‘আমলাতান্ত্রিক জটিলতার শেষ কোথায়?’
Published: 25th, March 2025 GMT
‘চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নির্মাতা ও প্রযোজকদের ভোগান্তির শেষ নেই। অনেক বছর ধরে যে যন্ত্রণা সবাই সহ্য করছিলেন, এখনো যদি তা চলমান থাকে বা কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি হয়, তাহলে হতাশার শেষ নেই।’ আজ মঙ্গলবার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন নির্মাতা রেদওয়ান রনি।
চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবির মুখে ২০২৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড’ গঠন করে সরকার। সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠনের পরও সিনেমার ছাড়পত্র পেতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রযোজক, নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা।
আরও পড়ুনসার্টিফিকেশন বোর্ড কী করছে১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আজ বিকালে এক ফেসবুক পোস্টে রেদওয়ান রনি লিখেছেন, ‘সেন্সর বোর্ড থেকে সার্টিফিকেশন বোর্ড করা হলো। যদি এখনো সিনেমার কারেকশন (সংশোধনী) আসতেই থাকে, তাহলে কী লাভ হলো? সিনেমাটি যে বয়সের জন্য প্রযোজ্য, সে বয়সের জন্য নির্ধারণ না করে কারেকশন বা কাটছাঁট করার মানে কী? এটা লাস্ট কয়েকটি ফিল্মের ক্ষেত্রেই হয়েছে এবং হয়েই চলেছে। সার্টিফিকেশন নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন বা অনুমোদনবিষয়ক জটিলতা থাকলে আগে সেটা ঠিক করেন। এভাবে প্রতিটি সিনেমার কোয়ালিটি জাজমেন্ট করার মোড়ল হয়ে বসার জন্য কি এই বোর্ড? শিল্পের মান নির্ধারণের এখতিয়ার কি এই বোর্ডের আছে?’
রেদওয়ান রনির ভাষ্যে, ‘প্রতিটি সিনেমার সার্টিফিকেশন প্রসেসে (প্রক্রিয়া) আগের চেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে। কারণ, আগে প্রযোজককে কোনো বিষয়ে জানানোর জন্য চিঠি দিতে হলে বোর্ড নিজেই দিতে পারত। কিন্তু এখন প্রতিটি চিঠির ড্রাফ্ট প্রথমে মন্ত্রণালয়ে যায়, অনেকগুলো টেবিল ঘুরে ঘুরে তারপর ফেরত আসে সার্টিফিকেশন বোর্ডে। আরও কিছু টেবিল ঘুরে চিঠি পান প্রযোজক। সিনেমা প্রিভিউ হওয়ার পরও অনেক সময় সেই চিঠি প্রযোজকের হাত পর্যন্ত আসতে মাস খানেক সময় লেগে যায়। সেই চিঠির ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে জমা দেওয়ার পর আবার বোর্ড প্রিভিউ হয়। আবারও কোনো কিছু জানানোর প্রয়োজন হলে মন্ত্রণালয় আর বোর্ডে চিঠির চক্কর চলতে থাকবে অসীম লুপে। এত বড় একটা বোর্ড অথরিটি একটা চিঠি ইস্যু করতে পারে না? এই আমলাতান্ত্রিক জটিলতার শেষ কোথায়?’
‘বরবাদ’ সিনেমার কিছু দৃশ্যে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড। কাটছাঁট করে জমা পড়েছে সিনেমাটি। ছবিটির বিনা কর্তনে ছাড়পত্র দাবি করেছেন তারকারা।
আরও পড়ুনসেন্সর বোর্ড যুগের ইতি, সার্টিফিকেশন বোর্ড গঠন২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪অভিনেতা সিয়াম আহমেদ লিখেছেন, ‘একজন অভিনেতা হিসেবে আমি জানি, একেকটা সিনেমার পেছনে কত মানুষের স্বপ্ন লুকোনো থাকে। আমাদের মৃতপ্রায় ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা চেষ্টা করছি যে যার জায়গা থেকে কন্ট্রিবিউট করার। কিন্তু এসবের মধ্যে যদি সিনেমা আটকে দেওয়ার গুঞ্জন কানে আসে, তাহলে খুব হতাশ লাগে, তীব্র রাগ হয়। একটা সিনেমা আটকে দেওয়া মানে কতগুলো স্বপ্নকে দাফন করে দেওয়া! “বরবাদ” আমি, আমরা সিনেমাহলে দেখতে চাই। এই ঈদে দর্শক “জংলি”, “বরবাদ”, “দাগী”, “চক্কর”, “জ্বীন-৩” দেখতে সিনেমা হলে ভিড় করুক। সিদ্ধান্ত নিতে যাঁরা বসে আছেন, তাঁদের কাছে আমার একটাই দাবি—হয় সব সিনেমা মুক্তি দিন, নাহলে কোনোটাই দেওয়ার দরকার নেই। চলচ্চিত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিন।’
অভিনেত্রী শবনম বুবলী লিখেছেন, “একটি সিনেমা তৈরির পেছনে অনেক স্বপ্ন থাকে, থাকে প্রযোজক, নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীদের অক্লান্ত পরিশ্রম। সেই স্বপ্ন পূরণ হয় এবং সবার পরিশ্রম সার্থক হয় যখন বড় পর্দায় একটু একটু করে বহুদিন ধরে একরাশ আশা নিয়ে তৈরি করা সিনেমাটা সবাই দেখতে পায়। আমরা ঈদের সিনেমা “জংলি” যেমন দর্শকদের দেখাতে চাই, তেমনি “বরবাদ”, “দাগী”, “জ্বীন ৩”, “চক্কর”সহ ঈদে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সব সিনেমা চাই দর্শক দেখতে পাক। আশা করছি “বরবাদ” সিনেমা নিয়ে সব জটিলতার সুন্দর সমাধান হবে এবং যেভাবে “বরবাদ” টিম তাদের সিনেমাটি সবাইকে দেখাতে চেয়েছে, সেভাবেই দেখতে পাব।’
তমা মির্জা লিখেছেন, ‘কী যে বলেন, বুঝি না! সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা যে পরিমাণ ভায়োলেন্স দেখি প্রতিদিন, এর থেকে বেশি একটা মুভিতে কী আর দেখাবে? আমরা চাই, “বরবাদ” সিনেমা হলে আসুক।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র র জন য বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
ভালোভাবে সংস্কারের মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন করা সম্ভব: রুহিন হোসেন
নির্বাচনব্যবস্থা ভালো করার জন্য অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। ভালোভাবে সংস্কারের মধ্য দিয়ে আগামী ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন করা সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
আজ বুধবার মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে সকাল সোয়া ১০টার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন রুহিন হোসেন।
রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমরা বলেছি নির্বাচনব্যবস্থা ভালো করার জন্য অবশ্যই সংস্কার করতে হবে। আমরা মনে করি, এর জন্য এই যে এত দিন সময় গেল, এটা কালক্ষেপণ হলো। যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাঁদের যদি বলত, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ভালো নির্বাচন কীভাবে করা যাবে সে বিষয়ে আলোচনা করত, তাহলে তাঁরা উত্থাপন করতে পারতেন।’
রুহিন হোসেন আরও বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বলছি, আগামীকাল থেকে ওই টিম রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করুক—নির্বাচনব্যবস্থা কীভাবে সংস্কার করে ভালো নির্বাচন করা যায়। তাহলে দুই মাসও সময় লাগবে না। ভালোভাবে সংস্কার করে নির্বাচন ডিসেম্বরে কেন, তার আগেই সম্ভব।’