিলে এক ব্যক্তিকে পেটাচ্ছেন। তাঁকে বাঁচাতে গেলে এক নারীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। জানা গেছে, পিটুনির শিকার ব্যক্তির নাম দিলীপ রায়। তিনি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম বলেন, সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি ছিল পোশাকশ্রমিকদের পূর্বনির্ধারিত। গাজীপুরের টিঅ্যান্ডজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড এবং অ‍্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারীরা তিন মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে শ্রম ভবনের সামনে গত রোববার থেকে অবস্থান করছিলেন। সাড়া না পেয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ে (সচিবালয়) যাওয়ার পথে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাঁদের বাধা দেয়। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, পোশাকশ্রমিকেরা সচিবালয়ের যাওয়ার চেষ্টা করেন। বাধা দেওয়া হলে পুলিশের ওপর চড়াও হন তাঁরা। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে এ ঘটনাকে ‘পুলিশি হামলা’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। এ ছাড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ। বাম গণতান্ত্রিক জোট এক বিবৃতিতে ঈদের আগে শ্রমিকের বকেয়া পাওনা ও ঈদ বোনাস পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছে।

আরও পড়ুনপুলিশ আগের মতোই শ্রমিকদের দমনকারী হিসেবে রয়ে গেছে: গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি৫৯ মিনিট আগে

এ ছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা জিনস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড চালু, ছুটি বৃদ্ধিসহ আরও কয়েকটি দাবিতে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকেরা। কারখানার ব্যবস্থাপক মো.

স্বপন জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন।

তিন মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাসের দাবিতে মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের কামরাঙ্গীচালা এলাকায় হ্যাগ নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন।

কালিয়াকৈর থানার মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবদুস সেলিম বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স মন

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়িতে রাগ করে টয়লেট ক্লিনার খেয়ে ফেলেছিলাম

প্রশ্ন: বাড়িতে রাগ করে টয়লেট ক্লিনার খেয়ে ফেলেছিলাম গত বছর। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর ওয়াশ করে, বমি করিয়ে সেসব বের করা হয়। অনেক কষ্ট হয়েছিল। এত দিন পর এখনো আমার পেট ব্যথা করে। পেটের মধ্যে খচখচ করে। আমি পুরুষ। আমার কি কোনো টেস্ট করে দেখা উচিত?

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

পরামর্শ: বয়ঃসন্ধিকালে আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেকে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করে বসে। তবে যে বয়সেই হোক, দীর্ঘ মেয়াদে এটি স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। টয়লেট ক্লিনার খাদ্যনালি ও পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ আবরণ পুড়িয়ে ফেলে বা ক্ষত তৈরি করে। এ ধরনের ক্ষয়কারী পদার্থ গ্রহণের পর কখনোই বমি করানো কিংবা স্টমাক ওয়াশ করানো নিরাপদ নয়। কারণ, এতে খাদ্যনালি বা পাকস্থলীর ভেতরের দেয়াল আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তা ছাড়া ওষুধের মাত্রা বা চিকিৎসা যথাযথ না হলে ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুতে আবার প্রদাহ, আলসার কিংবা সংক্রমণ হতে পারে, খাদ্যনালি সরু হয়ে যেতে পারে। লক্ষণ হিসেবে রোগীর পেটব্যথা, পেট খচখচসহ নানা ধরনের অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের নির্দেশনায় এন্ডোস্কপির মাধ্যমে খাদ্যনালির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সঠিক কারণ নির্ণয় করুন এবং সে অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

আরও পড়ুনচাইলেই আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা যায়০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

সম্পর্কিত নিবন্ধ