চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে জোরেশোরেই ওঠে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মানেই তো আমরা পুরোনো রাজনীতিতে আর ফিরে যাব না।

পুরোনো রাজনীতি মানে কী? রাজনৈতিক দলের ভেতরে নামকাওয়াস্তে গণতন্ত্রের চর্চা, দলের খরচে চাঁদাবাজি সংস্কৃতি, এলাকায় এলাকায় দলীয় প্রভাব জারি রাখতে বিবিধ ক্ষমতাচর্চা, নিজেদের ভেতরে দলাদলি ও প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার প্রবণতা—এসবই তো নাকি?

নতুন রাজনীতির চর্চা বা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবি তুলেছিল অভ্যুত্থানের পক্ষের সব শক্তিই। এর মধ্যে অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা নিজেরাই তৈরি করলেন রাজনৈতিক দল। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে যেদিন নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক দলের (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ ঘটল, সেদিন তাদের ঘিরে বিপুল মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ পেয়েছিল।

এনসিপির মঞ্চে একেকজন বক্তার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছিল, প্রথাগত রাজনীতির যাবতীয় কলুষতা ও অচলায়তন ভেঙে নতুন বাংলাদেশ গড়তে তারাই পারবে। কিন্তু শুরুতেই দলটির কিছু নেতা সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন, ফলে তাঁদের নিয়ে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কতটা প্রতিফলন ঘটবে, তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা দেখা দিয়েছে।

কদিন আগে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ নামে পতিত শক্তির পুনর্বাসন নিয়ে সেনাবাহিনীর দিকে সরাসরি আঙুল তুলে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক ঝড় তোলে। তার প্রতিক্রিয়ায় এনসিপির একেকজন নেতা যেভাবে বক্তব্য রাখছিলেন, তাতে মনেই হলো দলের ভেতরে আদতে তেমন কোনো সমন্বয় নেই।

হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট দেশীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাহসিকতার পরিচয় দিলেও দলের অভ্যন্তরে সে ব্যাপারে পূর্বসিদ্ধান্ত বা দলীয় ফোরামে পূর্ব–আলোচনা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও জল্পনা–কল্পনা তৈরি হয়।

সংবাদমাধ্যমে এ–ও প্রকাশ পেয়েছে, এই ইস্যুতে একেকজনের একেক বক্তব্যে এনসিপিতে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। একটা ইস্যুকে ঘিরে দলের একেকজন একেক বক্তব্য দেওয়ায় এটিই স্পষ্ট যে এখনো দলীয় শৃঙ্খলা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রকাশ্যে মতামত প্রদানে পরিপক্বতার অভাব থেকে গেছে তাঁদের।

যা–ই হোক, এই ইস্যু ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, নানা গুজব ও অনিশ্চয়তার একপ্রকার অবসান ঘটে সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সেনাপ্রধানের এক বৈঠকে (অফিসার্স অ্যাড্রেস) এবং তাঁর দেওয়া বক্তব্য।

তবে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না এনসিপির। গতকাল ২৪ মার্চ দলটির নেতা সারজিস আলম নিজ এলাকায় বিশাল শোডাউন করে নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তিনি ঢাকা থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত গিয়েছেন উড়োজাহাজে চড়ে। বাকি ১০০ কিলোমিটার পথের মধ্যে অর্ধেকটা পাড়ি দিয়েছেন শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, করতোয়া নদীর ওপর একটি সেতু পার হতে শতাধিক গাড়িবহরের জন্য পাঁচ হাজার টাকা টোল দেন সারজিস। তাঁর গাড়িবহরের একজন চালকের বক্তব্য, শোডাউনের গাড়ির সংখ্যা হতে পারে দেড় শর বেশি। পুরো দিনের জন্য একেকটি গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে সাত হাজার টাকা দিয়ে।

যে দলের আত্মপ্রকাশের এখনো এক মাসও হয়নি, এখনো যে দলের নিবন্ধনই হয়নি, সেই দলের একজন নেতার এত বিশাল শোডাউন দেওয়ার এই বিপুল খরচের জোগান কোথা থেকে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। আর টোল দেওয়া এবং প্রতিটি গাড়ি ভাড়া নির্ধারণ থেকে এটি স্পষ্ট যে এ বিশাল শোডাউন, এ বিপুল টাকা খরচের বিষয়টি সারজিস আলমের অজানা নয়। বরং বলা যায়, এই আয়োজনের পরিকল্পনা, সম্মতি বা অর্থ খরচের বিষয়টি তাঁরই সিদ্ধান্ত অনুসারেই হয়েছে।

অথচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত বছরের তাঁর একটি বক্তব্য আমরা দেখে থাকি, যেখানে তিনি বলেন, ‘আমার আসলে এই মুহূর্তে কোনো টাকা নেই। ধার করে চলতেছি। এইটাই হচ্ছে রিয়েলিটি। আমার পকেটে মানিব্যাগও নেই।’ তাঁর এ বক্তব্যের পর এমন শোডাউনের বিষয়টি মানুষের মধ্যে প্রশ্ন তুলবে, সেটিই তো স্বাভাবিক।

আমাদের দেশীয় রাজনীতির এই সব ‘ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’ যদি ভাঙা না যায়, তাহলে তো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রশ্নই আসে না। জুলাই অভ্যুত্থানে এত ত্যাগ ও বিসর্জনের পর রাজনৈতিক দলগুলোই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা তুলল, সেই তারাই তাদের কথাবার্তা-আচরণ-কর্মসূচিতে আমাদের ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তারা আসলে পুরোনো বন্দোবস্তেই থেকে যেতে চায়। সেখানেই তাদের যাবতীয় সুখ! আর কত গণ-অভ্যুত্থান হলে পরে এ দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে?

দলের ভেতরেও সারজিস আলমের এ শোডাউন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এনসিপির আরেক নেতা তাসনিম জারার ফেসবুক পোস্ট থেকেই তা স্পষ্ট। সারজিসের প্রতি একটি খোলা চিঠিতে তাঁর আগের বক্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাসনিম জারা বলেন, ‘সেই প্রেক্ষাপটে এত বড় একটি আয়োজন কীভাবে সম্ভব হলো—এর অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনা কীভাবে হয়েছে, তা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক। আমাদের দল স্বচ্ছতা, সততা ও জবাবদিহির ভিত্তিতে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সে জায়গা থেকে এসব প্রশ্নের স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য উত্তর দেওয়া আমাদের সবারই দায়িত্ব। আমি আশা করি, বিষয়টি তুমি আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং জনগণের সামনে একটি গ্রহণযোগ্য ও পরিষ্কার ব্যাখ্যা তুলে ধরবে। এতে জনগণের কাছে দলের ভাবমূর্তি আরও শক্তিশালী হবে বলেই আমার বিশ্বাস।’

তাসনিম জারার এই পোস্ট নিয়েও অনেকের বক্তব্য হচ্ছে, বিষয়গুলো কি দলীয় ফোরামে আগেই আলোচনা করে নেওয়ার দরকার ছিল না? তাঁদের কি নিজস্ব ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নেই? তাসনিম জারা কি সারজিসকেও সরাসরি বিষয়গুলো বলতে পারতেন না?

তবে কেউ কেউ বলছেন, দলের মানুষ নিয়েও পাবলিকলি প্রশ্ন করার মধ্য দিয়ে এখানে একপ্রকার রাজনৈতিক স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছেন তাসনিম জারা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এত বড় রক্তক্ষয়ী একটি অভ্যুত্থানের পর মানুষ কোন ধরনের রাজনীতি চায়, অভ্যুত্থানের নেতাদের কাছ থেকেও মানুষ কেমন রাজনীতি আশা করে, সে ব্যাপারে কেন তাদের বোধোদয় হবে না? ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ বিগত এক যুগে দেশের রাজনীতি চর্চাকে যেভাবে কলুষিত করে গেছে, সেখান থেকে মুক্তিই বা মিলবে কীভাবে?

যদিও সার্জিস আলমও তাসনিম জারার প্রতিউত্তর দিয়েছেন ফেসবুক পোস্টে। সেখানে তিনি জানাচ্ছেন, ‘আমার এলাকায় ফেরার সময় এত গাড়ি, এত মানুষ; তাদের আকাঙ্ক্ষা এবং ভালোবাসা নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করবে এবং আমাকে সঙ্গ দিবে এটা আমিও কল্পনা করিনি। আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং জেলার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অর্ধেকের বেশি গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। যেগুলোর ব্যয় আমাদের বহন করতে হয়নি। বাকি প্রায় ৫০ টার মতো গাড়ির ৬০০০ করে যে তিন লাখ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে সে টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমার পরিবারের আরো ৫০ বছর আগেও ছিল। এবং আমি বিশ্বাস করি অন্য কেউ না; শুধু আমার দাদা আমার জন্য যতটুকু রেখে গিয়েছেন, সেটা দিয়ে আমি আমার ইলেকশনও করে ফেলতে পারব ইনশাআল্লাহ।’

সামর্থ থাকলেও এমন শোডাউন কি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্খা ধারণ করে কি? আর তাঁর পারিবারিক সামর্থ্যের সঙ্গে ‘ধার করে চলার লাইফস্টাইলের’ সামঞ্জস্যও খুঁজে পাওয়া যায় কি?

সারজিসের শোডাউনের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা এসেছে রাজনৈতিক মহল থেকেও। যেমন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজধানীর রমনায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির এক আলোচনা সভায় বলেছেন, ‘যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন (নির্বাচনী প্রচারাভিযান) করতে যায়, তারা কী করবে, সেটা আমরা ভালো বুঝি।’

কিন্তু বিএনপি মহাসচিব এটিও নিশ্চয়ই মানবেন, শোডাউনের এই সংস্কৃতি তো তাঁর দলের ভেতরেও আছে। গত সাত মাসে বিএনপির অনেক নেতাই জেলা-উপজেলায় বিশাল বিশাল শোডাউন করেছেন। কেউ এক যুগ পর জেল থেকে বের হয়ে বা বিদেশ থেকে ফিরে এসে এলাকায় পুরোনো প্রভাব ফিরে পেতে বিশাল বিশাল শোডাউন দিয়েছেন। এমনকি নির্বাচনী দৌড়ে এগিয়ে থাকতে দলের ভেতরে একাধিক পক্ষের মধ্যে প্রতিযোগিতাস্বরূপ শোডাউনও হয়েছে। তবে এটি ঠিক, দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে এমন শোডাউন করায় কারও কারও বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। আবার এটিও তো আমরা দেখেছি, দলীয় শাস্তিমূলক এমন ব্যবস্থা গ্রহণ আসলে কতটা কার্যকরী।

গত ডিসেম্বরে দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের শোডাউনও ব্যাপক সমালোচনা তৈরি করে। তাঁর নির্বাচনী এলাকা থেকে ট্রাক ভরে শত শত নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে জড়ো হন। তাঁদের উপস্থিতিতে বিমানবন্দর এলাকায় যানজট দেখা দেয়। রাস্তার দুই পাশের যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত বিমান সেনা, পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়। পতিত সরকারের ঘনিষ্ঠ ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের গাড়িতে এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা নিয়ে বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদকে নিয়েও তো বিতর্ক তৈরি হয়েছিল।

ফলে বিএনপির মহাসচিবকে লক্ষ করে যদি তাঁর মতন করেই কেউ যদি বলে, ‘তারাও কী করবে, সেটিও আমরা ভালো বুঝি’, তখন কী উত্তর দেবেন তিনি?

আমাদের দেশীয় রাজনীতির এই সব ‘ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি’ যদি ভাঙা না যায়, তাহলে তো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রশ্নই আসে না। জুলাই অভ্যুত্থানে এত ত্যাগ ও বিসর্জনের পর রাজনৈতিক দলগুলোই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা তুলল, সেই তারাই তাদের কথাবার্তা-আচরণ-কর্মসূচিতে আমাদের ভালোভাবেই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে তারা আসলে পুরোনো বন্দোবস্তেই থেকে যেতে চায়। সেখানেই তাদের যাবতীয় সুখ! আর কত গণ-অভ্যুত্থান হলে পরে এ দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে?

রাফসান গালিব প্রথম আলোর সম্পাদকীয় সহকারী। ই–মেইল: [email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ সব ক প স ট দ শ র র জন ত র র জন ত ক র জন ত র র ব ষয়ট এনস প র ব এনপ র এক কজন এল ক য় আম দ র র জন য ন র পর স আলম ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

নিগারদের যেন রেকর্ড ভাঙা–গড়ার নেশায় পেয়েছে

ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে দারুণ ব্যাট করছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। পাকিস্তানের মেয়েদের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিগাররা তুলেছিলেন ২৭৬ রান—আনঅফিশিয়াল ম্যাচ হওয়ায় যেটা রেকর্ড হয়নি। কীসের রেকর্ড? বাংলাদেশের মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড।

তবে বাছাইপর্বে লাহোরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নেমেই রেকর্ডটি গড়েন নিগাররা। গত বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫২ রানের রেকর্ড ভেঙে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল তুলেছিল ২৭১ রান। আজ সেই লাহোরেই বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে সে রেকর্ডও ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে লাল–সবুজের প্রতিনিধিরা।

আরও পড়ুনবিসিবিতে হঠাৎ দুদক, তিন বিষয়ে তদন্ত১ ঘণ্টা আগে

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ২৭৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই এখন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার আজও বড় রান পেয়েছেন। ১১ চারে ৫৯ বলে ১৪০.৬৭ স্ট্রাইকরেটে করেন অপরাজিত ৮৩ রান।

আরও দুটি ফিফটি আছে বাংলাদেশের ইনিংসে। ওপেনার ফারজানা হক করেন ৮৪ বলে ৫৭ এবং শারমিনের ব্যাট থেকে এসেছে ৭৯ বলে ৫৭ রানের ইনিংস। থাইল্যান্ডের বিপক্ষেও বাংলাদেশের এ তিন ব্যাটার রান পেয়েছিলেন। সে ম্যাচে নিগারের ১০১ রানের পাশাপাশি শারমিন ৯৪ রানে অপরাজিত ছিলেন এবং ফারজানা করেন ৫৩।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মন্থর। ১৪ রান করা ওপেনার ইশমা তানজিম ৮.৩ ওভারে যখন আউট হন, বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৩৫। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশ ইনিংসের ভিত গড়েন শারমিন ও ফারজানা। ১২৭ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন দুজন, যেখানে ফারজানার অবদান ৪৮ বলে ৪০ ও শারমিনের ৭৯ বলে ৫৭।

আরও পড়ুনর‍্যাঙ্কিংয়েও সুখবর, ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ অবস্থানে নিগার, শারমিন ও রাবেয়া২ ঘণ্টা আগে

ত্রিশতম ওভারে শারমিন আউট হওয়ার পর আট ওভারের মধ্যে ফারজানা ও সোবহানা মোস্তারিও (৯) আউট হন। ৩৭.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৭৬।
এখান থেকে পঞ্চম উইকেটে রিতু মনির সঙ্গে ৩৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ফাহিমার সঙ্গে ৪৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন নিগার। ২২ বলে ২৬ রান করেন ফাহিমা। ১৬টি ওয়াইড দিয়েছেন স্কটল্যান্ডের বোলাররা।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এ পর্যন্ত দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানে হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে জেতে নিগারের দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৬ (নিগার ৮৩*, শারমিন ৫৭, ফারজানা ৫৭, ফাহিমা ২৬; ব্রাইস ২/৫৩, র‌্যাচেল ১/৩৩, চোলে ১/৩৭, প্রিয়ানাজ ১/৩৪)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ