ঈদ মানেই যেন একসাথে কাটানো আনন্দের সময়; পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন পর একত্রিত হওয়া, বন্ধুদের সাথে পছন্দের জায়গায় ঘুরে বেড়ানো, প্রিয় মানুষদের সাথে সময় কাটিয়ে আনন্দের মুহূর্তগুলোকে আরও স্মরণীয় করে তোলা! ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই তাই নতুন জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ সময় বিদেশে থাকা আমাদের অনেক প্রবাসী দেশে থাকা তাদের প্রিয়জনের সাথে সবসময় কানেক্টেড থাকতে চান। ফলে, প্রবাসী ও তাদের পরিবারের জন্য ডিজিটাল কানেকশন থাকাটা এই আনন্দের সময়ে অত্যন্ত জরুরি হয়ে দেখা দেয়। 

রমজান ও ঈদুল ফিতরের এই বিশেষ সময়ে ব্যবহারকারীরা যেন সবসময় তাদের প্রিয়জনের সাথে কানেক্টেড থাকতে পারেন তার সব আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল অপারেটর বাংলালিংক। এবারের ঈদকে আরও স্মরণীয় করে তুলতে এক্সক্লুসিভ ভয়েস ও ইন্টারনেট বান্ডেল নিয়ে এসেছে অপারেটরটি। ব্যবহারকারীর আনন্দ বহুগুণ করতে এসব প্যাক আরও বেশি সাশ্রয়ী ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক করা হয়েছে। ব্যবহারকারীরা এখন মাত্র ১৯৮ টাকায় ৭ দিন মেয়াদী ১০ জিবি ইন্টারনেট ও ১০০ মিনিট টকটাইম কিনতে পারবেন। পাশাপাশি, ২০ দিন মেয়াদী ১২ জিবি ইন্টারনেট ও ২০০ মিনিট টকটাইম পাবেন মাত্র ৩৯৮ টাকায় এবং ২০ দিন মেয়াদী ২০ জিবি ইন্টারনেট ও ৩০০ মিনিট টকটাইম পাবেন মাত্র ৪৯৮ টাকায়। এখন প্রিয়জনের সাথে সবসময় কানেক্টেড থাকা হোক বা বন্ধুদের সাথে অনলাইনে সময় কাটানো হোক, সবকিছুই হবে সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন। 

ঈদের আনন্দকে বৃদ্ধি করতে আরও তিনটি বিশেষ অফার নিয়ে এসেছে বাংলালিংক। সাশ্রয়ী কানেকশন নিশ্চিত করতে ১৮৮ টাকায় ৭ জিবির ১০ দিন-মেয়াদী ইন্টারনেট প্যাক নিয়ে আসা হয়েছে। সারাবছর জুড়ে কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদী বান্ডেল নিয়ে আসা হয়েছে। এর আওতায় এবার, মাত্র ১,৮৯৯ টাকায় ১৫০ জিবি ইন্টারনেট অথবা, মাত্র ১,৯৯৯ টাকায় ৫০ জিবি ইন্টারনেট ও ১,০০০ মিনিট কলটাইম উপভোগ করার সুযোগ পাবেন ব্যবহারকারী। এই দুইটি বান্ডেলের মেয়াদই ১ বছর। এছাড়া, মাত্র ৭১৯ টাকায় ৬০ জিবি (৩০ জিবি প্রতি মাসে) ও ১,১৯৯ টাকায় ১০০ জিবি (৫০ জিবি প্রতি মাসে) ইন্টারনেট দুইটি দুই মাসমেয়াদী ‘অ্যাডভান্সড প্ল্যান’ রয়েছে। পছন্দের মানুষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে, সবসময় তাদের কাছাকাছি থাকতে প্রতি মাসে সমানভাবে এই ডেটা প্রদান করা হবে। 

যাদের দীর্ঘ কথোপকথন পছন্দ, তাদের জন্য সেহরি নাইট রেট কাটার ও রমজানে সর্বনিম্ন কলরেট নিয়ে আসার মাধ্যমে কথা বলাকে আরও সহজ করে তুলেছে বাংলালিংক। মাত্র ৯৪ টাকা রিচার্জে ব্যবহারকারীরা ৫ দিনের জন্য ১ পয়সা/সেকেন্ড কলরেট উপভোগ করতে পারবেন। আর ১৫৯ টাকা রিচার্জে এ সুবিধা ৩০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হবে। এছাড়া, রমজান স্পেশাল ফ্রি রেট কাটার অফার নিয়ে এসেছে বাংলালিংক; যার মাধ্যমে গ্রাহকরা ৩ দিন মেয়াদে রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ১ পয়সা/সেকেন্ডে কথা বলতে পারবেন। প্রিয়জনের সাথে ঈদের পরিকল্পনা ও কথোপকথনকে আরও আনন্দময় ও নিরবচ্ছিন্ন করতে এ অফার নিয়ে আসা হয়েছে। আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য গ্রাহকরা ১৭ টাকায় ২০ মিনিটের স্পেশাল ভয়েস প্যাক নিতে পারবেন, যা ২ দিন মেয়াদে রাত সাড়ে ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কার্যকর হবে।

ঈদ মানে কেবল কথা বলাই নয়; এর সাথে জড়িয়ে আছে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া, প্রতিটি বিশেষ মুহূর্ত উপভোগ ও উদযাপন করা। পরিবারিক রিইউনিয়নের ছবি পোস্ট করা, ঈদের পোশাকের সেলফি শেয়ার করতে  বাংলালিংকের আনলিমিটেড সোশ্যাল প্যাক যথার্থ সমাধান হতে পারে। গ্রাহকরা মাত্র ৩০ টাকায় ১ দিন বা ৫০ টাকায় ৩ দিন সারাদিন জুড়ে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারবেন। যারা নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ চান তাদের জন্য ৩০ টাকায় ১ দিন বা ৫০ টাকায় ৩ দিনের ইমো, টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে আনলিমিটেড কলিং অফার নিয়ে এসেছে বাংলালিংক। পাশাপাশি, বিনোদনপ্রেমীদের দীর্ঘদিন পর স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে সময় কাটাতে ও  ঈদকে আরও প্রাণবন্ত ও আনন্দময় করতে ৩ দিনের জন্য ৫০ টাকায় বা ১ দিনের জন্য ৪০ টাকায় ইউটিউব ও টিকটকে আনলিমিটেড ভিডিও স্ট্রিমিং উপভোগ করার সুযোগও নিয়ে আসা হয়েছে। 

যোগাযোগ, কথা বলা বা আনন্দ উদযাপন - যাই হোক না কেন, বাংলালিংক তাদের ব্যবহারকারীদের নিশ্চিন্ত রাখার সবরকম আয়োজনই করেছে; কাছাকাছি না থাকলেও যেন কল বা মেসেজের মাধ্যমে পছন্দের মানুষের পাশে সবসময় থাকা যায়। এই ঈদে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের মাঝে সেতুবন্ধন হয়ে উঠেছে বাংলালিংক; প্রতিটি মুহূর্তকে সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটির মাধ্যমে উপভোগ্য করে তুলেছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প র য়জন র স থ ন রবচ ছ ন ন অফ র ন য় ব যবহ র র জন য প রব ন পর ব র আনন দ উপভ গ সময় ক পছন দ

এছাড়াও পড়ুন:

বিথী-মেহেদীর জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল নববর্ষের সকাল

মায়ের কাছে এ পৃথিবীর সবচেয়ে দামী উপহার তার নাড়ী ছেড়া ধন, সন্তান। সেই সন্তানের জন্ম যদি হয় বিশেষ কোনো দিনে, সেটি যোগ করে বাড়তি আনন্দ। পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রহরে বিথী-মেহেদী দম্পত্তির কোল আলো করে ফুটফুটে পুত্র সন্তানের আগমন বাঁধ ভাঙা আনন্দে ভাসিয়েছে তাদের।

বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার রাড়িপাড়া ইউনিয়নের দোবারিয়া এলাকার ফারহানা আক্তার বিথি ও মেহেদী সরদার দম্পত্তির জীবনে সোমবার সকালটা স্মরণীয় হয়ে রইল।

এর আগে রোববার সন্ধ্যার দিকে ব্যথা উঠলে বিথিকে প্রায় ১৫ কিলমিটার পথ ইজিবাইকে করে এনে বাগেরহাট শহরের সূর্যের হাসি ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কচুয়া উপজেলার সাইনবোর্ড এলাকার বিথি ও দোবারিয়া গ্রামের মেহেদী। বিথি গৃহিণী, মেহেদী করেন মাছের ব্যবসা।

নবজাতকের খালা ফারজানা আক্তার সাথী বলেন, ‘আমরা দুই বোন, কোনো ভাই নেই। আমাদের বাবা সবসময় নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন যেন আমাদের ঘরে আল্লাহ প্রথম ছেলে সন্তান দেন। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেছেন। আমারও প্রথম ছেলে সন্তান, আমার বোনেরও ছেলে সন্তান হয়েছে। হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থেকে বের হওয়ার পর নার্সের কোল থেকে বাচ্চাকে প্রথম আমার কোলেই দিয়েছিল। আমি ওর জন্য আগে থেকে কয়েক সেট ড্রেস কিনে রেখেছিলাম। সেখান থেকে একটি পরিয়েছি।’

শিশুটির নানি হালিমা বেগম বলেন, ‘বাংলা নববর্ষের দিনে আমার ছোট মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে, এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে। আমি খুশিতে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। হাসপাতালে সকলে খুবই আন্তরিক। বেলা ১১টায় হাসপাতালের ম্যানেজার এসে শিশুর মা ও আমাদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। সবাই সুস্থ আছে। ডাক্তার বলেছে কোন ধরনের ঝুঁকি নেই মা ও শিশুর। আর আমাদের বেশি চিন্তাও নেই, কারণ জামাই বাবাজি মেয়ের সুস্থতা নিয়ে বেশ সচেতন। আশা করি অনাগত দিনগুলো নতুন অতিথির সাথে সবার হাসি-আনন্দে কাটবে।’

নবজাতকের গর্ভধারিনী বিথি বলেন, ‘মা হওয়া যে কত আনন্দের তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। সন্তানকে যে কোনো পরিস্থিতিতে মা কেন বুকে আগলে রাখেন তা এখন বুঝতে পারছি।’

অপারেশন টেবিলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত খুব বেশি লেবার পেইন ছিল না বলে জানান বিথি। তিনি আরো বলেন, এতদিন স্থানীয়ভাবে রাড়িপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলেছেন। সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ১৫ এপ্রিল, অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার। কিন্তু শরীরে কিছুটা পানিশূন্যতা থাকায় একদিন আগে সিজার করা হয়।

বৈশাখের প্রথম দিনে সন্তান জন্ম নিবে বলে আশা করেছিলেন কিনা–এমন প্রশ্নে বিথি বলেন, ‘আল্ট্রাসোনাগ্রাম রিপোর্টে উল্লেখ ছিল বৈশাখের দ্বিতীয় দিনের কথা, তবে একদম নববর্ষের দিনে হবে তা আশা করিনি। নববর্ষের দিনে প্রথম সন্তান হওয়ায় দিনটি আরো স্মরণীয় হয়ে রইল’– যোগ করেন তিনি।

নববর্ষে এমন এক উপহার পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিথি। তাঁর স্বপ্ন লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে একজন আদর্শবান ডাক্তার হবে সন্তান। যাতে সমাজ ও দেশের সেবা করতে পারে সে। বিশেষ করে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও অসহায় মানুষদের পাশে তাঁর সন্তান দাঁড়াবে বলে প্রত্যাশা এই মায়ের।

সূর্যের হাসি ক্লিনিকের মেডিকেল অফিসার রিফাত আরা শীলা বলেন, রোববার রাত ১১টার দিকে বিথিকে তাদের ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে সোমবার সকাল ৭টা ১০ মিনিটে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। তিনি বলেন, ‘নববর্ষের এই শুভদিনে নতুন প্রাণের আগমন আমাদেরও আপ্লুত করেছে। মা ও শিশু দুজনই সুস্থ আছেন। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের যত্ন নিচ্ছি। বাচ্চার ওজন ২ কেজি ৮০০ গ্রাম। এখনও পর্যন্ত মায়ের দুধ যথেষ্ট। যেহেতু স্বাস্থ্য ভালো আছে এবং উভয়েই সুস্থ আছে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা জরুরি।’ পরিবারটিও সে বিষয়ে সচেতন রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

শিশুর বাবা মেহেদী সরদার বলেন, ‘প্রথম বার বাবা হওয়ায় অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। তাও আবার ঐতিহ্যবাহী দিনে। তবে রোববার রাতে একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। প্রথম সন্তান তো, স্ত্রীর কিছুটা ব্যথা হচ্ছিল। বিশেষ করে ক্লিনিকে নিয়ে আসার পথটুকু ১৫ কিলোমিটার হলেও মনে হচ্ছিল হাজার মাইল। রাতে ঘুমাতে পারিনি। বাবা হওয়া একটি স্বপ্নের মত জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এখন মনে হচ্ছে মা-বাবার সঙ্গে অনেক ভুল করেছি। বিভিন্ন সময় বুঝে-না বুঝে তাদের কষ্ট দিয়েছি। যখন নিজের সন্তানের মুখ দেখলাম, তখন মনে হলো বাবা-মায়ের প্রতি আরো যত্নবান হওয়া উচিত ছিল।’ মেহেদী জানান, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই রক্ত দিতে আসা তাহিদুল ইসলাম নবজাতককে আজান শুনিয়েছেন। শিশুটির কোনো নাম এখনো ঠিক করা হয়নি বা আত্মীয়-স্বজন কেউ প্রস্তাব করেনি বলে জানান তিনি। বাড়ি ফিরে আকিকা করে নাম রাখা হবে। আপাতত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়েছে। আর সকলের কাছে শিশু ও শিশুর মা যেন সবসময় সুস্থ থাকে সেই দোয়া কামনা করেছেন তিনি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিথী-মেহেদীর জীবনে স্মরণীয় হয়ে রইল নববর্ষের সকাল