আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাংলাদেশের আকাশে বেশ কিছু চমক দেখা যাবে। তাই খালি চোখে বা ছোট টেলিস্কোপ ও বাইনোকুলারের সাহায্যে সহজেই বিভিন্ন গ্রহাণু, গ্রহ ও অন্য মহাজাগতিক বস্তু পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন আগ্রহী ব্যক্তিরা।

সন্ধ্যার প্রথম ভাগেই আকাশে গ্রহাণু আইরিস দেখা যাবে। সূর্যাস্তের প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর সন্ধ্যা ৭টা ৫১ মিনিটে মীন তারকামণ্ডলে ছোট টেলিস্কোপে দৃশ্যমান হবে এই গ্রহাণু।

গ্রহাণু আইরিন মধ্যরাত থেকে রাত ১টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত মিথুন তারকামণ্ডলে দেখা যাবে। গ্রহাণু আইরিন ১৮৫১ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী জন রাসেল হিন্দ আবিষ্কার করেন। এটি একটি এস-শ্রেণির গ্রহাণু, যার গঠন মূলত সিলিকেট ও ধাতব পদার্থের মিশ্রণে তৈরি। এর ব্যাস প্রায় ১৫২ কিলোমিটার। এই গ্রহাণু সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে প্রায় ৪ বছর ৩ মাস সময় নেয়। এই গ্রহাণু সূর্যালোক প্রতিফলিত করে উজ্জ্বলভাবে জ্বলজ্বল করে বলে সহজেই পর্যবেক্ষণ করা যাবে।

গ্রহাণু ম্যাসালিয়া রাত ৮টা ৫৪ মিনিটে মেষ তারকামণ্ডলে দেখা যাবে। এ ছাড়া ইউরেনাস গ্রহ যেকোনো বাইনোকুলারের সাহায্যে দেখা যাবে রাত ৯টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত। বৃহস্পতি গ্রহ খালি চোখে রাত ১১ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত এবং গ্রহাণু ইজেরিয়া রাত ১১টা ৫৯ পর্যন্ত ছোট টেলিস্কোপের সাহায্যে দেখা যাবে। গ্রহাণু ইউনোমিয়া রাত ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত বৃষ তারকামণ্ডলে দেখা যাবে।

মধ্যরাতে মঙ্গল গ্রহ খালি চোখে রাত ২টা ৪ মিনিট পর্যন্ত মিথুন তারকামণ্ডলে দেখা যাবে। গ্রহাণু অ্যাম্ফিট্রাইট রাত ৩টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ছোট টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা যাবে কর্কট তারকামণ্ডলে। গ্রহাণু ফ্লোরা ভোর ৫টা ৩৯ মিনিট পর্যন্ত সিংহ তারকামণ্ডলে দৃশ্যমান হবে। গ্রহাণু মেলপোমেন ভোর ৬টা ৪ মিনিট পর্যন্ত কন্যা তারকামণ্ডলে দেখা যাবে।

ভোরেও আকাশে বেশ কিছু গ্রহাণুর দেখা মিলবে। গ্রহাণু ডেম্বোস্কা রাত ১০টা ৮ মিনিট থেকে সকাল ৮টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত তুলা তারকামণ্ডলে এবং গ্রহাণু ভেস্তা সকাল পর্যন্ত তুলা তারকামণ্ডলে বাইনোকুলার বা ছোট টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখা যাবে।

সূত্র: দ্য স্কাই লাইভ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে আগুন জ্বালালেন রাফিনিয়া

মারাকানায় মারামারির সেই স্মৃতি এখনো দগদগে। আহত হয়েছিলেন অনেকেই। জরিমানাও হয়েছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার। ব্রাজিলের পুলিশ নির্দয়ভাবে লাঠিপেটা করেছিল আর্জেন্টিনার সমর্থকদের ওপর। ঝড়েছিল রক্তও।

আধা ঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া সেই ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়েরা গ্যালারির সামনে দাঁড়িয়ে মারামারির বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন সমর্থকদের। থামতে থামতে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছিল। গ্যালারির রেলিং ধরে নিরীহ সমর্থকদের অনিশ্চিত চাহনির অদৃশ্য কালিতে একটা বিষয় পরিষ্কার ফুটে উঠেছিল।

ফুটবলের যে লড়াই জিভে জল আনার, যে লড়াইয়ে নাকি শুধু রোমাঞ্চই থাকে, খুব আশা নিয়ে সেটা তাঁরা দেখতে এসে এ কী দেখলেন! লাঠিপেটা, চেয়ার ছুড়ে মারা, চিৎকার ও রক্তপাত!

আরও পড়ুনগোল করে আর্জেন্টিনাকে হারানোর ঘোষণা রাফিনিয়ার১৬ ঘণ্টা আগে

ফিফা সেই ঘটনার তদন্তে নেমেছিল। আর যেন এমন কিছু না ঘটে, সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিজ্ঞাও করেছিল ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ও আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)।

কিন্তু লড়াই যখন ব্রাজিল–আর্জেন্টিনার এবং তা–ও ফুটবলের ময়দানে, তখন হাজারো শান্তির কথা বলার পরও একটু ঝুঁকি থাকেই। হাজারো ব্যবস্থা নেওয়ার পরও নিরাপত্তা আসলে নিশ্চিত নয়। কারণ, অনুভূতিটাই আগুনে—আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিল! যে দলের মাঠে খেলা, সেই দলের সমর্থকেরা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য একটু আয়োজন তো রাখবেনই!

বুয়েনস এইরেসের মনুমেন্তালেও আজ নিশ্চয় এমন কিছু এন্তেজাম করা আছে। অন্তত আর্জেন্টাইন সমর্থকদের সেই প্রস্তুতি অবশ্যই নেওয়া আছেই। কারণ, মারাকানার সর্বশেষ স্মৃতি—ব্রাজিলিয়ান পুলিশের লাঠিপেটা, ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের চেয়ার ছুড়ে মারা। হিসাব–কিতাব তো সমান হয়নি।

আর্জেন্টিনার নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ম্যাচে ১০০০ পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন থাকবেন। পাশাপাশি ট্রাফিক এজেন্ট, সরকারি এজেন্সির কর্মকর্তা ও ক্যাডেট পুলিশ কর্মকর্তারাও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। ৮০ হাজার আসনের এ স্টেডিয়ামে সমর্থকেরা তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পার হয়ে তারপর যেতে পারবেন গ্যালারিতে।

ব্রাজিলের সমর্থকেরা ঢুকবেন আলাদা গেট দিয়ে। অর্থাৎ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের গ্যালারিতে ঢোকার পথেই যেন মারামারি লেগে না যায়, সেই ভাবনা থেকে হয়তো এমন ব্যবস্থা। কিন্তু সমর্থকেরা মনের ভেতর তুষের আগুন নিয়ে ঢুকলে, সেটি ধরা পড়বে কোন তল্লাশিতে?

আরও পড়ুনআর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ কবে জিতেছিল ব্রাজিল ১৭ ঘণ্টা আগে

মারাকানায় মার খাওয়ার সেই তুষের আগুন তো এখনো ধিকিধিকি জ্বলছে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের বুকে। প্রয়োজন ছিল একটু উসকে দেওয়ার। রাফিনিয়া ঠিক সেই কাজই করেছেন। রোমারিওর সঙ্গে ‘রোমারিও টিভি’ পডকাস্টে বলেছেন, ‘আমরা ওদের গুঁড়িয়ে দেব। কোনো সন্দেহ নেই। একদম গুঁড়িয়ে দেব মাঠের ভেতরে, দরকার পড়লে মাঠের বাইরেও।’

চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন রাফিনিয়া। ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়েও আছেন—এমন গুঞ্জন–ফিসফাসও আছে। এ মাসে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আগের ম্যাচে গোলও করেছেন। সব মিলিয়ে এ মৌসুমে বার্সার হয়ে ৪২ ম্যাচে ২৭ গোলের পাশাপাশি ২০ গোল করিয়েছেন। ব্রাজিলের হয়ে ৫ ম্যাচে গোল ৪টি, করিয়েছেন ১টি। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ৪৭ ম্যাচে করেছেন ৩১ গোল, বানিয়েছেন ২১টি। অর্থাৎ এ মৌসুমে গোল করা ও গোল করানো মিলিয়ে ৪৭ ম্যাচে ৫২ গোলে অবদান রাফিনিয়ার।

কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোল পেয়েছেন রাফিনিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ