সার্টিফিকেশন বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়ার আগে নানা গুঞ্জন চাউর হওয়ায় শাকিব খানের ‘বরবাদ’ সিনেমার মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সব জল্পনা-কল্পনার পর ছাড়পত্র পেয়েছে সিনেমাটি। ফলে, ঈদুল ফিতরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে আর বাধা নেই। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সার্টিফিকেশন বোর্ডের সদস্য কাজী নওশাবা আহমেদ।

সোমবার (২৪ মার্চ) ছাড়পত্রের জন্য সিনেমাটি জমা পড়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডে। বোর্ডের দেওয়া পর্যবেক্ষণ মেনে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) পুনরায় ছাড়পত্রের জন্য জমা পড়ে ‘বরবাদ’। দুপুর ১২টা থেকে সিনেমাটির সংশোধিত কপি দেখেন চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের সদস্যরা। এরপরই ছাড়পত্র দেওয়া হয়। 

এ বিষয়ে কাজী নওশাবা আহমেদ বলেন, “দেখুন, বোর্ডে আমরা যারা আছি, সবাই বাংলা সিনেমার ভালো চাই। সবসময়ই সিনেমার সেন্সরশিপের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মানা হয়। ‘বরবাদ’ সিনেমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিষয়টি নিয়ে যেভাবে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, এটি মোটেও তেমন কিছু নয়। বোর্ডের সবাই সিনেমাটির সংশোধিত কপি দেখে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” 

আরো পড়ুন:

মুক্তির মিছিলে শাকিবের ‘অন্তরাত্মা’, সার্টিফিকেশন বোর্ডে ‘বরবাদ’

বুবলীকে খোঁচা দিলেন অপু?

এদিকে, ‘বরবাদ’ সিনেমার আনকাট সেন্সরশিপ দাবি করে বিভিন্ন তারকা সামাজিক যোগাযোমাধ্যমে প্রতিবাদী পোস্ট দিয়েছেন। সিয়াম আহমেদ লেখেন, “একজন অভিনেতা হিসেবে আমি জানি একেকটা সিনেমার পেছনে কত মানুষের স্বপ্ন লুকোনো থাকে। আমাদের মৃতপ্রায় ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা চেষ্টা করছি যে যার জায়গা থেকে কন্ট্রিবিউট করার। কিন্তু এসবের মাঝে যদি সিনেমা আটকে দেয়ার গুঞ্জন কানে আসে তাহলে খুব হতাশ লাগে, তীব্র রাগ হয়। একটা সিনেমা আটকে দেয়া মানে কতগুলো স্বপ্নকে দাফন করে দেয়া! ‘বরবাদ’ আমি, আমরা সিনেমাহলে দেখতে চাই। এই ঈদে দর্শক ‘জংলি’, ‘বরবাদ’, ‘দাগী’, ‘চক্কর’, ‘জ্বীন-৩’ দেখতে সিনেমা হলে ভিড় করুক। সিদ্ধান্ত নিতে যারা বসে আছেন তাদের কাছে আমার একটাই দাবি— হয় সব সিনেমা মুক্তি দিন, নাহলে কোনোটাই দেয়ার দরকার নেই। চলচ্চিত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিন।”

তমা মির্জা লেখেন, “কী যে বলেন বুঝি না! সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা যে পরিমাণ ভায়োলেন্স দেখি প্রতিদিন, এর থেকে বেশি একটা মুভিতে কী আর দেখাবে? আমরা চাই ‘বরবাদ’ সিনেমা হলে আসুক।”   

অন্যদিকে শবনম বুবলী লেখেন, “একটি সিনেমা তৈরির পেছনে অনেক স্বপ্ন থাকে, থাকে প্রযোজক, নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলীদের অক্লান্ত পরিশ্রম। সেই স্বপ্নপূরণ হয় এবং সবার পরিশ্রম সার্থক হয়, যখন বড় পর্দায় একটু একটু করে বহুদিন ধরে একরাশ আশা নিয়ে তৈরি করা সিনেমাটা সবাই দেখতে পায়! আমরা ঈদের সিনেমা ‘জংলি’ যেমন দর্শকদের দেখাতে চাই, তেমনি ‘বরবাদ’, ’দাগী’, ‘জ্বীন-৩’, ‘চক্কর’সহ ঈদের মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সব সিনেমা চাই দর্শক দেখতে পাক। আশা করছি, ‘বরবাদ’ সিনেমা নিয়ে সকল জটিলতার সুন্দর সমাধান হবে এবং যেভাবে ‘বরবাদ’ টিম তাদের সিনেমাটি সবাইকে দেখাতে চেয়েছে সেভাবেই দেখতে পাব।”

বলা দরকার, ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে পুরোদমে চলছিল শাকিব খানের ‘বরবাদ’ সিনেমার প্রচার-প্রচারণা। এরই মধ্যে মোশন পোস্টার থেকে শুরু করে প্রকাশ পেয়েছে চরিত্রের লুক। এমনকী, টিজার-গানও মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু হঠাৎ সিনেমাটির মুক্তি নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র পাওয়ার পর সিনেমাটি সার্টিফিকেশন বোর্ডে জমা দিতে পারবেন। কিন্তু সেই নথিপ্রাপ্তিতে দেরি হওয়ায় ‘বরবাদ’ মুক্তিতে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। তবে এবার আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই, ঈদে আসছে ‘বরবাদ’।

মেহেদী হাসানের পরিচালনায় ‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন কলকাতার ইধিকা পাল। বিভিন্ন চরিত্রে আরো অভিনয় করেছেন— মামুনুর রশীদ, যীশু সেনগুপ্ত, মিশা সেনগুপ্ত, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, ইন্তেখাব দিনার প্রমুখ।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ড়পত র বরব দ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ম্যাচের আগে আগুন জ্বালালেন রাফিনিয়া

মারাকানায় মারামারির সেই স্মৃতি এখনো দগদগে। আহত হয়েছিলেন অনেকেই। জরিমানাও হয়েছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার। ব্রাজিলের পুলিশ নির্দয়ভাবে লাঠিপেটা করেছিল আর্জেন্টিনার সমর্থকদের ওপর। ঝড়েছিল রক্তও।

আধা ঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া সেই ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়েরা গ্যালারির সামনে দাঁড়িয়ে মারামারির বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন সমর্থকদের। থামতে থামতে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গিয়েছিল। গ্যালারির রেলিং ধরে নিরীহ সমর্থকদের অনিশ্চিত চাহনির অদৃশ্য কালিতে একটা বিষয় পরিষ্কার ফুটে উঠেছিল।

ফুটবলের যে লড়াই জিভে জল আনার, যে লড়াইয়ে নাকি শুধু রোমাঞ্চই থাকে, খুব আশা নিয়ে সেটা তাঁরা দেখতে এসে এ কী দেখলেন! লাঠিপেটা, চেয়ার ছুড়ে মারা, চিৎকার ও রক্তপাত!

আরও পড়ুনগোল করে আর্জেন্টিনাকে হারানোর ঘোষণা রাফিনিয়ার১৬ ঘণ্টা আগে

ফিফা সেই ঘটনার তদন্তে নেমেছিল। আর যেন এমন কিছু না ঘটে, সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিজ্ঞাও করেছিল ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ) ও আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)।

কিন্তু লড়াই যখন ব্রাজিল–আর্জেন্টিনার এবং তা–ও ফুটবলের ময়দানে, তখন হাজারো শান্তির কথা বলার পরও একটু ঝুঁকি থাকেই। হাজারো ব্যবস্থা নেওয়ার পরও নিরাপত্তা আসলে নিশ্চিত নয়। কারণ, অনুভূতিটাই আগুনে—আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিল! যে দলের মাঠে খেলা, সেই দলের সমর্থকেরা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য একটু আয়োজন তো রাখবেনই!

বুয়েনস এইরেসের মনুমেন্তালেও আজ নিশ্চয় এমন কিছু এন্তেজাম করা আছে। অন্তত আর্জেন্টাইন সমর্থকদের সেই প্রস্তুতি অবশ্যই নেওয়া আছেই। কারণ, মারাকানার সর্বশেষ স্মৃতি—ব্রাজিলিয়ান পুলিশের লাঠিপেটা, ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের চেয়ার ছুড়ে মারা। হিসাব–কিতাব তো সমান হয়নি।

আর্জেন্টিনার নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ ম্যাচে ১০০০ পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন থাকবেন। পাশাপাশি ট্রাফিক এজেন্ট, সরকারি এজেন্সির কর্মকর্তা ও ক্যাডেট পুলিশ কর্মকর্তারাও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। ৮০ হাজার আসনের এ স্টেডিয়ামে সমর্থকেরা তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা পার হয়ে তারপর যেতে পারবেন গ্যালারিতে।

ব্রাজিলের সমর্থকেরা ঢুকবেন আলাদা গেট দিয়ে। অর্থাৎ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের গ্যালারিতে ঢোকার পথেই যেন মারামারি লেগে না যায়, সেই ভাবনা থেকে হয়তো এমন ব্যবস্থা। কিন্তু সমর্থকেরা মনের ভেতর তুষের আগুন নিয়ে ঢুকলে, সেটি ধরা পড়বে কোন তল্লাশিতে?

আরও পড়ুনআর্জেন্টিনার বিপক্ষে শেষ কবে জিতেছিল ব্রাজিল ১৭ ঘণ্টা আগে

মারাকানায় মার খাওয়ার সেই তুষের আগুন তো এখনো ধিকিধিকি জ্বলছে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের বুকে। প্রয়োজন ছিল একটু উসকে দেওয়ার। রাফিনিয়া ঠিক সেই কাজই করেছেন। রোমারিওর সঙ্গে ‘রোমারিও টিভি’ পডকাস্টে বলেছেন, ‘আমরা ওদের গুঁড়িয়ে দেব। কোনো সন্দেহ নেই। একদম গুঁড়িয়ে দেব মাঠের ভেতরে, দরকার পড়লে মাঠের বাইরেও।’

চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন রাফিনিয়া। ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়েও আছেন—এমন গুঞ্জন–ফিসফাসও আছে। এ মাসে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে আগের ম্যাচে গোলও করেছেন। সব মিলিয়ে এ মৌসুমে বার্সার হয়ে ৪২ ম্যাচে ২৭ গোলের পাশাপাশি ২০ গোল করিয়েছেন। ব্রাজিলের হয়ে ৫ ম্যাচে গোল ৪টি, করিয়েছেন ১টি। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ৪৭ ম্যাচে করেছেন ৩১ গোল, বানিয়েছেন ২১টি। অর্থাৎ এ মৌসুমে গোল করা ও গোল করানো মিলিয়ে ৪৭ ম্যাচে ৫২ গোলে অবদান রাফিনিয়ার।

কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোল পেয়েছেন রাফিনিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ