ময়মনসিংহের ভালুকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বারবার আগুনের কারণ কী
Published: 25th, March 2025 GMT
ময়মনসিংহের ভালুকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় তিন একর বনভূমি পুড়ে গেছে। পাঁচ দিনের ব্যবধানে গতকাল সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো বনের বিভিন্ন অংশে আগুন লাগে।
ভালুকা-সখীপুর সড়কের ডাকাতিয়া ইউনিয়নের উথুরা রেঞ্জের আঙ্গারগারা বিটের অধীন চানপুর এলাকায় লাগা আগুনে বনাঞ্চলের গজারি ও সেগুনগাছের সুরক্ষায় লাগানো কাঁটাযুক্ত বেতবাগান পুড়ে গেছে। এতে হুমকিতে পড়েছে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য।
আজ মঙ্গলবার সকালে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে যেতেই নাকে ভেসে আসে পোড়া গন্ধ। গজারি-সেগুনগাছের সুরক্ষা দিতে বন বিভাগের লাগানো বেতবাগান পোড়ানোর পাশাপাশি বনের ভেতরের বাঁশবাগান পুড়েছে। আগুনে পুড়ে লতাগুল্ম ও ছোট ছোট গাছগুলোর বিবর্ণ অবস্থা। বন ঘুরে বিভিন্ন ছোট-বড় গাছের গোড়া কাটা দেখা যায়।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাঝেমধ্যে বনের গাছ চুরি হয়। গাছ চুরির জন্য বনে আগুন লাগানো হতে পারে। এর বাইরে পথচারীদের বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও বনের শুকনা পাতায় আগুন লাগতে পারে।
পোড়া বনে বেত কুড়াচ্ছিলেন নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, বন পুড়লে সরকারের ক্ষতি; কিন্তু যারা গাছ কাটে, তাঁদের জন্য লাভ। বনটি একসময় অনেক বড় থাকলেও দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। আগে গাছপালার কারণে বনে ঢোকা না গেলেও এখন বনের ভেতর সবই দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘এখান থাইকা মানুষ গাছ কাইটা কাইটা বেচে।’
আরও পড়ুনভালুকায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ড, সোয়া ৩ ঘণ্টায় পুড়েছে তিন একর বনভূমি২১ ঘণ্টা আগেপুড়ে যাওয়া বনের ভেতরের সড়কে কথা হয় ভ্যানচালক এলিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, মানুষ অহেতুক বেতগাছগুলো পুড়িয়ে দেয়। যারা পুড়িয়ে দিয়েছে, তাঁদের জন্য ভালো; কিন্তু বনের ক্ষতি তো আমাদের ক্ষতি। বেতবাগান পোড়ানো ঠিক হয়নি।
তবে বনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আগুন লেগেছে বলে মনে করেন না ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম আবদুল ওয়াদুদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারও দুষ্টুমির কারণে বা অসতর্কতার কারণে আগুন লেগে থাকতে পারে। বন থেকে গাছ কেটে নেওয়ার পরিবেশ নেই।’ বনে গাছের গোড়া কাটার বিষয়ে জানালে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলব।’
বন পুড়লে সরকারের ক্ষতি; কিন্তু যারা গাছ কাটে, তাঁদের জন্য লাভ। মঙ্গলবার বন ঘুরে বিভিন্ন ছোট-বড় গাছের গোড়া কাটা দেখা যায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রামগতিতে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার ভোরে উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে ময়মনসিংহের নান্দাইলে শিশু ধর্ষণের অভিযোগে এক কিশোরকে আটক করা হয়েছে।
রামগতির ঘটনায় জানা গেছে, ওই গহবধূ সাহ্রির পর প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের পাশের টয়লেটে যান। আসার পথে দু’পাশ থেকে অপরিচিত দুই ব্যক্তি তাঁকে জাপটে ধরে পাশের নির্জন পুকুরপাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই নারী। জ্ঞান ফেরার পর চিৎকার করলে স্থানীয়রা এসে তাঁকে উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে আসেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, তাঁর বাড়ি সিলেট জেলায়। বছর দুয়েক আগে চরগাজী ইউনিয়নের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়। এক সন্তানসহ ভালোভাবে সংসার চলছে। বিয়ের দুই মাস পর একদিন পাশের গ্রামে স্বামীর বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান তিনি। সেখানে ননদের জামাই জামাল আহমেদ তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পারিবারিকভাবে এর প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এর কয়েক মাস পর বাড়িতে এসে তাঁকে ধর্ষণ করে চলে যায় প্রভাবশালী জামাল। এ ঘটনার বিচার দাবি করলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সালিশ বৈঠক হতে দেয়নি ধর্ষক।
ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা একাধিক নারী জানান, গৃহবধূর চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে আসি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি। রামগতি থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগী নারী থানায় অভিযোগ করেছেন। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে ময়মনসিংহের নান্দাইলের রাজগাতী ইউনিয়নে গত শুক্রবার ধর্ষণের শিকার শিশুটি হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বড়াইল গ্রামে তারাবির নামাজ পড়তে গেলে স্থানীয় ফারুক মিয়ার ছেলে আরিয়ান আহমেদ শাওন শিশুটিকে ধর্ষণ করে। গুরুতর অবস্থায় এখন সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সোমবার নান্দাইল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন শাওনকে আটক করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।