খুলনায় ভিপি নুরসহ ৬ নেতার বিরুদ্ধে ২ মামলা
Published: 25th, March 2025 GMT
খুলনায় পঞ্চবীথি ক্লাবের দখল উচ্ছেদের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছয় নেতার বিরুদ্ধে পাল্টা দুটি মামলা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈম হাওলাদার বাদি হয়ে একটি এবং জেলা কমিটির সদস্য শেখ সাকিব আহমেদ বাদি হয়ে খুলনা সদর থানায় আরেকটি মামলা করেন।
এর মধ্যে নাঈম হাওলাদারের মামলায় চারজন আসামি। তারা হলেন নুরুল হক নুর, গণঅধিকার পরিষদের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস কে রাশেদ, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো.
শেখ সাকিব আহমেদের মামলায়ও আসামি চার জন। সেখানে রাশেদ, জনির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজ শেখ রুবেল ও হিরন নামে এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, “দুই পক্ষই পৃথক মামলা করেছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এর আগে গত ২১ মার্চ গণ অধিকার পরিষদ খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস কে রাশেদ বাদি হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা কমিটির সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন ও মহররম মাহীম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক শেখ রাফসান জানি ও কেন্দ্রীয় সদস্য রুমি রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, নগরীর শান্তিধাম মোড়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সরকারি ভবনে পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র নামে একটি ক্লাব ছিল। গত ২৭ জানুয়ারি ভবনটি দখল করে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশিদুল ইসলাম।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে রাতেই রাশেদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু বহিষ্কারের পরেও এস কে রাশেদ ওই ভবনে বসেই দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। সম্প্রতি সেখানে তাদের আরও কয়েকটি অঙ্গ সংগঠনের সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়।
গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকেই ভবনটির দখল উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে বার্তা ছড়ান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির খুলনার নেতাকর্মীরা। রাত ৯টার দিকে তারা ভবন উদ্ধার করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সেনাবাহিনী ভূমিকা না রাখলে অভ্যুত্থান সফল হতো না: রাশেদ খাঁন
সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন। আজ সোমবার যশোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণে আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যদি সেনাবাহিনী ভূমিকা না রাখতো, তাহলে অভ্যুত্থান সফল হতো না। যখন সেনাবাহিনীর বন্দুকের নল আওয়ামী লীগে দিকে, ফ্যাসিস্ট পুলিশের দিকে তাক করেছিল তখনই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। এখন সেই সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।
যারা সেনাপ্রধানকে সরানোর ষড়যন্ত্র করছেন তাদের উদ্দেশে রাশেদ খাঁন বলেন, একটি পক্ষ সেনাবাহিনীকে উস্কানি দিয়ে এক-এগারো তৈরির চক্রান্ত করছে। জনগণকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ করা হচ্ছে। এই চক্রান্তের সঙ্গে দেশীয় ও বিদেশি চক্রান্তকারীরা জড়িত। তাদের বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। এই সেনাবাহিনীকে শেখ হাসিনা বিতর্ক করেছে। তাই সেনাপ্রধানকে বলব, সেনাবাহিনীতে সংস্কারের প্রয়োজন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসকে উদ্দেশ্য করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, এই সরকারের দায়িত্ব অনেক। এই সরকার যদি গণহত্যার বিচার সঠিকভাবে না করতে পারে; তাহলে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। এই সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করতে পারে, তাহলে দুই হাজার শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। এই মুহূর্তে সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে। আওয়ামী লীগ যে গণহত্যা চালিয়েছে তারপরে এই দল কোনোভাবেই আর রাজনীতি করতে পারে না। কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। সুতরাং আমাদের স্পৃষ্ট কথা, আমরা যারা রক্ত দিয়েছি, আন্দোলন করেছি, এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলন করেছি তাদরে বক্তব্য হলো, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন কেন, আওয়ামী লীগ বাংলার মাটিতে আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। এই ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত দরকার। ঐকমত যদি না থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগ ফিরে এসে আমাদের কাউকেই রেহায় দেবে না। আওয়ামী লীগ সবাইকে ফাঁসিতে ঝোলাবে। তাই এই সরকারকে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। যারা গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছে তাদের ডাকতে হবে। তিনি তা না করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়টি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উপর দায় চাপাচ্ছেন। তিনি কেন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারছে না, তিনি কি আন্তর্জাতিক চাপের কারণেই নিষিদ্ধ করতে পারছে না?’
গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি এ বি এম আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, গণঅধিকার পরিষদের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক ইকবাল, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন প্রমুখ।