মেঘনার দুর্গম চরে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে ভাসমান হাসপাতাল
Published: 25th, March 2025 GMT
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার দুর্গম চরে ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। একটি জাহাজে আধুনিক চিকিৎসা সম্বলিত সকল উপকরণ দিয়ে হাসপাতাল বানানো হয়েছে। এ হাসপাতানের নাম দেওয়া হয়েছে বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ মোবাইল হাসপাতাল বাংলাদেশ-৫।
সোমবার (২৪ মার্চ) হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের মেঘনা নদীর চর অঞ্চল চেয়ারম্যান বাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, চরাঞ্চলের মানুষদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকিতে ফ্রেন্ডশিপ নামে সংস্থার মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে। এ কার্যক্রম পাঁচ বছর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে চলে যাবে। গত জানুয়ারি মাস থেকে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে। আগামী ৯ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
স্থানীয়রা জানান, এই চরে বেশিরভাগ রোগী টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না। এখন শহরে না গিয়ে চিকিৎসকসেবা নিতে পারছেন। দুর্গম চরে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা পেয়ে তারা খুশি।
ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের শীপ এডমিন রেজাউল করিম জানান, হাসপাতালে ৩২ জন চিকিৎসক ও নার্সের সমন্বয়ে চিকিৎসাসেবা চলছে। আধুনিক সকল চিকিৎসা দিতে হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। চাঁদপুরের হাইমচর, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, ভোলার দৌলতখান ও ভোলা সদর উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এ ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঁচটি ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলছে।
চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন নূরে আলম বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে সরকার তার নিজস্ব জনবল দিয়ে নিজস্ব তদারকিতে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল পরিচালনা করার জন্যই এখানে স্থাপন করা হয়েছে। আশা করি, এ হাসপাতাল থেকে মানুষ তাদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে।’’
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, যতক্ষণ এই দুর্গম অঞ্চলের মানুষ সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা না পায় বা স্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে না ওঠে, ততদিন ভাসমান ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
ঢাকা/জয়/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নাগরদোলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, অভিযুক্ত স্বামী আ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় লাকী বেগম (২০) নামে একজন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিউদ্দিনের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লাকী বেগম একই উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনসুর আলীর মেয়ে। আটক স্বামী মো. সাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লী পাড়ার মো. মঙ্গলের ছেলে।
নিহত লাকীর মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে জেলার সদর উপজেলার মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে সাকিবের সাথে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত পনের দিন আগে সে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসে। রবিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথা নিজেই ফাঁটিয়ে ফেলে।
সোমবার সন্ধ্যার পরে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিউদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নাগরদোলায় উঠে।
শেফালী বেগমের অভিযোগ, নাগরদোলায় চড়াকালীন সাকিব তার মেয়ে লাকীকে গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লাকীর বাবা মনসুর আলী বলেন, “সাকিব মাদকাসক্ত ছিলো। কথায় কথায় লাকীকে নির্যাতন করতো। আমাদের ঘরে এসেও মেরেছে। সে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, “অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সুজন/টিপু