পোশাকের দাম বেশি, আক্ষেপ ক্রেতা-বিক্রেতার
Published: 25th, March 2025 GMT
‘গত বছরের তুলনায় এবার কাপড় উৎপাদন যথেষ্ট হয়নি। অনেক গার্মেন্ট বন্ধ ছিল। এখনও কিছু গার্মেন্টে উৎপাদন বন্ধ। বাইরে থেকে কাপড়ের আমদানিও তেমন হয়নি। এ কারণে সব ধরনের পোশাকের দাম বেড়েছে। বিক্রিও কমে গেছে।’
কথাগুলো বলেন গাইবান্ধা শহরের সালিমার সুপারমার্কেটের জিম ফ্যাশনের কর্ণধার শাহ আলম মিয়া। বিক্রি কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের টাকাওয়ালা নেতারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কেনাকাটা করতেন। তারা গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই আগে যিনি সন্তানের জন্য দুইটা জামা কিনতেন, এখন একটা কেনেন।’
ঈদ সামনে রেখে জমে উঠতে শুরু করেছে গাইবান্ধার মার্কেটগুলো। যদিও ১০ রোজা পর্যন্ত তেমন বিক্রি হয়নি। এবার নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের ফুটপাতের দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। শহরের মার্কেটগুলোর মধ্যে পৌর মার্কেট, স্টেশন রোডের চুড়িপট্টি, সালিমার সুপারমার্কেট, ইসলাম প্লাজাসহ পুরো সড়কটিতেই প্যান্ট, শার্ট, কোর্ট, জুতা-স্যান্ডেলের সারি সারি দোকান।
বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেনাকাটা শুরু হয়েছে ১৫ রোজার পর থেকে। এবার ভারতীয় কাপড়কে পেছনে ফেলে বাজার দখল করেছে দেশীয় সুতি কাপড়। আছে চায়না কাপড়ের দাপট। গরমের কারণে সুতি থ্রিপিস রয়েছে বিক্রির শীর্ষে। শিশুদের পোশাকও বিক্রি হচ্ছে বেশি। এসব পোশাকের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে টপস, স্কার্ট, ফ্রক, জিন্স প্যান্ট, গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, কালার হাফশার্ট, ফুলশার্ট, গেঞ্জি, জিন্সের প্যান্ট।
বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাতেও রয়েছে সারি সারি পাঞ্জাবির দোকান। জুতার দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে স্টেশন রোডের কমদামের জুতা-সেন্ডেলের দোকানে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সালিমার সুপারমার্কেটে বাচ্চার জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন ব্রিজ রোডের বাসিন্দা ফাহমিদা শিখা। তিনি দুই মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন। গত বছর যে জামা ৮০০ টাকায় পাওয়া যেত, এবার তা ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার পোশাকের মডেলে তেমন পরিবর্তন হয়নি বলে জানান তিনি।
স্টেশন রোডের শু প্যালেসের কর্ণধার সোহাগ মৃধা বলেন, গত বছরের তুলনায় প্রতিটি জুতা-স্যান্ডেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। কেনাবেচা তেমন শুরু হয়নি। দু-এক দিনের মধ্যে জমে উঠবে আশা করছি।
তিন ছেলের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন শহরের খানকা শরিফ এলাকার রোজী বেগম। তিনি জানান, বাজেট অনুযায়ী পোশাক কিনতে পারছেন না। আপাতত দুই ছেলের জন্য পোশাক কিনেছেন। টাকা জোগাড় করে অন্য ছেলেরটা কিনবেন বলে জানান তিনি।’
পৌর মার্কেটের ফারহান ক্লথ স্টোরের দোকানি আরিফ হাসান জানান, ‘প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এবার দাম বেশি। তাই বিক্রিও কম।
চৌধুরী মার্কেটে পাঞ্জাবি বিক্রেতা সৌরভ মিয়া জানান, এ বছর বিক্রি ভালো না। তবে দু-এক দিন পর বিক্রি বেড়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঈদ র ক ন ক ট র জন য প শ ক ক ন প শ ক ক নত
এছাড়াও পড়ুন:
তুচ্ছ ঘটনার জেরে এনসিপি–বিএনপির সংঘর্ষ, ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
রাজধানীর রূপনগরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সোমবার রাতের এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে ২১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় ৫০–৬০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাম্মেল হক সমকালকে বলেন, মিরপুরের বিইউবিটির এক ছাত্রীর সঙ্গে উত্তরার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অনিকের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তরুণী তার এক সহপাঠী আশিকের সহায়তা চান। এরপর সোমবার রাত ৮টার দিকে তরুণী রূপনগর আবাসিক এলাকার ১২ নম্বর সড়কের ঝিলপাড় এলাকায় তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যান। ওই সময় আশিক সেখানে উপস্থিত হয়ে অনিককে গালমন্দ করেন। এ নিয়ে দুজন বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ান।
ওসি আরও বলেন, আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মারধরের কারণ জানতে চাইলে তাদের সঙ্গেও বিতণ্ডায় জড়ান আশিক। একপর্যায়ে রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক টুটুল মিয়াসহ কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হন। অন্যদিকে খবর পেয়ে আশিকের পক্ষের লোকজনও সেখানে যান। এ সময় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে করা মামলার আসামিরা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।
এদিকে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ মাহিন আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এজাহারে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কর্মী অনিককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করার জন্য থানায় সংবাদ দেয়। ওই সময় টুটুল মিয়াসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৫০–৬০ জন এসে ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে টুটুলসহ তার লোকজনের কথা কাটাকাটি ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমি সেখানে উপস্থিত হই। তখন টুটুল আমাকে দেখে বলেন, এটাই সেই মাহিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এরপর তারা লাঠিসোঁটা, ধারালো চাকু, রাম দা, হকিস্টিক, স্ট্যাম্প নিয়ে আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে আমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। আমাকে রক্ষার জন্য অন্যরা এগিয়ে গেলে তাদেরও মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মারধর ও ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার পর দুই পক্ষই মিছিল নিয়ে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে থানার সামনে জড়ো হয়। এ নিয়ে দীর্ঘ সময় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে।