ঈদযাত্রায় ট্রেনের ছাদে চড়া নিষেধ
Published: 25th, March 2025 GMT
ঈদযাত্রায় ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্টেশনে কোনো মই ও টুল থাকবে না। আশা করব, ২৭ তারিখ থেকে মই ও টুল আপনারা স্টেশনে দেখতে পাবেন না।’
আজ মঙ্গলবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
রেলসচিব বলেন, ‘ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করা যাবে না। এটা আজকে বিশেষভাবে আলোচনা হয়েছে। এর আগে আপনারা দেখেছেন, মই ও টুল ব্যবহার করে ছাদে উঠে যেতেন। এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, স্টেশনে কোনো মই ও টুল থাকবে না। আশা করব, ২৭ তারিখ থেকে মই ও টুল আপনারা স্টেশনে দেখতে পাবেন না।’
ফাহিমুল ইসলাম বলেন, এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ঈদ। তাই এবার যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রেলওয়ে কর্মচারীর পরিচয়ে ট্রেনের টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন ও পোস্টের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ে সচিব বলেন, কেউ কর্মচারীর পরিচয় দিলে সে যে কর্মচারী, তা তো নয়। এটি একটি প্রতারক চক্র। তারা টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে টাকা নিয়ে পরে উধাও হয়ে যায়। তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে মন্ত্রণালয়কে জানাতে অনুরোধ করেন সচিব। তিনি বলেন, তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিনা টিকিটে যাত্রী ঠেকাতে তিন স্তরের তল্লাশিব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে ফাহিমুল ইসলাম বলেন, কমলাপুর স্টেশন থেকে খিলগাঁওসহ বেশ কয়েকটি পকেট গেট বা আইসিবি রয়েছে। এগুলো দিয়ে অনেক সময় বিনা টিকিটে যাত্রীরা উঠে পড়ে। সেসব জায়গায় কেউ যাতে বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠতে না পারে, তা দেখতে রেলের সদস্যদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রেলসচিব আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে কমলাপুর স্টেশন, বিমানবন্দর স্টেশন, রাজশাহী স্টেশন ও চট্টগ্রাম স্টেশনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। এমনকি রেলযাত্রার বিষয়টি দেখভাল করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবকে রেল পূর্বাঞ্চলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে এক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি (অপারেশন) মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, স্বস্তিতে যাত্রীরা বাড়ি ফিরছেন। কোনো ধরনের সমস্যা চোখে পড়েনি। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকজন কালোবাজারিকে ধরা হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশের কর্মকর্তা বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পোশাক গার্মেন্টসগুলো ছুটি হলে ভিড় বাড়বে। সে জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনে আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা আছে, আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।’ রেল পুলিশের পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, আনসারসহ অনেকে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হুমকি না থাকলেও বর্ষবরণে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
উৎসবমুখর পরিবেশে সারা দেশে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষ। এ উৎসবকে ঘিরে কোনো ধরনের হুমকি না থাকলেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ পুরো ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকার প্রধান সড়ক থেকে অলি গলিতেও গোয়েন্দা নজরদারি করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও নববর্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে সারা দেশে র্যাবের সব সদস্য নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় কাজ করছেন।
সকালে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হচ্ছে।”
তিনি জানান, র্যাব সারা দেশে ২২৪টি পিকআপ টহল, ১২২টি মোটরসাইকেল টহলসহ সর্বমোট ৩৪৬টি টহল ও সাদা পোশাকে ৪১৩ জন সহ সর্বমোট ২৪৪৯ জন র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কোন উগ্রবাদী গোষ্ঠী, অন্যান্য নিষিদ্ধ সংগঠন এবং রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কুচক্রী মহল যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, “বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবুও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে নাশকতাকারীদের যেকোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।”
ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের গুজব, উস্কানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম নজরদারি অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা/এমআর/ইভা