১৫৪০ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রীসহ এস আলমের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 25th, March 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ মঙ্গলবার এই মামলা করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো.
দুদক সূত্র জানায়, প্রথম মামলায় সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে ৭৯৬ কোটি ২৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আর দ্বিতীয় মামলায় তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে ৭৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাইফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, সাইপ্রাস, ব্রিটিশ ভার্জিনিয়া আইল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে আয়কর নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকায়, এই সম্পদকে পাচার বলছে দুদক।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জি কে শামীমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার রায়ের নতুন তারিখ ২৭ মার্চ
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম) ও তাঁর মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার রায় ঘোষণার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭ মার্চ।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারকে মো. রবিউল আলম আজ রোববার এই তারিখ ধার্য করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই আদালতের বেঞ্চ সহকারী বিল্লাল হোসেন।
জি কে শামীম কারাগারে আছেন। তাঁর মা পলাতক। এ মামলায় গত ২২ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। আদালত সেদিন ৩০ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছিলেন। কিন্তু সেদিন (৩০ জানুয়ারি) রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন আদালত।
তবে আসামিপক্ষ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি আবার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করার আবেদন করা হয়। পরে আদালতের আদেশে মামলাটি রায়ের পর্যায় থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আসে। আজ রোববার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের নতুন তারিখ ঠিক করেন আদালত।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর দুদক মামলা করে।
মামলায় ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। শামীম ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শামীমকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর অফিসে অভিযান চালিয়ে তাঁর মায়ের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআরের (স্থায়ী আমানত) কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এই টাকার তথ্য শামীম বা তাঁর মায়ের আয়কর নথিতে দেখানো হয়নি। দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, আয়েশা আক্তার তাঁর ছেলে শামীমের অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ নিজ নামে রেখে তাঁকে (শামীম) অপরাধে সহায়তা করেছেন।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ‘শুদ্ধি অভিযান’ শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সে বছরের ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন শামীম। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও অর্থ পাচার আইনে পৃথক মামলা হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, শামীমের কার্যালয়ে অভিযান চলিয়ে ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার জব্দ করে র্যাব। এই টাকার কোনো উৎস পায়নি দুদক। সব মিলিয়ে শামীমের ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৫৫১ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ পাচার মামলার অভিযোগপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৩৩৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে শামীমের। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি। এসবের দাম ৪১ কোটি টাকা। শামীম তাঁর অস্ত্রধারী সাত দেহরক্ষীকে দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডারবাজি, বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে এসব অর্থসম্পদ অর্জন করেছেন।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। অন্যদিকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই শামীমকে ১০ বছর এবং তাঁর সাত দেহরক্ষীর প্রত্যেককে চার বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।