জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা সদরের একটি রিসোর্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির পক্ষ থেকে ওই দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান ওরফে হাফিজ। তিনি বলেন, ‘আবদুল হান্নান মাসুদ হাসিনা সরকার পতনের এক দফার ঘোষক। তিনি ৫ আগস্টের আগে একাধিকবার রাজপথে হামলার শিকার হয়েছেন। আজ তাঁকে তাঁর নিজ এলাকা হাতিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হতে হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ, তৌহিদুর রহমান, মো.

ইসমাইল ও হাসিদুর রহমান। আহত হয়ে অসুস্থ থাকায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি আবদুল হান্নান মাসউদ।

লিখিত বক্তব্যে হাফিজুর রহমান উল্লেখ করেন, ‘আবদুল হান্নান মাসউদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর ওপর হামলা করা হয়। হামলার ঘটনায় সরাসরি বিএনপির নেতা–কর্মীরা জড়িত। তাঁরা জিয়ার সৈনিক স্লোগান দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেছেন। হামলায় আবদুল হান্নান মাসউদসহ আমাদের ৫৫ জন নেতা–কর্মী আহত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলার বাইরে পাঠানো হয়েছে।’

হামলায় আহত এনসিপি নেতা আবদুল হান্নান মাসউদ

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল হ ন ন ন ম সউদ আবদ ল হ ন ন ন ম স র রহম ন এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

শতবর্ষী ঐতিহ্যে চুনারুঘাটের বৈশাখী মেলা, কৃষিপণ্যের বাহারে মুখর পীরের বাজার

শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার পীরের বাজারে শুরু হয়েছে বৃহৎ বৈশাখী মেলা, স্থানীয়ভাবে যা 'বান্নি' নামে পরিচিত। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি চুনারুঘাটসহ সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত।

মঙ্গলবার সকাল থেকে মেলা শুরু হয় এবং মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে কৃষিপণ্যের বিশাল সমাহার। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে লাঙল, জোয়াল, দা, কাঁচি, মই, মাছ ধরার সরঞ্জামসহ অসংখ্য কৃষি উপকরণ। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হস্তশিল্প ও মনিহারি পণ্যেরও ছিলো চোখধাঁধানো উপস্থিতি।

স্থানীয় দোকানিরা জানান, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। শুধু হবিগঞ্জ নয়, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী এমনকি উত্তরবঙ্গ থেকেও বিক্রেতারা অংশ নিয়েছেন এ ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে।

চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু বলেন, এই মেলা মূলত কৃষকদের জন্য। এখান থেকে প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতেন তারা।

তবে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারের ফলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামের প্রয়োজন কমে যাওয়ায় মেলার জৌলুস কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন অনেকে। সেইসঙ্গে আশপাশে ঘরবাড়ি গড়ে ওঠায় মেলার পরিসরও সীমিত হয়েছে।

স্থানীয় ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, মেলায় অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। মেলা চলাকালীন নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ বাহিনী, নিশ্চিত করেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, শত বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছিল ছোট পরিসরে পূজা আয়োজনের মাধ্যমে। পরে তা বৃহৎ মেলায় রূপ নেয়।

এখনও অনেকেই শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতে এই মেলায় আসেন, স্মৃতিচারণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেলায় পরিবেশিত হচ্ছে গ্রামবাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।

চুনারুঘাটের এই বৈশাখী মেলা শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি এ অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক জীবনের প্রতিচ্ছবি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ