মোহাম্মদ আলীর দু:খ প্রকাশ
Published: 25th, March 2025 GMT
গত সোমবার জেলা পরিষদ আয়োজিত জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের ঈদ উপলক্ষে সম্মানী ও ঈদ সামগ্রী দেয়ার আয়োজন করা হয়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে সম্মানী দেয়ার সময় নারায়ণগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা জেলা কমান্ডার মো. আলী বক্তব্য শেষে জয়বাংলা বলে ফেলেন।
মো. আলীর মুখে জয়বাংলা শোনার পর মিডিয়া ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচীব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে গতকাল জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গনে সভা সমাবেশ হয়। ওই সমাবেশে বিএনপির অনেকেই বক্তব্য রাখে।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে টিপু বলেন, আজ যে শিল্পকলা একাডেমীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠান হবে ঐ অনুষ্ঠানে মো.
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী অনুষ্ঠানে জয় বাংলা বলা ও সংবাদ প্রকাশ এবং টিপুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মো. আলী বলেন, আমি রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। কিশোর বয়সে জীবনের মায়া ত্যাগ করে ২৫ মার্চ নারায়ণগঞ্জকে পাক হানাদারদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য প্রথমে পঞ্চবটীতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম।
সেদিনই আমার মৃত্যু হতে পারতো। রনাঙ্গনে যতগুলি অপারেশনে জয়ী হয়েছি, জয়ী হওয়ার পর পরই জয়বাংলা স্লোগানে ঐ এলাকা মুখরিত করে তুলেছিলাম। সাবেক সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স করতে হবে, যেহেতু আমি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধাদের ও কমপ্লেক্স করার স্বার্থে সাবেক সরকারের দায়ীত্ববান লোকদের সাথে আমাকে চলতে হয়েছে।
তবে কেউ বলতে পারবে না, সাবেক সরকারের শাসনামলে কারো সাথে রাস্তায় নেমেছে কিংবা আমার জন্য জাতীয়তাবাদী দলের কোন ক্ষতি হয়েছে। সাবেক সরকারের দোসররা তাদের দলে নেওয়ার জন্য আমাকে অফার দিয়েছিল। যদি তাদের কথায় রাজী হতাম তাহলে আমার মিল ফ্যাক্টরী সবই থাকতো। একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আমার হাতছাড়া হতো না।
বিএনপির রাজনীতির সাথে যারা জড়িত তারা বুকে হাত দিয়ে বলুক ৯০ সালের পর থেকে আমি কি তাদের সাথে ছিলাম না? দলের যেকোন কল্যানে বা দুঃসময়ে আমি কি তাদের পাশে ছিলাম না? আমার বয়স হয়েছে, দুইবার স্ট্রোক করেছি, সবকিছু মনে রেখে কথা বলতে পারি না।
এখন আমার পড়ন্ত বেলা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনের অজান্তে যেই কথাটা বলেছি, তা আমার অন্তরের কথা ছিলনা। তারপরেও মনে করি কথাটা বলা আমার ঠিক হয়নি। আমার ঐ দিনের কথায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন, তারজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ঐ দিনের কথার জন্য আমি নিজেই মর্মাহত।
ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য সকল জাতীয়তাবাদী শক্তি ও দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করছি।মো. আলী আরো বলেন, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ একের পর এক হরতাল ও আন্দোলন করে যখন দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিল তখন জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য আওয়ামী লীগের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষ করে জাতীয়তাবাদী দলের ডাকে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ আসন থেকে মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম।
সেদিন জাতীয়তাবাদী দল আপনারাই ছিলেন আমার শক্তি ও সাহস। আগামী দিনেও আমি আপনাদের সাথে থাকার অঙ্গীকার করছি এবং আপনারাও আমার পাশে থাকবেন, এটাই প্রত্যাশা করছি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ স ব ক সরক র র ব এনপ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীনতা দিবসে বিজয়স্তম্ভে জেলা বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে চাষাড়া বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
বুধবার ( ২৬ মার্চ) সকাল দশটায় চাষাঢ়া চত্বরে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে নির্মিত বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।
এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদি সরকারের বিরুদ্ধে আমরা গণতন্ত্র এবং প্রকৃত স্বাধীনতার সুফল জনগণকে পৌঁছে দিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি।
পৃথিবীতে অনেক ফ্যাসিবাদি দল তাদের ফ্যাসিবাদি কর্মকান্ডের কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। যারা নিজেদেরকে স্বাধীনতার তথাকথিত ধারক-বাহক মনে করতো এই স্বাধীনতা দিবসে তাদের অস্তিত্ব বাংলাদেশের মাটিতে নাই। সুতরাং ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে, যারাই ফ্যাসিবাদি হয়ে উঠবে তাদেরকেই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব বল, বাংলাদেশ থেকে স্বৈরাচার মুক্ত হবার পর একটি মুক্ত পরিবেশে দীর্ঘদিন পরে আজকে স্বাধীনতা দিবস পালন করছে বিএনপি।
চব্বিশের পট পরিবর্তনের পরে আমরা তথা এদেশের মানুষ নতুনভাবে স্বপ্ন দেখেছে এই বাংলাদেশকে একটি কার্যকর উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে স্থান করে দেওয়ার জন্য জাতীয়তাবাদী দল কাজ করছে।
আমরা বিশ্বাস করি অচিরেই বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খা, যেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ত্রিশ লক্ষ শহীদ হয়েছিলেন এবং চব্বিশের এই গণঅভ্যূত্থানে বীর সেনারা শহীদ হয়েছে সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে আগামীতে।
এই মহান স্বাধীনতা দিবসে আমাদের সকলের শপথ হচ্ছে, বাংলাদেশকে এমন একটি রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে স্থান করে নিতে চাই যে অন্যদের জন্য অনুকরনীয় হয়ে থাকবে।
এর আগে সকাল থেকেই জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, সদস্য রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম টিটু, আশরাফুল আলম রিপনসহ জেলা বিএনপি'র আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ ।