অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচি থেকে বের হয়ে গেলে অন্য উন্নয়ন সহযোগীরাও নানা প্রশ্ন তুলতে পারে। তাই আইএমএফের ঋণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে চায় সরকার। আগামী জুনে আইএমএফ দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আইএমএফের ঋণ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ঋণ না নেওয়াটা খুব ভালো। তবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (ডিজিপি) ও ঋণের অনুপাত অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। তা ছাড়া সরকারি ব্যয়ের চাহিদা মেটানোর মতো রাজস্ব না থাকার কারণেই ঋণ নিতে হয়। বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফ ঋণ দিচ্ছে। প্রকল্পে অনেক ঋণ এলেও তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো যায় না। তারপরও আমরা একবারে মুখিয়ে আছি এমনটিও নয়। এ জন্যই চতুর্থ কিস্তি পেছানো হয়েছে। তারা নানা শর্ত দিচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষে এগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে। 
তিনি আরও বলেন, আইএমএফ থেকে যদি ঋণ না নেওয়া হয়, তাহলে অন্য দাতা সংস্থাও আস্থা পায় না। তখন বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকাসহ অন্যান্য সংস্থাও অর্থায়নের ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলতে পারে যে, কেন আইএমএফ সরে গেল? তখন একটি বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া এ ঋণ না নিলে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার, সেটিও এ মুহূর্তে বাড়ানো সম্ভব নয়। আইএমএফ ঋণের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কিছু অগ্রাধিকার রয়েছে। এগুলোর দু’একটি পূরণ সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আগীম বাজেট প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য কৃষি ও বিদ্যুতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হবে। পাশাপাশি বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এমন প্রকল্প নেওয়া হবে, যাতে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। মেগা প্রজেক্ট নেওয়া হবে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও বেসরকারি খাতে সম্প্রসারণকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। বাজেটে কিছু মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিষয় থাকবে। 

আইএমএফের অন্যতম শর্ত হচ্ছে মুদ্রা বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া। এটি কি জুনের আগেই বাস্তবায়ন হবে– এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ মূল্যস্ফীতি আরও কতদিন থাকে, তা দেখতে হবে। হঠাৎ করে বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ায় পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে গেলে বিপদ বাড়বে। 
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো.

আবদুর রহমান খান বলেন, ভ্যাট কমানো দরকার। ভ্যাট একক হারে নিয়ে আসতে পারলে তখন চিন্তাভাবনা করা যাবে। ভ্যাটের একক হার বাস্তবায়ন হলে তখন সুনির্দিষ্ট কিছু খাতে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। তিনি বলেন, এবার বাজেট ব্যবসাবান্ধব করার চেষ্টা করা হচ্ছে। 
অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার ওপর আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার, করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ করাসহ ২৭টি লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। অনুষ্ঠানে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ সংগঠনের সদস্যরা বক্তব্য দেন। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইএমএফ আইএমএফ ঋণ আইএমএফ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে ইআরএফের ৩৭ প্রস্তাব

ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার ওপর আবগরী শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে দেশের অর্থনৈতিক বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)।

আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপলক্ষে অর্থ উপদেষ্টাকে দেওয়া প্রস্তাবনায় এই সুপারিশ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই বাজেট প্রস্তাব লিখিত আকারে অর্থ উপদেষ্টার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ সময় অর্থ বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, ইআরএফ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ইআরএফের বাজেট প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, কর পরিশোধিত আয় থেকে একজন ব্যক্তি ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে মুনাফার ওপর ১০-১৫ শতাংশ কর কাটা হয়। আবার ব্যাংকের জমা স্থিতির ভিত্তিতে আবগরী শুল্ক কাটা হয়। এমনিতেই মানুষের সঞ্চয় সক্ষমতা কমেছে। আবার বিভিন্ন ভীতির কারণে অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখতে চাইছেন না। এরকম অবস্থায় ৫/১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার ওপর আবগরী শুল্ক প্রত্যাহার এবং মুনাফার ওপর কর কমানো যেতে পারে।

এই প্রস্তাব দেওয়ার পাশাপাশি ইআরএফ থেকে আরো ২৭টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে-আগামী অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ না দিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত বলে ইআরএফ মনে করে। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের আগেই ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানো, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা জরুরি। কারণ এলডিসি গ্রাজুয়েশনের একটি ধাক্কা অর্থনীতিতে পড়বে।

এ সময় অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা না থাকলে অর্থনীতিতে আরো নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আগামী অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি কমানোর দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে ইআরএফ মনে করে। শুধু সংকোচনমুলক মুদ্রানীতি ও সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছতাসাধনের মাধ্যমে এই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। এজন্য বাজার ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ চেইনে বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙ্গা ও সব ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধেও সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনায় নিয়ে করমুক্ত আয়সীমা অন্তত ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে দরিদ্রদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার ওপেন মার্কেট সেল বাড়িয়েছে, যা প্রশংসার যোগ্য। এ ধারা আগামী অর্থবছরেও অব্যাহত রাখা জরুরি। একইসঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার উপকারভোগী ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, বিপুল পরিমাণ অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ এবং ভর্তুকির চাপে সরকারের পরিচালন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, গত কয়েক বছর ধরে উন্নয়ন ব্যয় বাড়ছে না। তাই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ করে ব্যয় করার ক্ষেত্রে সরকারের আরো সতর্ক হওয়া উচিত বলে ইআরএফ মনে করে।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবার মান সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত। সরকারের নীতি-নির্ধারকদের পাশাপাশি সাধারণ মধ্যবিত্তরাও এখন বাংলাদেশি স্বাস্থ্য সেবার ওপর আস্থা হারিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছুটছেন। এ অবস্থায় দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের প্রত্যেকটিতে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের স্ট্যান্ডার্ডে একটি করে হাসপাতাল স্থাপন করতে আগামী বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে। ক্যানসারসহ দুরারোগ্য ব্যাধির ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ককর প্রত্যাহার করা।

ধারাবাহিকভাবে ওষুধের দাম ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফি বাড়ছে, যা বহনের ক্ষমতা দেশের বেশিরভাগ মানুষের নেই। বাংলাদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার ৭২%। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর দেশের মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। ওষুধের দাম ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যয় কেন এতো বাড়ছে, তা সরকারের খতিয়ে দেখা দরকার। আউট অব পকেট এক্সপেনডিচার কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জনবলকে এখনও ১/২ টাকা কেজি দরে তেল, চিনি, মসুর ডালসহ বিভিন্ন রেশন পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, অতি দরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে বিতরণ করা খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ অবস্থায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পণ্যমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে রেশন পণ্যের দাম বাড়ানো যেতে পারে।

পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, কারা পুলিশ, জেলার, বিচারকসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করলেও বেতন-ভাতার বাইরেও তারা ঝুঁকি ভাতা পাচ্ছেন, যা সরকারের অন্যান্য সংস্থায় কর্মরতদের সঙ্গে আর্থিক বৈষম্য সৃষ্টি করছে। এ ধরনের ঝুঁকি ভাতা প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে গতি নেই। ফলে বর্ধিত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। বিভিন্ন শিল্প কারখানা বন্ধের কারণে উল্টো লাখো শ্রমিক বেকার হয়েছে। কর্মসংস্থান ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে বাজেটে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু কোন খাতে কোন ধরনের সংস্কার হবে, তার প্রভাব অর্থনীতি ও জনজীবনে কতটা পড়বে-সে সম্পর্কে কেউ ধারণা করতে পারছেন না। তাই সরকার তার মেয়াদে কোন কোন সংস্কার করতে আগ্রহী এবং তার সম্ভাব্য প্রভাব কি হবে, তা বাজেট বক্তব্যে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।

মানসম্পন্ন ও যুগোপযোগী কারিগরি শিক্ষাকে সহজলভ্য এবং যথাসম্ভব সাশ্রয়ী করতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ, প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বিদেশি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। অন্যদিকে, দক্ষতার অভাবে বাংলাদেশিরা চাকরি পাচ্ছে না। প্রয়োজনে পিপিপির মাধ্যমে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে মিডলেবেল ম্যানেজমেন্টের উপযোগী জনবলকে দক্ষ করে তুলতে হবে।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা বাড়াতে হবে। আসন সংকটের কারণে এইচএসসি পাস করে অনেকেই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ভর্তি হতে পারে না। আবার তাদের অনেকের পক্ষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে পড়ার মতো আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তারা ঝরে পড়ছে।

এলডিসি গ্রাজুয়েশন সামনে রেখে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। যেহেতু বেশিদিন রপ্তানিতে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে না, তাই সম্ভাবনাময় পণ্যগুলোকে প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি নানাভাবে প্রমোট করে রপ্তানি উৎসাহিত করার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

এলডিসি গ্রাজুয়েশন সামনে রেখে বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দসহ কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে প্রেডিক্টেবল রাজস্ব নীতি ঘোষণা করার পাশাপাশি ব্যবসার পরিবেশ সহজ করার ওপর জোর দিতে হবে।

উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাতকে সরকারের বিভিন্ন কাগুজে নীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হলেও বাজেটে এখাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তাই এসএমই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, শিক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণে কর হার ৫.০ শতাংশে সীমিত রাখা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে পৃথক রাজস্ব নীতিপ্রনয়ন। বন্ড সুবিধা তারা যাতে সহজে পান। বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডকে করমুক্ত রাখা। ভ্যাটের হার ৭ করা। বাজার মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পদ কর আদায়।

পত্রিকা, টেলিভিশন, অনলাইনসহ  মিডিয়ার কর হার কমিয়ে আনা। কাস্টমস এর টাইম রিলিজ স্টাডির মত আয়কর ও ভ্যাটেও একই রকম স্টাডি করা।

কর ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জবাবদিহি থাকতে হবে। প্রতি করছাড়ের আদেশ এর সাথে কত রাজস্ব ক্ষতি হলো তার একটা প্রাক্কলন দেওয়া।

এনবিআরের যেকোনো পলিসি ডিসিশনের ইমপ্যাক্ট অ্যানলাইসিস হওয়া উচিত, যার ভিত্তিতে পরবর্তীতে ডিসিশন নেওয়া সম্ভব হবে। ট্যাক্স, ভ্যাট ও শুল্কছাড়ের সুফল কাদের পকেটে যায়, তার নির্মোহ বিশ্লেষণ হওয়া দরকার। একটি ইফেক্টিভ ফিসক্যাল পলিসির জন্য এই গবেষণা ও বিশ্লেষণ খুবই প্রয়োজন, যে প্রস্তাব অতীতেও ইআরএফ এর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। সরকারের অন্যান্য দপ্তরের সমন্বয়ে কিংবা ই আর এফের সহায়তায় এই বিষয়ে গবেষণা করা উচিত।

এনবিআরে রিটার্ন জমা এবং ঋণ নেওয়ার সময় ব্যাংকের কাছে দেওয়া সম্পদ বিবরণীর তথ্যে বিস্তর ফাঁরাক থাকে। এখন ড্রাইভার, দারোয়ান, অফিস সহায়কসহ বিভিন্ন জনের নামে অনেকে ব্যবসা দেখিয়ে বড় অংকের ঋণ বের করে নিচ্ছে। বেনামি এই ঋণ আর আদায় হয় না।এক্ষেত্রে বড় ঋণ অনুমোদনের আগে এনবিআরের নির্দিষ্ট ডাটাবেজ থেকে ব্যবসায়ীক তথ্য নেওয়া বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। এতে ঋণ জালিয়াতি কমবে। আবার রাজস্ব আদায় বাড়বে।

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে
  • ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে ইআরএফের ৩৭ প্রস্তাব
  • ‘বিনিয়োগ করুন, আপনারা তো আর সালমান এফ রহমান হতে পারবেন না’
  • বড় নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্প নেওয়া হবে: অর্থ উপদেষ্টা
  • অনলাইনে ১৫ লাখ রিটার্নের ১০ লাখে কোনো কর নেই
  • করমুক্ত আয়সীমা ৪ লাখ টাকা করার সুপারিশ ইআরএফের