চট্টগ্রাম নগরে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করেছে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নগরের চটেশ্বরী সড়কে এই মিছিল করতে দেখা যায় ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণকে। মিছিল থেকে তাঁরা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও স্বাধীনতা দিবস নিয়ে স্লোগান দেন।

মিছিলটির ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্নজন পোস্ট করেছেন। পোস্টের নিচে চটেশ্বরী সড়ক লেখা রয়েছে। এ ছাড়া ওই সড়কের বিভিন্ন দোকানের সাইনবোর্ডও দেখা যাচ্ছিল ভিডিওতে।

মিছিলকারীদের কারও কারও মাস্ক পরা ছিল। মিছিল করার সময় তাঁদের ‘স্বাধীনতার এই দিনে, মুজিব তোমায় পড়ে মনে’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায় ভিডিওতে।

এ বিষয়ে জানতে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবিরের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি।

পরে এ ব্যাপারে কথা হয় নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) শাকিলা সোলতানার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ইফতারের সময় একটি মিছিল বের করা হয়েছিল। তখন আজানের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আমরা ভিডিওগুলো সংগ্রহ করে দেখছি। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ