বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন (নির্বাচনী প্রচারাভিযান) করতে যায়, তারা কী করবে, সেটা আমরা ভালো বুঝি।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সোমবার ঢাকা থেকে উড়োজাহাজে সৈয়দপুর যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। সৈয়দপুর থেকে তিনি সড়কপথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ যান। দেবীগঞ্জ থেকে শতাধিক গাড়ির বহর নিয়ে তিনি জেলার বোদা, পঞ্চগড় সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী উপজেলা সফর করেন। সারজিস আলমের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলায়। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব পাওয়ার পর বাড়ি ফেরার পথে সারজিস আলমের এই ‘শোডাউন’ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ নিয়ে আজ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলও কথা বললেন।

আরো পড়ুন:

দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

দেশের চলমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নির্বাচন: ফখরুল

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে। অতীতে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে। জনগণ যাতে বিএনপিকে ভালো বলে—এমন কাজ করতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে এমন সংকট তৈরি হয়েছে যে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত আজকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে, যেটা তাঁরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা আমাদের দেশকে রক্ষা করে, যারা সংকটে পাশে এসে দাঁড়ায়, তাদের কখনোই আমরা বিতর্কিত হতে দিতে পারি না।’

সংস্কার কোনো নতুন জিনিস নয় বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের অনেকগুলো বিশাল পাহাড় নিয়ে এসেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। কারণ, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে যেতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া আর কোনো পদ্ধতি আছে, যাতে জনগণের কল্যাণ হতে পারে? আজকে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, যাতে এই প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়, বিলম্বিত হয়, অন্য কাউকে সাহায্য করা যায়, দেশে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়—সেই কাজগুলো শুরু হয়েছে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে জনগণ সরকার পরিবর্তন করতে পারে। আর ভোট দেওয়ার সুযোগ না পেলে বিতাড়িত করে সরকার পরিবর্তন করে জনগণ। এরশাদ গণতন্ত্র হত্যা করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিলেন। ছাত্র-জনতা তাকে বিদায় করেছিল। একইভাবে শেখ হাসিনাকেও বিদায় করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, নানাভাবে অসিলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সংস্কারের কথা বলে অসিলা সৃষ্টি করে জাতীয় নির্বাচনকে পেছানোর চেষ্টা চলছে। এর পেছনে উদ্দেশ্য আছে বলে মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সব বুঝি, কিন্তু বলতে চাই না।’

অতি দ্রুত নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে মানুষ নির্বাচনমুখী হবে। তখন যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র আর টিকতে পারবে না।

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও আহমদ আজম খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য মামুন আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ষড়যন ত র ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভূরাজনীতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসন করতে চায়: মাহমুদুর রহমান

এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বলেছিলাম, সম্ভবত প্রথম আলোতে লিখেছিও। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যখন বলেন ‘ইনক্লুসিভ পলিটিকস’–এর অর্থ কী। আমি যেটা বুঝি, দেশকে স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রে নিতে হবে। গণতান্ত্রিক পথ মানে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নয়। অধ্যাপক ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে বিপ্লবী নন, আপাদমস্তক একজন গণতান্ত্রিক মানুষ। সে জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে রেখেছেন সাংবিধানিক প্রতীক হিসেবে। তাঁর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স এনে তিনি সরকার গঠন করেছেন। তিনি গণতান্ত্রিক পথটা অনুসরণ করতে চান। সে জন্য তিনি (মুহাম্মদ ইউনূস) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বা কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের নেই। এই প্রক্রিয়ায় তিনি যদি জিততে পারেন, সেটা বড় ব্যাপার। সেটা তিনি করছেন। কিন্তু পথটা বড় জটিল ও বন্ধুর।

আওয়ামী লীগ আসলে গণতান্ত্রিক দল নয়। তারা নিজেদের রাজনীতির স্বার্থ উদ্ধারের জন্য উগ্র বলপ্রয়োগ ও বিশৃঙ্খলার দিকে যেতে পারে, গত ১৫ আগস্ট এটা বোঝা গেছে। সরকার তাদের (আওয়ামী লীগ) সভা-সমিতি করার অনুমতি দেওয়ার কথা ভেবেছিল, কিন্তু পারেনি। এখনো এই সমস্যাটা আছে আমাদের। আওয়ামী লীগকে এই সুযোগ দিলে তারা দেশে বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করবে। কিন্তু আমার ধারণা বলে, ভূরাজনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসিত করতে চায়। সরকার সেই চাপের সামনে নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে সেনানিবাসের বৈঠকে তারই প্রতিফলন দেখা যায়। উদ্বেগের বিষয় হলো, সেনানায়কদের পক্ষ থেকে ছাত্রনেতাদের বলা হয়েছে, তোমরা তাদের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে নির্বাচনে সমঝোতা করো। তার মানে এই, এত দিন ধরে আমরা যে সংস্কারের মাধ্যমে একটি উন্নত নির্বাচনব্যবস্থায় যেতে চাচ্ছি, সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি এ জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। 

আমি মনে করি, অবিলম্বে সরকার এবং আইএসপিআরের (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়া উচিত। হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র বিনির্মাণের যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, তা দেশি-বিদেশি কিছু স্বার্থান্বেষীর যূপকাষ্ঠের বলি হতে পারে না।

মাহমুদুর রহমান মান্না: সভাপতি, নাগরিক ঐক্য

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আ’লীগকে গণতান্ত্রিক সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবতে পারি না
  • গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান
  • যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন করতে যায়, তারা কী করবে, সেটা আমরা ভালো বুঝি: মির্জা ফখরুল
  • নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না: আমিনুল হক
  • সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করানোর চেষ্টা হচ্ছে: তারেক রহমান
  • মিয়ানমারকে নিয়ে ট্রাম্প এখন কী করবেন
  • ছাত্রনেতাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে: নুরুল হক
  • সেনাবাহিনী পক্ষে ছিল বলেই হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছে: রিজভী
  • ভূরাজনীতি আওয়ামী লীগকে প্রত্যাবাসন করতে চায়: মাহমুদুর রহমান