নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
Published: 25th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “রমজান মাসজুড়ে সরবরাহ চেইনের প্রতিবন্ধকতা কঠোরভাবে প্রতিহত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।”
তিনি বলেন, “দেশের সব জায়গা থেকে খবর এসেছে যে, এই রমজানে দ্রব্যমূল্য আগের তুলনায় কমেছে, জনগণ স্বস্তি পেয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণে এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।”
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
সন্দ্বীপবাসীর অবর্ণনীয় ‘দুর্ভোগের কলঙ্ক’ মোচন হলো: প্রধান উপদেষ্টা
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোর ব্যবস্থা নিয়েছে। রমজান ও ঈদে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল জিনিসপত্রের দামের লাগাম টেনে ধরা, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ রমজানে যাতে কোনও পণ্যের দাম বেড়ে না যায় এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ যেন বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিল, আপনারা সেটার ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তারা পালিয়ে যাবার সময় এক লণ্ডভণ্ড অর্থনীতি রেখে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেবার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অপরাপর সূচকগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করছে। এ সরকারের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯.
তিনি বলেন, “দেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিতে স্বস্তি এনে দিয়েছে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্স ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড গড়েছে, প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আড়াই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা আমাদের দেশের অর্থনীতি গড়ার বীর সৈনিক। তাদের জন্য প্রক্রিয়াগত যেসব বিষয় রয়েছে-সেগুলো সহজ করে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। তারা যেন ভোগান্তির শিকার না হন, দূতাবাস যেন ঠিকমতো কাজ করে, এটি নিশ্চিত করার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আগামী নির্বাচনে যেন তাদের ভোটাধিকার দিতে পারি-সেজন্য কাজ করছি।”
তিনি বলেন, “পলাতক সরকারের আমলে চর দখলের মতো দেশের ব্যাংকগুলো দখল করে নেওয়া হয়েছিল। আমানতকারীর টাকাকে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত টাকায় রূপান্তরিত করে ফেলেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কাজ ছিল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনা, আমানতকারীর স্বার্থ রক্ষা করে নিয়ম শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, হিসাবপত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা স্থাপন করা। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেছে। এর ফলে অর্থনীতিতে শৃঙ্খলা ফিরেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জনগুলোর মধ্যে এটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
গত সরকারের লুটপাটের মহোৎসবে গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটা আমরা জানি। কত রকমভাবে পাচার হয়েছে তাও জানার বিষয়। অভিনব একেকটা পদ্ধতি ছিল। পাচারের একটা পদ্ধতি সবাইকে হতভম্ব করে দিয়েছে। এই পাচার হয়েছে-বিদেশে অধ্যয়নরত সন্তানের কাছে টাকা পাঠানোর নামে। তিনি সন্তানের লেখাপড়ার জন্য এক সেমিস্টারের অর্থাৎ তিন মাসের খরচ বাবদ অফিসিয়াল ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠিয়েছেন তিন কোটি ৩৩ লাখ ডলার অর্থাৎ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। পাচারের এর চাইতে বেশি তাক লাগানো পন্থা আর কী আছে, তার কোনও সীমা আছে বলে আমার মনে হয় না। আইন, নিয়ম, নীতির জায়গায় যখন হরিলুট প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এমন সবকিছুই সম্ভব। এই অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।”
ঢাকা/হাসান/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র সরক র র ব যবস থ র জন য রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের অন্তত ৩৬ বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন শুধুই নারী ও শিশুরা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের অন্তত ৩৬টি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন শুধুই নারী ও শিশুরা। এ তথ্য জানিয়ে জাতিসংঘ হুঁশিয়ার করে বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ‘ফিলিস্তিনিদের একক গোষ্ঠী হিসেবে অব্যাহত অস্তিত্বকে’ হুমকির মুখে ফেলেছে।
১৮ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত গাজা উপত্যকার বিভিন্ন আবাসিক ভবন ও বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয় নেওয়া তাঁবুতে ইসরায়েলের ২২৪টি বিমান হামলা চালানোর ঘটনা নথিভুক্ত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিএইচআর) এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি গতকাল শুক্রবার বলেছেন, ১৮ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত গাজা উপত্যকার বিভিন্ন আবাসিক ভবন ও বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয় নেওয়া তাঁবুতে ইসরায়েলের ২২৪টি বিমান হামলা চালানোর ঘটনা নথিভুক্ত করেছে তাঁর দপ্তর।
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘এর মধ্যে ৩৬টি হামলার ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বিষয়ে সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে, তারা সবাই নারী ও শিশু।’
মার্চে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রথম দফার যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১ হাজার ৫০০–এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এক মাসের বেশি হয়ে গেল, গাজায় কোনো ত্রাণও যায়নি। সেখানে নেই কোনো খাবার, নেই জ্বালানি, নেই ওষুধ। নেই কোনো বাণিজ্যিক পণ্যের সরবরাহ। —আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘের মহাসচিবযুদ্ধবিরতি শেষে ইসরায়েল উপত্যকাটিতে আবারও পুরোদমে অবরোধ আরোপ করেছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করে বলেছে, এ অবরোধের ফলে সেখানে খাবার, পানি, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং সেগুলো দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
আরও পড়ুনগাজায় সাংবাদিকদের তাঁবুতে হামলা ০৮ এপ্রিল ২০২৫গাজায় নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল