ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির নতুন ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দলটির পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় মিরসরাই উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে ঢাকামুখী লেনে ঝাড়ু হাতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা।

মিছিলটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে কিছু দূর গিয়ে মিরসরাই সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে ঢাকামুখী লেনে ২০ মিনিট যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণ দিকে অন্তত ২ কিলোমিটার রাস্তায় যানজট তৈরি হয়।

বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীরা সাবেক মিরসরাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিনের অনুসারী বলে জানা যায়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক শাহিনুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য মেজবাউল আলম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন, জোরারগঞ্জ থানা যুবদলের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব আজিজুল হক, ইছাখালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মঞ্জুরুল হক, করেরহাট ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব ইয়াছিন মিজান, হিঙ্গলী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মাসুক আলম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপির দুঃসময়ে আন্দোলন–সংগ্রামে যেসব নেতাকর্মী অগ্রগামী ছিলেন, তাঁদের বঞ্চিত করে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার সুবিধাবাদী, চাকরিজীবী ও আওয়ামী লীগের সহযোগীদের পদে রেখে মিরসরাই উপজেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছেন। তাঁরা এই কমিটি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। একই সঙ্গে অবিলম্বে প্রহসনের এই কমিটি বিলুপ্ত করে উপজেলার সব ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে নতুন কমিটির দাবি জানান।

১৮ মার্চ বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের পুনর্গঠন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মিরসরাই উপজেলা বিএনপি, বারিয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৪ মার্চ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মিরসরাই উপজেলা, বারিয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন এ কমিটিতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয় আবদুল আওয়াল চৌধুরী ও সদস্যসচিব মনোনীত হন আজিজুর রহমান চৌধুরী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, ‘দলের কোনো ইউনিটের নতুন কমিটি ঘোষণা করলে সেখানে কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হতে পারে, এটি স্বাভাবিক। আগের কমিটি দায়িত্ব পালনে কিছুটা ব্যর্থ হওয়ায় আমরা বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের পুনর্গঠন কমিটির পরামর্শে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছি। নতুন কমিটিতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের অতীতের অভিজ্ঞতা ও ত্যাগের বিষয় বিবেচনা করেই পদ দেওয়া হয়েছে। আর মিছিল–সমাবেশ করতে গিয়ে মহাসড়ক বন্ধ রাখা সমীচীন নয়। বিএনপির কোনো অংশ এমনটি করে থাকলে আমরা তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহাসড়কে বিএনপির মিছিল ও সমাবেশের বিষয়ে আমাদের কোনো অনুমতি নেয়নি কেউ। সমাবেশের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেন কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল। লোকবল কম থাকায় আমরা সেখানে বাধা সৃষ্টি করতে পারিনি। তবে খুব বেশি জনভোগান্তি না করেই তাঁরা দ্রুত সমাবেশ শেষ করেছেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন য ন ব এনপ র সদস যসচ ব ম রসর ই উপজ ল ব এনপ র ন র নত ন কম ট র ন কম ট

এছাড়াও পড়ুন:

শেরপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা, অভিযোগ শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে

বগুড়ার শেরপুরে আকবর আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধড়মোকাম উত্তরপাড়া গ্রামের চারমাথা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আকবর আলীর বাড়ি ধড়মোকাম দক্ষিণপাড়া গ্রামে। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ হত্যার সঙ্গে আবদুল লতিফ (২৮) নামের এক যুবক জড়িত। তাঁর বাড়ি ধড়মোকাম উত্তরপাড়া গ্রামে। তিনি শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সহসভাপতি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে আবদুল লতিফের সঙ্গে আকবর আলীকে একটি চায়ের দোকানে দেখা যায়। রাত ১১টার দিকে ধড়মোকাম সড়কের চারমাথায় দুজনকে ধস্তাধস্তি করতে দেখেন এলাকার কিছু লোক। তাঁরা এগিয়ে এলে লতিফ পালিয়ে যান। এ সময় আকবর আলী রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কের ওপরে পড়ে ছিলেন। খরব পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে শেরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক আকবর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো দা, চাদর ও মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির ছেলে মো. শাহজামাল (২৩) বলেন, লতিফের ফোন পেয়ে তাঁর বাবা গতকাল রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। একজন প্রতিবেশী তাঁর বাবার আহত হয়ে সড়কের পড়ে থাকার খরব দেন। সেখানে গিয়ে বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি কিছু একটা বলতে চেয়েছিলেন; কিন্তু বলতে পারেননি।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশের হেফজতে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আজ রোববার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে একটি দা, চাদর ও মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে। এই হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা: ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
  • বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কবিরাজকে কুপিয়ে হত্যা
  • বিড়াল হত্যাকারী ধরতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 
  • বগুড়ায় কবিরাজকে ‘কুপিয়ে’ হত্যা
  • শেরপুরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা, অভিযোগ শ্রমিক লীগ নেতার বিরুদ্ধে