বন্দরের উত্তর লক্ষণখোলায় ভূমি নিয়ে দুই গ্রুপের রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের সাত দিন অতিবাহিত হলেও এখনো উত্তেজনা থামেনি। দুই পক্ষেরই পাল্টাপল্টি মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। মামলার পর একটি পক্ষ ইতিমধ্যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন।

অপর পক্ষ জামিন নিতে পারেনি। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের প্রভাব খাটিয়ে ভূমি জবর দখলে রাখার চেষ্টা করছেন বলে এলাকা সূত্রে জানা গেছে। এ ভূমি নিয়ে আদালতে দেওয়ানী মামলা চলমান। দে/মামলা নং ৪৬/২৫।

জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ দুপুরে বন্দরের উত্তর লক্ষণখোলা এলাকার মজনু মিয়া, সাইফুল, আফজাল, সাফিয়া, রহিমা, হোসেন, সহিদ, শান্ত ও আনারদের ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত রেকর্ডিয় ভূমি একই এলাকার তাহের, জরিনা বেগম, সুরাইয়া,মনজু শেখ, মোকলেস, আবুল, আরিফ, নজরুলরা বহু বছর ধরে দখল করে রাখা ভূমি ছেড়ে দেয়ার কথা বলায় দুই পক্ষ রক্ত ক্ষয়ি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

উভয় পক্ষের লোকেরা আহত হয়। এ সংঘর্ষ নিয়ে  উভয় পক্ষ থানায় মামলা করে মামলা নং ৩২ ও ৩৫। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার বাদী মাজেদা বেগম জানান, আমার স্বামী মজনু মিয়ার দাদী সমলা বিবি লক্ষণ খোলা মৌজায় এসএ খতিয়ান নং ১৯৫ ও আরএস খতিয়ান নং ৪৯৮।

এসএ-৪১, আর এস-৩৪২ দাগের ২৪ শতক ভূমি ১৯৫০ সালে জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল জাব্বারের মৃত্যুর পর ভূমি মালিক ওয়ারিশ কদবানু ও আব্দুল হাসেমের কাছ থেকে ১১২০ নং দলিলে ক্রয় করেন।

পরবর্তিতে এসএ-৪১ ও আর এস রেকর্ডে ৩৪২ দাগে সমলা বিবির নামে ২৪ শতাংশ রেকর্ড হয়। আমরা সমলা বিবির ওয়ারিশরা ইতিমধ্যে যার যার হিস্যাত নামজারিও করেছেন । কিন্তু তারা আমাদের রেকর্ডিয় ভূমি জবর দখল করে রাখে।

আমরা তাদের কোন প্রকার স্থাপনা না করার জন্য আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তারা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ করতে গেলে তারা আমাদের উপর হামলা করে। এ জন্য আমরা থানায় মামলা দায়ের করি। কারণ তারা এর আগেও স্থানীয় পঞ্চায়েত বিচাল সালিস করলেও করলে তারা তা মানেননা।

এ ব্যপারে অপর মামলার বাদী জরিনা বেগম জানান, আমাদের পূর্ব পুরুষরা তাদের কাছে ১৪ শতক জমি বিক্রি করেছে। কিন্তু তারা জালিয়াতি করে ২৪ শতক লিখে নিয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছি। আমারা আমাদের স্থাপনা ভেঙ্গে মেরামত করতে গেলে তারা আমাদের বাধা দেয়।

এবং আমাদের উপর হামলা চালায়। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি দখলকারী নজরুল ইসলাম বলেন, এ সম্পত্তি আমাদের ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্য। আর যারা এখন দাবি করছে তারা ক্রয় সূত্রে মালিকানা দাবি করছে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও নজরুলরা ভূমি দখলের জন্য স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। আর এ নিয়ে এখনো উত্তেজনা থামেনি। এলাকাবাসী জনানা, কাজপত্রে জমির মালিক মজনুরা আর দখল করে রেখেছিল মঞ্জুর শেখরা।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ স ঘর ষ আম দ র র কর ড

এছাড়াও পড়ুন:

মার্কিন-রুশ আলোচনা চলবে, মস্কোয় অবিশ্বাস কিয়েভের

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি কার্যকরে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সর্বশেষ বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বৈঠকটি সোমবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয়। শিগগির যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে। উভয় দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তারা মনে করেন, আলোচনার ধারাবাহিকতায় ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আলোচনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। বৈঠকে কৃষ্ণসাগরে একটি ‘সামুদ্রিক যুদ্ধবিরতি’ নিশ্চিত করার বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।     

বৈঠকে রুশ মধ্যস্থতাকারীদের প্রধান গ্রিগোরি কারাসিন এএফপিকে গতকাল মঙ্গলবার ওই তথ্য জানান। বৈঠকে তিনি রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। তাঁর বক্তব্য, বৈঠকে গভীর ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত ঐকমত্যে পৌঁছাতে এখনও সময় লাগবে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব। জাতিসংঘসহ আরও দেশ এই আলোচনায় যুক্ত হবে। হোয়াইট হাউসের একটি সূত্র জানিয়েছে, শান্তি প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপে অগ্রগতি হচ্ছে ও শিগগির একটি ‘ইতিবাচক ঘোষণা’ আশা করা হচ্ছে।

এদিকে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে সৌদিতে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল গতকালও বৈঠক করেছে। তবে যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে রাশিয়াকে বিশ্বাস করতে চাইছে না ইউক্রেন। দেশটির রাষ্ট্রপতির চিফ অব স্টাফের উপদেষ্টা সের্হি লেশচেঙ্কো দাবি করেছেন, নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়ার হাতে ভেটো ক্ষমতা রয়েছে। এই ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে মস্কো নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। ফলে শান্তি আলোচনা শেষমেশ অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মস্কো শান্তি আলোচনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করতে চায়। 

এর মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়া ১৩৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ও ইস্কান্দার-এম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এতে বহু অবকাঠামোর ক্ষতি ও ৮৮ জন আহত হয়েছে। শতাধিক ড্রোন ভূপাতিত করার দাবিও করেছে কিয়েভ। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মস্কো একদিকে নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে, অন্যদিকে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে ফাঁপা বক্তব্য বাদ দিয়ে মস্কোকে অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে সোমবার রাতে রুশ সেনাদের নিয়ন্ত্রণাধীন লুহানস্কে গোলাবর্ষণ করে ইউক্রেন। এই হামলায় তিন রুশ সাংবাদিকসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এই হামলার কড়া সমালোচনা করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ সাংবাদিক হত্যার নিন্দা জানিয়েছে।  

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়া। তবে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা না করার প্রতিশ্রুতি দেয় মস্কো। বিবিসি, রয়টার্স ও আলজাজিরার খবর। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ