‘গত বছরের তুলনায় এবার কাপড় উৎপাদন যথেষ্ট হয়নি। অনেক গার্মেন্ট বন্ধ ছিল। এখনও কিছু গার্মেন্টে উৎপাদন বন্ধ। বাইরে থেকে কাপড়ের আমদানিও তেমন হয়নি। এ কারণে সব ধরনের পোশাকের দাম বেড়েছে। বিক্রিও কমে গেছে।’
কথাগুলো বলেন গাইবান্ধা শহরের সালিমার সুপারমার্কেটের জিম ফ্যাশনের কর্ণধার শাহ আলম মিয়া। বিক্রি কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের টাকাওয়ালা নেতারা নিজেদের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও কেনাকাটা করতেন। তারা গা-ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই আগে যিনি সন্তানের জন্য দুইটা জামা কিনতেন, এখন একটা কেনেন।’
ঈদ সামনে রেখে জমে উঠতে শুরু করেছে গাইবান্ধার মার্কেটগুলো। যদিও ১০ রোজা পর্যন্ত তেমন বিক্রি হয়নি।  এবার নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের ফুটপাতের দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। শহরের মার্কেটগুলোর মধ্যে পৌর মার্কেট, স্টেশন রোডের চুড়িপট্টি, সালিমার সুপারমার্কেট, ইসলাম প্লাজাসহ পুরো সড়কটিতেই প্যান্ট, শার্ট, কোর্ট, জুতা-স্যান্ডেলের সারি সারি দোকান।
বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেনাকাটা শুরু হয়েছে ১৫ রোজার পর থেকে। এবার ভারতীয় কাপড়কে পেছনে ফেলে বাজার দখল করেছে দেশীয় সুতি কাপড়। আছে চায়না কাপড়ের দাপট। গরমের কারণে সুতি থ্রিপিস রয়েছে বিক্রির শীর্ষে। শিশুদের পোশাকও বিক্রি হচ্ছে বেশি। এসব পোশাকের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে টপস, স্কার্ট, ফ্রক, জিন্স প্যান্ট, গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, কালার হাফশার্ট, ফুলশার্ট, গেঞ্জি, জিন্সের প্যান্ট।
বিপণিবিতানের পাশাপাশি ফুটপাতেও রয়েছে সারি সারি পাঞ্জাবির দোকান। জুতার দোকানগুলোতেও ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে স্টেশন রোডের কমদামের জুতা-সেন্ডেলের দোকানে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সালিমার সুপারমার্কেটে বাচ্চার জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন ব্রিজ রোডের বাসিন্দা ফাহমিদা শিখা। তিনি দুই মেয়ের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন। গত বছর যে জামা ৮০০ টাকায় পাওয়া যেত, এবার তা ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার পোশাকের মডেলে তেমন পরিবর্তন হয়নি বলে জানান তিনি।
স্টেশন রোডের শু প্যালেসের কর্ণধার সোহাগ মৃধা বলেন, গত বছরের তুলনায় প্রতিটি জুতা-স্যান্ডেল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। কেনাবেচা তেমন শুরু হয়নি। দু-এক দিনের মধ্যে জমে উঠবে আশা করছি। 
তিন ছেলের জন্য পোশাক কিনতে এসেছেন শহরের খানকা শরিফ এলাকার রোজী বেগম। তিনি জানান, বাজেট অনুযায়ী পোশাক কিনতে পারছেন না। আপাতত দুই ছেলের জন্য পোশাক কিনেছেন। টাকা জোগাড় করে অন্য ছেলেরটা কিনবেন বলে জানান তিনি।’
পৌর মার্কেটের ফারহান ক্লথ স্টোরের দোকানি আরিফ হাসান জানান, ‘প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। এবার দাম বেশি। তাই বিক্রিও কম।
চৌধুরী মার্কেটে পাঞ্জাবি বিক্রেতা সৌরভ মিয়া জানান, এ বছর বিক্রি ভালো না। তবে দু-এক দিন পর বিক্রি বেড়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র ক ন ক ট র জন য প শ ক ক ন প শ ক ক নত

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানলে ২৪ জনের মৃত্যু

দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে দাবানলে কমপক্ষে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো কয়েকটি এলাকায় আগুন জ্বলছে। এই দাবানল ইতিমধ্যে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দাবানলের রেকর্ড গড়েছে।

দাবানলে আরও ২৬ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের ১২ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন। ভুক্তভোগীদের বেশির ভাগের বয়স ৬০ থেকে ৭০ এর কোটায়। দাবানলের কারণে ২৩ হাজারের মতো মানুষকে বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু বলেছেন, ‘নজিরবিহীন এই সংকট আমাদের জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের রেকর্ড বই নতুন করে লিখছে।’

আগুনে উইসেয়ং শহরের ১ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো মন্দির পুড়ে গেছে। ওই শহরের অনেক সাংস্কৃতিক নিদর্শন সরিয়ে নিরাপদ জায়গায় নেওয়া হয়েছে।

গত শুক্রবার সানচেয়ং কাউন্টিতে দাবানলের সূত্রপাত হয়। এরপর আগুন উইসেয়ং কাউন্টিতে ছড়িয়ে পড়ে। ঝোড়ো ও শুষ্ক বাতাসে একপর্যায়ে আগুন পার্শ্ববর্তী কয়েকটি কাউন্টিতেও ছড়িয়ে পড়ে।

দাবানলের এ ঘটনায় মঙ্গলবার সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে জাতীয় অগ্নিনির্বাপণ সংস্থা। বুধবার উইসেয়ংয়ের পাহাড়ি এলাকায় আগুন নেভানোর সময় একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট নিহত হন।

দাবানল নিয়ন্ত্রণে কয়েক হাজার অগ্নিনির্বাপণ কর্মীর পাশাপাশি পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। দেশটিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারও আগুন নেভানোর কাছে অংশ নিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানলের ঘটনা তেমন ঘটে না। তবে এবারের দাবানল ইতিমধ্যে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির রেকর্ড গড়েছে। দাবানলে ১৭ হাজার হেক্টরের মতো বন ধ্বংস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসেবে এটি দেশটির ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ