রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা চায় অ্যাকসেসরিজ খাত
Published: 25th, March 2025 GMT
তৈরি পোশাকের অ্যাকসেসরিজ রপ্তানিতে ন্যায্য হারে নগদ প্রণোদনার দাবি জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যাসোসিয়েশন (সিজিএএ)। একই সঙ্গে অটোমেশনের মাধ্যমে ব্যবসার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও একই চিঠি পাঠিয়েছে।
অ্যাকসেসরিজ খাতের ব্যবসায়ীদের পক্ষে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ব্রিটানিয়া লেবেল বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামিল আহমেদ। এতে বলা হয়, অ্যাকসেসরিজ ছাড়া পোশাক তৈরি বা রপ্তানি সম্ভব নয়। ক্রেতারা অ্যাকসেসরিজের জন্য মাস্টার এলসির মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করেন। ফলে পোশাক মালিকদের ওই অংশটুকু অ্যাকসেসরিজ ব্যবসায়ীদের ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। ফলে যুক্তিসংগতভাবে অ্যাকসেসরিজ অংশের ওপর নগদ প্রণোদনা প্রাপ্য।
উদ্যোক্তাদের দাবি, আশির দশকে পোশাকের কাঁচামাল তথা অ্যাকসেসরিজ পণ্য ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, জাপানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হতো। এতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা ও সময় ব্যয় হতো। ধীরে ধীরে নিজস্ব অর্থায়ন, কঠোর পরিশ্রম এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে এসব খাতের ব্যবসা শুরু করেছেন দেশি উদ্যোক্তারা। দেশে একের পর এক অ্যাকসেসরিজ কারখানা গড়ে ওঠায় পোশাক রপ্তানিতে লিড টাইম কমে আসছে। পোশাক প্রস্তুতকারকরা বিভিন্নভাবে প্রণোদনা পাচ্ছেন। কিন্তু অ্যাকসেসরিজ খাত বঞ্চিত হচ্ছে। এ খাত কতটুকু প্রণোদনা পেতে পারে তা যাচাই-বাছাই করতে কমিটি গঠন করা প্রয়োজন।
সংগঠনটি আরও বলেছে, বিভিন্ন বিনিয়োগের ওপর কর প্রণোদনা যেমন– যে কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) প্রবর্তন, উদ্ভাবনের জন্য গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং কর্মীদের কল্যাণে সহায়তা করার জন্য সিএসআর ও অনলাইন সিসিটিভি সিস্টেম চালু করা দরকার। এ খাতে দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। তাই বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ স্কুল গঠনের মাধ্যমে আধুনিক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির জন্য দক্ষ অপারেটর গড়ে তোলার পথ সুগম করা দরকার।
অ্যাকসেসরিজ খাতের উদ্যোক্তাদের মতে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাতের প্রচ্ছন্ন রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার। এরপরও সরকারের দৃষ্টির আড়ালে থেকে যাচ্ছে। জাতীয় শিল্পনীতিতে ২৪টি অগ্রাধিকারমূলক শিল্পকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ সেখানে পোশাক অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্প অন্তর্ভুক্ত নেই। এটি বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ খাত লাইসেন্স, বন্ডসহ ব্যবসা সংক্রান্ত যে কোনো সেবা পেতে গেলে কাস্টমস, ভ্যাট বিভাগসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার দুর্নীতির কবলে পড়ে। তারা একদিকে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা পাচ্ছেন না, অন্যদিকে প্রণোদনাও পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় অনেকেই নতুন বিনিয়োগের ঝুঁকি নিচ্ছেন না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনব আর স গঠনট র জন য ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
পথ দেখাবে সৃজনশীল ক্লাব
বুটেক্স বাঁধন
স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’ ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের অধিক ব্যাগ রক্ত দিয়েছে। ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ স্লোগানকে সামনে রেখে সংগঠনটি দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। বর্তমানে দেশের মোট ৫৪টি জেলায় ৮১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঁধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্পূর্ণরূপে অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ এবং স্বেচ্ছাসেবী এই সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশের ছাত্র এবং তরুণ প্রজন্মকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উদ্বুদ্ধ করে চলেছে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) ২০০৬ সালের ২৪ মে বাঁধনের কার্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৮ বছরে ধরে নিরলসভাবে মানবতার সেবার জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠনটি। বর্তমানে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ইমন কুমার সাহা এবং সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন আফিফ ইসলাম সাজিদ। বুটেক্সের সিনিয়র হোক কিংবা জুনিয়র যখনই জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন হয় তখনই সবারই নির্ভরতার জায়গা বুটেক্স বাঁধন।
দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে মানুষের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়া এই সংগঠনটি শুধু রক্ত ব্যবস্থা করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং শীতকালে ও ঈদে অসহায় মানুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ, ক্যাম্পাসের সব শিক্ষার্থী-বাঁধনকর্মী-উপদেষ্টাদের নিয়ে ইফতার আয়োজন, বার্ষিক ভ্রমণ, নবীন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ব্লাড গ্রুপিং, রক্তদাতাদের সংবর্ধনা ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে এই সংগঠনটি। বছরজুড়ে বাঁধনের নানা আয়োজন থাকলেও তাদের প্রধান আয়োজন হলো বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থীদের দাতা সংবর্ধনা ও নবাগত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান। ২৯তম ব্যাচের মো. শামীম রেজা (আহ্বায়ক) এবং কে. এম. আবদুন নূর (সদস্য সচিব) এর হাত ধরে স্বেচ্ছায় রক্তদানের এই মহৎ কার্যক্রমটি বুটেক্সে চালু হয়। বর্তমানে বাঁধনের বুটেক্স ইউনিটের ১৯তম কমিটিতে মোট ১৭ জন সাংগঠনিক সদস্য রয়েছেন।
সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাব
‘স্টেপস টুওয়ার্ড ইয়োর ড্রিম’ স্লোগানে ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একঝাঁক স্বপ্নবাজ তরুণের হাতে গড়ে ওঠে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ারবিষয়ক সংগঠন ‘সাস্ট ক্যারিয়ার ক্লাব’। পড়ালেখা শেষ করে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাবেন নাকি বিসিএস ক্যাডার, ব্যাংকার, করপোরেট চাকরি, উদ্যোক্তা হবেন– এসব নিয়ে থাকেন দ্বিধাগ্রস্ত। আর এমন সিদ্ধান্তহীনতায় নষ্ট হয়ে যায় অনেকটা সময়। এসব শিক্ষার্থীকে সহায়তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। শুরু থেকে ৩ হাজার ৫০০ জনের বেশি সদস্য ক্লাবটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবটি প্রতিবছর ক্যাম্পাসে ‘জব ফেস্ট’ বা ‘চাকরি মেলার’ আয়োজন করে। সংগঠনটি নবীন শিক্ষার্থীদের তিনটি ধাপে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং একটি বিষয়ের ওপর প্রেজেন্টেশন নিয়ে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ করে থাকে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘মাস্টারমাইন্ড’ নামে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে তারা। প্রতি সপ্তাহে কুইজ প্রতিযোগিতা, গবেষণা-সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারণার জন্য ‘রিসার্চ টক’, শিক্ষা, সমাজ, সংস্কৃতি, রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও বিভিন্ন সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে ‘নলেজ টক’ নামে সেমিনার আয়োজন করে।v