‘আওয়ামী লিগ’ নামে একটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছেন উজ্জল রায় নামের এক ব্যক্তি। দলের প্রতীক চাওয়া হয়েছে নৌকা অথবা ইলিশ। দলের প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ’।

গতকাল সোমবার দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার উজ্জল রায় নামের ওই ব্যক্তি ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন। আবেদনে ওই ব্যক্তি দলের সভাপতি হিসেবে সই করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, দলের কোনো ব্যাংক হিসাব নেই।

নিবন্ধন চেয়ে ইসি সচিবের কাছে করা আবেদনে উজ্জল রায় উল্লেখ করেন, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয়েছে ২৪ মার্চ, এই কমিটির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২০ এপ্রিল।

আবেদনে দেওয়া মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উজ্জল রায় নামের ওই ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দিনাজপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য এই আবেদন করেছেন।

তাঁর দলে কত নেতা-কর্মী বা কার্যালয় আছে জানতে চাইলে উজ্জল রায় জানান, তিনি একা। তাঁর সঙ্গে আর কেউ নেই।

নির্বাচন কমিশন নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দিতে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আগামী ২০ এপ্রিল আবেদন করার শেষ সময়।

উজ্জল রায়ে নামে একজনের আবেদন পাওযার কথা জানিয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য যে আইন ও বিধি আছে, সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করা হলে ইসি নিবন্ধন দিয়ে থাকে। শর্ত পূরণ করতে না পারলে ইসি তা গ্রহণ করতে পারবে না।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার অস্বীকার ঠেকাতে আগে বিচার দরকার

ব্যক্তির স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার বোধও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের দাবি দানা বাঁধতে বাঁধতে প্রতিশোধপরায়ণ রাজনীতিতে পর্যবসিত হয়েছিল। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান অস্বীকারের প্রবণতা একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং গণহত্যা দিবস স্মরণে বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সেমিনারে উঠে এসেছে এ কথাগুলো। গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ সেমিনারে ‘গণহত্যা, অস্বীকারের প্রবণতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ।

সহুল আহমদ তাঁর প্রবন্ধে বলেন, গণহত্যাকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদাহরণ পৃথিবীতে কমই আছে। গণহত্যা বা এ ধরনের অপরাধের ঘটনার সত্যতার অস্বীকার ঠেকাতে সবার আগে দরকার বিচার।

এই প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম ও লেখক সারোয়ার তুষার। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গণমানুষের অধিকার ও ন্যায্যতার হিস্যা বুঝে নেওয়ার লড়াই। তাঁরা মনে করেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পক্ষপাতের পঙ্ক থেকে মুক্ত করতে হবে। ১৯৭১ থেকে ২০২৪—গণহত্যার পক্ষগুলো সব সময় জাতিগত অগ্রযাত্রাকে রুদ্ধ করে দিয়েছে, মানুষের মনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করেছে।

স্বাগত ভাষণে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ১৯৭১–এর পূর্বকালে এ অঞ্চলের মানুষ সুদীর্ঘকাল রাজনৈতিক আলোচনা, মীমাংসা ইত্যাদি চালিয়েছে। তবে একাত্তরের ২৫ মার্চ সবকিছু ছাপিয়ে সর্বাত্মক স্বাধীনতা অর্জনের প্রশ্নই বড় হয়ে উঠেছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপ্নে সুদীর্ঘকাল লড়াই–সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে, স্বপ্নভঙ্গের শিকারও হয়েছে। যে বিপুল জনগোষ্ঠী একাত্তরে গণহত্যার শিকার হয়েছে, তাদের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বদেশে আমরা স্বাধীনতাকে অর্থবহ এবং মানুষের জন্য কল্যাণকর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি কি না, সেটাই আজকের দিনের বড় প্রশ্ন।’

অনুষ্ঠান শেষে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ