ভারতের আবার বুলডোজার নীতির প্রয়োগ। এবার যোগী আদিত্যনাথের উত্তর প্রদেশ নয়, মহারাষ্ট্র রাজ্যে। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এক মুসলিম নেতার বাড়ি। মহারাষ্ট্রের নাগপুর পৌর করপোরেশন গত সোমবার বুলডোজার দিয়ে ওই ব্যক্তির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়। অভিযোগ, তাঁর ছড়িয়ে দেওয়া গুজবে নাগপুরে সম্প্রতি সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল।

ছত্রপতি সাম্ভাজিনগর (সাবেক নাম আওরঙ্গবাদ) থেকে মোগল বাদশাহ আওরঙ্গজেবের সমাধি সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে সম্প্রতি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বিক্ষোভ করেছিলেন। বিক্ষোভকারীরা পবিত্র কোরআন শরিফের আয়াত লেখা একটি ‘চাদর’ পুড়িয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ফাহিম খান নামের ওই মুসলিম নেতা সেটা ছড়িয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এরপরই নাগপুরে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

ওই ঘটনায় করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় প্রধান আসামি ফাহিম খান। নাগপুর পৌর করপোরেশনের একটি দল সোমবার তাঁর বাড়িতে যায়। সেখানে বুলডোজার দিয়ে তাঁর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। করপোরেশনের দাবি, অবৈধভাবে এই বাড়ি করা হয়েছে। সরানোর জন্য বলা সত্ত্বেও তাঁরা বাড়ি সরিয়ে নেননি।

পিটিআইয়ের এক খবরে বলা হয়, ফাহিম মাইনরিটি ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) নেতা। ১৭ মার্চ ওই সহিংসতার ঘটনায় ফাহিমসহ প্রায় ১০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

সূত্রের দাবি, কিছুদিন আগে নাগপুর পৌর করপোরেশন ফাহিম খানের কাছে একটি নোটিশ পাঠায়। যাতে বলা হয়, তাঁর ভবনের প্ল্যানে নানা ত্রুটি রয়েছে।

পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, ফাহিমের বাড়ি নাগপুর নগরের ইয়াশোধরা এলাকার সঞ্জয়বাগ কলোনিতে। বাড়িটি ফাহিম খানের স্ত্রীর নামে নিবন্ধিত।

এমডিপির নগরপ্রধান ফাহিম খান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

১৭ মার্চ নাগপুর শহরের মহল অঞ্চলে মোগল শাসক আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানোর দাবিতে উগ্রবাদী বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা জমায়েত করেন। তাঁদের অভিযোগ, ১৬৫৮ থেকে ১৭০৭ সাল পর্যন্ত ভারতের শাসক আওরঙ্গজেব হিন্দুদের প্রতি বৈষম্য করেছেন এবং তাঁদের প্রার্থনালয়ে হামলা চালিয়েছেন। জমায়েতে সবুজ কাপড়ে ঢাকা আওরঙ্গজেবের কুশপুত্তিলকায় আগুন লাগানো হয়।

বিক্ষোভকারীরা পবিত্র কোরআন শরিফের আয়াত লেখা একটি ‘চাদর’ পুড়িয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনভিস গত শনিবার ঘোষণা দিয়েছেন, সহিংসতার সময় যেসব সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা দাঙ্গাবাজদের কাছ থেকে আদায় করা হবে। তাঁরা জরিমানা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ক্ষয়ক্ষতির টাকা আদায় করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র কর

এছাড়াও পড়ুন:

ডেনমার্ক ২০৪০ সালের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার নির্মূল করতে চায়

ডেনমার্ক ২০৪০ সালের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে দেশব্যাপী হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকা ও স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম এই লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করছে। আজ সোমবার ডেনিশ ক্যানসার সোসাইটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এমনকি ২০৪০ সালের আগেও কম নারীরা যাতে এই রোগে আক্রান্ত হন, সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে; যাতে ২০৪০ সালের আগেও রোগটি নির্মূল হয়েছে বলে মনে হয়। তাহলে এটিই হবে বিশ্বে প্রথমবারের মতো ক্যানসার নির্মূলের ঘটনা।

ডেনিশ মেডিকেল জার্নাল ইউজেসক্রিফ ফর লেগারের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে ডেনমার্কে প্রতি ১ লাখ নারীর মধ্যে ১০ জনের কম নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতি এক লাখের মধ্যে চারজনের কম নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে সেটি নির্মূল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রধান কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়। ডেনমার্কে ১২ বছর বয়সী ৮৯ শতাংশ ছেলে-মেয়েকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে।

২০০৮-০৯ সালের দিকে কিশোরীদের জন্য বিনা মূল্যে এইচপিভি টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। আর ছেলেদের জন্য চালু হয় ২০১৯ সালে।

ডেনমার্কে ৬০ শতাংশ নারী বিনা মূল্যে এইচপিভি ভাইরাসের পরীক্ষা করান; যা নির্ধারিত লক্ষ্য ৭০ শতাংশ থেকে কিছুটা কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডেনমার্ক ২০৪০ সালের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যানসার নির্মূল করতে চায়