গাড়িবহর নিয়ে তাসনিম জারার চিঠির জবাব দিলেন সারজিস
Published: 25th, March 2025 GMT
সারজিস আলমের শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে পঞ্চগড়ে নিজের এলাকায় যাওয়া ঘিরে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলোর ব্যাখ্যা চেয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তাঁর দলের নেতা তাসনিম জারা। জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এই পোস্ট দেওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টার মাথায় জবাব দিয়েছেন সারজিস আলম। তিনি বলেছেন, তাঁরা যে নতুন বন্দোবস্তের কল্পনা করেন সেটা ছয় মাসের মধ্যে প্রয়োগ করলে নির্বাচনে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই জামানত হারানোর সম্ভাবনা থাকবে।
তাছাড়া তাঁর নিজের কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করার সামর্থ্য নেই অর্থ পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সেই সামর্থ্য নেই– বিষয়টি তেমন নয় বলে দাবি করেছেন সারজিস আলম।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠকের (উত্তরাঞ্চল) দায়িত্ব পাওয়ার পর গতকাল সোমবার প্রথম নিজের এলাকায় যান সারজিস আলম। তিনি গতকাল ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে সৈয়দপুরে যান। সেখান থেকে তিনি সড়কপথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ যান। দেবীগঞ্জ থেকে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে সারজিস আলম জেলার বোদা, পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা সফর করেন। সারজিস আলমের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলায়।
সারজিস আলমের এই ‘শোডাউন’ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বিষয়টি নিয়ে আজ প্রশ্ন তুলেছেন। তারপর সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে বিষয়টি ঘিরে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলোর গ্রহণযোগ্য ও পরিষ্কার ব্যাখ্যা চান পেশায় চিকিৎসক তাসনিম জারা।
জবাবে সারজিস আলম যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো তিনি দাবি করেছেন, গতকাল তাঁর পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব এবং জেলার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে বহরের অর্ধেকের বেশি গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। যেগুলোর ব্যয় তাঁদেরকে বহন করতে হয়নি। বাকি প্রায় ৫০টির মতো গাড়ির ৬০০০ টাকা করে যে তিন লাখ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে, সেই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর পরিবারের আরও ৫০ বছর আগেও ছিল।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হলে তার খরচ নিয়েও আত্মবিশ্বাসী সারজিস লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি অন্য কেউ না; শুধু আমার দাদা আমার জন্য যতটুকু রেখে গিয়েছেন, সেটা দিয়ে আমি আমার ইলেকশনও করে ফেলতে পারব ইনশাআল্লাহ।’
আরও পড়ুনপঞ্চগড়ে সারজিসের গাড়িবহর নিয়ে ‘পরিষ্কার ব্যাখ্যা’ চাইলেন এনসিপি নেত্রী তাসনিম জারা১ ঘণ্টা আগেসারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো:
“প্রিয় তাসনিম জারা আপু,
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার খোলা চিঠির উত্তরের পূর্বে দুটি বিষয় বলতে চাই।
প্রথমত, আমাদের চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা থেকে সবার আগে যে বিষয়টি বাদ দিতে হবে সেটি হচ্ছে- একজন নতুন করে জাতীয় রাজনীতিতে এসেছে মানেই তার পরিবার সহায়-সম্বলহীন, অসহায়, নিঃস্ব না। বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতারা চাঁদাবাজি, লুটপাট করে এসব কাজ করেছে বলে, একই কাজ করে অন্যরাও সেটা করবে বিষয়টি তেমনও নয়। আমার এই মুহূর্তে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করার সামর্থ্য নেই মানে এই নয় যে আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের সেই সামর্থ্য নেই।
দ্বিতীয়তঃ কতিপয় সোশ্যাল মিডিয়া বুদ্ধিজীবী তাদের জায়গা থেকে যেভাবে রাজনীতিকে কল্পনা করেন সেটা কোন আদর্শ পৃথিবীর চিত্র হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো বৈচিত্র্যময় চিন্তাধারা ধারণকারী জনগণ সম্বলিত একটি দেশের চিত্র নয়। এমনকি বাংলাদেশের একটি জেলার রাজনৈতিক কালচারের সাথে অন্য একটি জেলার রাজনৈতিক কালচারেরও পুরোপুরি মিল নেই। তাই আমার চোখের সামনে আমার আসনে যা দেখছি সেটা দিয়ে অন্য আসনও তুলনা করা যায় না। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলগত অবস্থান বিবেচনায় সেই ইকুয়েশনগুলো ভিন্ন হয়।
আরও পড়ুনযারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে, সেটা আমরা ভালো বুঝি: মির্জা ফখরুল৫ ঘণ্টা আগেআমরা নতুন বন্দোবস্ত চাই। কিন্তু নতুন বন্দোবস্ত বলতে আমরা যেটা কল্পনা করি সেটা ছয় মাসের মধ্যে এপ্লাই করলে অলমোস্ট ৯৫+% ক্ষেত্রে জামানত হারানোর সম্ভাবনা থাকবে। তার মানে কি আমরা নতুন বন্দোবস্ত চাই না? অবশ্যই চাই।
কিন্তু সেটা কখনো ছয় মাসের ব্যবধানে 180 ডিগ্রি উল্টে যাবে না বরং সময়ের সাথে সাথে ১০% ২০% ৩০% এভাবে পরিবর্তিত হবে। এক সময় হয়তো শতভাগ নতুন বন্দোবস্ত দেখতে পাবো।
ফেসবুকের রাজনীতি আর মাঠের রাজনীতি এক নয়। আপনার প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই করার জনবল এবং সামর্থ্য আপনার যদি না থাকে কিংবা আপনি দেখাতে না পারেন তাহলে মাঠের রাজনীতিতে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। অন্য নেতা তো দূরের কথা সাধারণ জনগণও আপনাকে গোনায় ধরবে না। কারণ মানুষ স্বভাবতই ক্ষমতামুখী। আমাদের যেমন নতুন বন্দোবস্তের দিকে যেতে হবে তেমনি মাঠের রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য পূর্বের যেই বন্দোবস্তগুলো চাইলেই এখনই ছুঁড়ে ফেলা সম্ভব নয় সেগুলো কেউ পাশে রেখে আপাতত চলতে হবে। যেদিন সেগুলোও ছুঁড়ে ফেলার সুযোগ আসবে সেদিন সেগুলোর ছুড়ে ফেলতে হবে।
সোমবার বিকেলে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে পঞ্চগড় শহর পার হন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক র র জন ত র পর ব র বহর ন য় ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় বিএনপি ও শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে স্কুলের জমি দখলের অভি
ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ফতুল্লা আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হুমায়ুন কবির ও বিএনপি নেতা নাসিম আবেদীনের বিরুদ্ধে।
একদিকে বিদ্যালয়ের জমি দখলের খবরে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও জাফর সাদিক চৌধুরী।
জমি দখলের খবরে ছুটে আসেন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও ফতুল্লার বিভিন্ন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। এসময় জাফর সাদিক জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণের সঙ্গে জড়িতদের ডেকে বিদ্যালয়ের জমি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে সদর ইউএনও জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, আমি জমি দখলদার ডেকে তিনদিনের মধ্যে জমির দখল মুক্ত করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। অন্যথায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।