ইয়েমেনে হামলার পরিকল্পনা ভুল করে ফাঁস করল যুক্তরাষ্ট্র
Published: 25th, March 2025 GMT
ইয়েমেনে হামলার একটি পরিকল্পনা ভুলে ফাঁস করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একটি মেসেজিং গ্রুপে তাঁদের এ–সংক্রান্ত বার্তা–আদান প্রদানকালে ফাঁসের এ ঘটনা ঘটে। গ্রুপটিতে একজন সাংবাদিককে যুক্ত করা হয়েছিল।
ইয়েমেনে ইরান–সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের ওপর মার্কিন বিমান হামলার কিছুক্ষণ আগে পরিকল্পনাটি ফাঁস হয় বলে গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউস জানায়।
এ ঘটনায় দ্রুত ক্ষোভ প্রকাশ করে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন এবং এতে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। ঘটনাটি অবশ্যই কংগ্রেসকে তদন্ত করতে হবে।
এ ঘটনায় দ্রুত ক্ষোভ প্রকাশ করে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলেছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন এবং এতে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। ঘটনাটি অবশ্যই কংগ্রেসকে তদন্ত করতে হবে।মার্কিন পত্রিকা দ্য আটলান্টিকের এডিটর–ইন–চিফ জেফ্রে গোল্ডবার্গ গতকাল বলেছেন, ১৩ মার্চ বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ সিগন্যালের একটি এনক্রিপটেড চ্যাট গ্রুপে অপ্রত্যাশিতভাবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। গ্রুপটির নাম ছিল ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’। ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী, হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা সমন্বয় করার জন্য একটি ‘টাইগার টিম’ গঠন করতে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ তাঁর সহকারী অ্যালেক্স ওংকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদের মুখপাত্র ব্রায়ান হিউস বলেন, দৃশ্যত চ্যাট গ্রুপটি সঠিক ছিল।
লোহিত সাগরে ইসরায়েলের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাহাজে হামলা করার প্রেক্ষাপটে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ১৫ মার্চ বড় ধরনের আক্রমণ পরিচালনার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। একই সঙ্গে ইরানকে সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দেওয়া বন্ধ করার জন্য সতর্ক করে দেন।
সাংবাদিক গোল্ডবার্গ জানান, হুতিদের ওপর ওই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ হামলার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত মেসেজিং গ্রুপটিতে তুলে ধরেন। হামলার লক্ষ্যবস্তু, মোতায়েন করা অস্ত্র ও হামলার ক্রমসম্পর্কিত তথ্যসহ নানা কিছু এ পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়। গোল্ডবার্গ তাঁর প্রতিবেদনে বিস্তারিত পরিকল্পনার কথা না জানালেও সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার করে এমন আলাপ–আলোচনা করাকে খুবই বেপরোয়া বলে আখ্যায়িত করেন।
গ্রুপটিতে আরও যাঁরা যুক্ত ছিলেন তাঁরা হলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক জন র্যাটক্লিফ, জাতীয় গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি ওই ঘটনা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ট্রাম্পকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস য়োসা আর নেই
নোবেলজয়ী কালজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস য়োসা আর নেই। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাজধানী লিমায় ৮৯ বছর বয়সে মারা যান পেরুর এই লেখক। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিকের প্রয়াণের মধ্য দিয়ে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সোনালি যুগের প্রজন্মের অবসান হলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে য়োসার বড় ছেলে আলভারো বার্গাস য়োসা লেখেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের বাবা মারিও বার্গাস য়োসা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। পরিবারের সদস্যরা এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন।’ এক্সে পোস্ট করা এ ঘোষণায় সই করেছেন আলভারোর দুই সহোদর গোনসালো ও মরগানা বার্গাস য়োসা।
১৯৩৬ সালে দক্ষিণ পেরুর অ্যারিকুইপায় মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে মারিও বার্গাস য়োসার জন্ম। ২০১০ সালে নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত য়োসা লাতিন আমেরিকার শ্রেষ্ঠ লেখকদের একজন। স্প্যানিশ ভাষার এই ঔপন্যাসিক স্পেনেরও নাগরিক।
১৯৬০ ও ’৭০–এর দশকে লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের বিস্ময়কর উত্থানের সময়কার কালজয়ী লেখকদের একজন য়োসা। ওই সময়ের কালজয়ী সাহিত্যিকদের মধ্যে রয়েছেন কলম্বিয়ার গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস ও আর্জেন্টিনার হুলিও কোর্তাসার।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে য়োসার স্বাস্থ্যের অবনতির খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় তাঁকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। গত অক্টোবরে তাঁর ছেলে আলভারো বলেন, তাঁর বয়স ৯০ বছর ছুঁই ছুঁই। এই বয়সে এসে সবারই কাজের মাত্রা কিছুটা কমাতে হবে।
নোবেলজয়ী এই সাহিত্যিকের মৃত্যুতে সোমবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে পেরু। এ সময় সরকারি ভবন ও স্থাপনায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
য়োসার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে ‘দ্য টাইম অব দ্য হিরো’, ‘আন্ট জুলিয়া অ্যান্ড দ্য স্ক্রিপ্টরাইটার’, ‘দ্য গ্রিন হাউস’, ‘ডেথ ইন দ্য আন্দিজ’, ‘দ্য ওয়ার অব দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘দ্য ফিস্ট অব দ্য গোট’। প্রায় ৩০টি ভাষায় তাঁর লেখা অনূদিত হয়েছে।
লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সোনালি যুগের লেখক মারিও বার্গাস য়োসা