অর্থনৈতিক অবস্থা ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, “গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিল; আপনারা সেটার ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় এক লণ্ডভণ্ড অর্থনীতি রেখে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে।”

আরো পড়ুন:

নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে। এ সরকারের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯.

৩২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।”

আগামী জুন মাসের মধ্যে এটি ৮ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, “দেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্স ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড গড়েছে, প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আড়াই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আমাদের দেশের অর্থনীতি গড়ার বীর সৈনিক। তাদের জন্য প্রক্রিয়াগত যেসব বিষয় রয়েছে সেগুলো সহজ করে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তারা যেন ভোগান্তির শিকার না হন, দূতাবাস যেন ঠিকমতো কাজ করে, এটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।আগামী নির্বাচনে যেন তাদের ভোটাধিকার দিতে পারি সেজন্য কাজ করছি।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “পলাতক সরকারের আমলে চর দখলের মতো দেশের ব্যাংকগুলো দখল করে নেওয়া হয়েছিল। আমানতকারীর টাকাকে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত টাকায় রূপান্তরিত করে ফেলেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কাজ ছিল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনা, আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষা করে নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, হিসাবপত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা স্থাপন করা। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেছে। এর ফলে অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জনগুলোর মধ্যে এটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গত সরকারের লুটপাটের মহোৎসবে গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে, এটা আমরা জানি। কত রকমভাবে পাচার হয়েছে তাও জানার বিষয়। অভিনব একেকটা পদ্ধতি ছিল। পাচারের একটা পদ্ধতি সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছে। এই পাচার হয়েছে-বিদেশে অধ্যয়নরত সন্তানের কাছে টাকা পাঠানোর নামে। তিনি সন্তানের লেখাপড়ার জন্য এক সেমিস্টারের অর্থাৎ তিন মাসের খরচ বাবদ অফিসিয়াল ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠিয়েছেন তিন কোটি ৩৩ লক্ষ ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। পাচারের এর চাইতে বেশি তাক লাগানো পন্থা আর কী আছে তার কোনো সীমা আছে বলে আমার মনে হয় না। আইন, নিয়ম, নীতির জায়গায় যখন হরিলুট প্রতিষ্ঠিত হয় তখন এমন সবকিছুই সম্ভব। এই অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।”

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র সরক র র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ফের বেড়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৫৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯ টাকা। এতদিন দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৫ টাকা। গত ১৯ মার্চ এই দাম নির্ধারণ করা হয়। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এখন দাম বাড়ানোর কারণে সেই রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দাম নতুন উচ্চতায় উঠলো।

রোববার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক  বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর তথ্য জানানো হয়। যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে।

নতুন দাম অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৯৩৩ টাকা বেড়ে ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭০৯ টাকা। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৮০৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫ হাজার ৩০৩ টাকা করা হয়েছে।

সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ