বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ, ২০২৫) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সিন্ডিকেট রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. শওকাত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.

আনছার আলী।

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. হারুন-অর রশিদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. ইলিয়াছ প্রামানিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. তানজিউল ইসলাম প্রমুখ।

এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক মো. শওকাত আলী বলেন, “১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভিষীকাময় রাত নেমে আসে। ২৫ মার্চ মধ্য রাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে গণহত্যা চালায়।”

তিনি আরও বলেন, “১৯৭১ সালে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালিদের গণহত্যা এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আগামীতে যেন এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড না সংঘটিত হয়। এজন্য ২০২৪ এর গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার দুর্লভ নির্দশন থেকে যাচ্ছে আড়ালেই

মহান মুক্তিযুদ্ধে চালানো গণহত্যার দুর্লভ সব সংগ্রহ নিয়ে খুলনা নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে গড়ে ওঠে দেশের একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর। ভেতরে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার অসংখ্য নিদর্শন, নথি, বইপত্র থাকলেও তা দেখার সুযোগ পাচ্ছে না মানুষ। ৮ মাস ধরে বন্ধ জাদুঘরের প্রধান ফটক। স্বল্প পরিসরে আর্কাইভ অংশ চালু থাকলেও পরিচালন বরাদ্দ না থাকায় সেই কাজও ব্যাহত হচ্ছে।
জাদুঘর সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ২০ জুলাই সংস্কারের কারণে জাদুঘর বন্ধ করা হয়। আন্দোলনের পর সেটি আর চালু হয়নি। এর মধ্যে ৪ আগস্ট গুলিবিদ্ধ কয়েকজনকে চিকিৎসা না দেওয়ায় জাদুঘরের সামনের হাসপাতালে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ 
ছাত্ররা। ওই সময় জাদুঘরের প্রধান ফটকও ভাঙচুর করা হয়। এতে অরক্ষিত হয়ে পড়ে জাদুঘর। 
এর পর ফটক মেরামতের জন্য কয়েকবার গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া মেলেনি। জাদুঘর ও আর্কাইভ পরিচালনার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান পাওয়ার কথা ছিল, তবে সেই টাকাও ছাড় হয়নি। এতে আর্থিক সংকটে নিজেরাও ফটক মেরামত করতে পারছে না। তহবিল না থাকায় জাদুঘর ও আর্কাইভের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ছাঁটাই করা হয়েছে ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।
১৯৭১ সালের ইতিহাসের সবচেয়ে নারকীয় গণহত্যার তথ্য নতুন প্রজন্মসহ বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে ২০১৪ সালে খুলনায় গড়ে তোলা হয় ‘১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’। অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন ছিলেন এ জাদুঘরের প্রধান উদ্যোক্তা। ১১ বছর ধরে গণহত্যা-নির্যাতনের নিদর্শন সংরক্ষণ, বধ্যভূমি ও গণকবর-সংক্রান্ত তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা এবং গবেষণা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। শুধু বাংলাদেশই নয়, এশিয়ায় এ ধরনের জাদুঘর এটাই প্রথম।
শুরুতে নগরীর শেরেবাংলা রোডের একটি ভাড়া বাড়িতে আর্কাইভ ও জাদুঘরের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৫ সালে জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে নগরীর ২৬ সাউথ সেন্ট্রাল রোডে জমিসহ একটি বাড়ি বরাদ্দ দেয় সরকার। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের তত্ত্বাবধানে সেখানে প্রায় ৩২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬ তলা নতুন ভবন নির্মাণ হয়েছে। খুলনার দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয়। গত মে মাসে ভবনটি চালু হয়।
এখন জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, শহীদদের চিঠিসহ ১৯২ ধরনের নিদর্শন রয়েছে। আছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সাড়ে তিন শতাধিক ছবি। আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি ছবি, দুই হাজারের মতো ভিডিও ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অসংখ্য দুষ্প্রাপ্য নথি।
জাদুঘরে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবেশমুখেই দাঁড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের নৃশংস গণহত্যার সাক্ষী প্লাটিনাম জুট মিলের বয়লার। এই বয়লারে ফেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষকে। জাদুঘরের প্রবেশপথটি টিন ও বাঁশ দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ। ফটকের পাশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-সংবলিত টেরাকোটা অযত্নে পড়ে আছে। 
জাদুঘরের ডেপুটি কিউরেটর মো. রোকনুজ্জামান বাবুল বলেন, প্রধান ফটকটি মেরামত না করে জাদুঘর চালু করা যাচ্ছে না। এ জন্য কয়েকবার গণপূর্ত বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টি বোর্ডের এক সদস্য জানান, ফটক মেরামতের জন্য ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। জাদুঘরের নিজস্ব তহবিলে এত টাকা নেই। জাদুঘর পরিচালনায় যে অনুদান পাওয়ার কথা, সেটিও পাওয়া যায়নি। বিদ্যুৎ বিল, স্টাফ বেতনসহ আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে বছরে ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকা লাগে। বর্তমানে তহবিল সংকটে কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিরাপত্তাও বড় বিষয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছাড়া জাদুঘরটি চালু করা ঝুঁকিপূর্ণ। 
গণপূর্ত বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, ওই ভবন মেরামতের জন্য আমাদের তহবিলে বরাদ্দ নেই। মন্ত্রণালয় থেকে যদি তহবিল দেয়, তাহলে আমরা মেরামত করে দিতে পারব। 
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের খুলনা মহানগর কমান্ডার মনিরুজ্জামান মনি বলেন, জাদুঘরটি চালুর জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার ইতিহাস তুলে ধরতে দ্রুত জাদুঘরটি খুলে দেওয়া প্রয়োজন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা দিবস পালিত
  • কালরাত্রি স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মোমবাতি প্রজ্বালন
  • ইতিহাসের পাতায় ২৫ মার্চ ১৯৭১
  • আজ ভয়াল ২৫ মার্চ 
  • সারাদেশে ১ মিনিটের ব্ল্যাকআউট
  • গণহত্যার দুর্লভ নির্দশন থেকে যাচ্ছে আড়ালেই
  • সেনাবাহিনী পক্ষে ছিল বলেই হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে: রিজভী
  • ১৯৭১–এর সঙ্গে ২০২৪–কে এক কাতারে আনা সমুচিত মনে করে না বিএনপি