বারবার প্রস্রাবে সংক্রমণ বা রিকারেন্ট ইনফেকশন হলে করণীয় কী
Published: 25th, March 2025 GMT
ছয় মাসে দুইবারের বেশি বা বছরে তিনবারের বেশি ইউরিন ইনফেকশন হলে আমরা একে রিকারেন্ট ইনফেকশন বা বারবার মূত্রনালির সংক্রমণ বলি। বারবার ইনফেকশন হলে ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি আমরা খোঁজার চেষ্টা করি, কেন ইনফেকশন হচ্ছে। কারণগুলো হলো—
শারীরিক গঠনগত সমস্যা
এমনিতেই মেয়েদের মূত্রনালির দৈর্ঘ্য ছোট হওয়ায় ব্যাকটেরিয়া সহজেই প্রবেশ করতে পারে। আবার কিছু শারীরিক সমস্যা, যেমন কিডনি বা মূত্রনালি বা থলিতে পাথর, ইউটেরাইন প্রলাপস বা জরায়ু বের হয়ে এসে মূত্রনালিতে চাপ দেওয়া, ব্লাডার ফিস্টুলা—এই কারণগুলো রিকারেন্ট ইনফেকশনের জন্য দায়ী।
প্রস্রাব আটকে থাকা
অনেক সময় ধরে প্রস্রাব আটকে থাকলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সুযোগ পায়। ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি, ছেলেদের প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বড় হয়ে যাওয়া, প্রস্টেট ক্যানসার ও কিছু নিউরোলজিক্যাল কারণেও এমন হয়।
আরও পড়ুনকোন রঙের প্রস্রাবের কী মানে০১ এপ্রিল ২০২৩হরমোনের তারতম্য
মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাওয়ার কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। আবার অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে মূত্রে সুগার বেড়ে গেলে সহজেই ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হতে পারে।
ফরেন পার্টিকেল
দীর্ঘদিন মূত্রনালিতে ফরেন পার্টিকেল, যেমন ক্যাথেটার, যেকোনো ধরনের স্টেন্ট, টিউব ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি অনেক বাড়িয়ে দেয়।
যৌন সম্পর্ক
সহবাসের কারণে মেয়েদের মূত্রনালিতে মাইক্রোট্রমা বা ছোট ছোট ক্ষত হয়, আবার সহবাসের সময় ব্যবহৃত কিছু জেল মূত্রনালির ভালো ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে, ফলে বারবার ইনফেকশন হয়। আবার কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, যেমন আইইউডি বা ডিভাইস ব্যাবহার, স্পার্মিসিডাল জেল বা লিকুইড ব্যবহার ইউরিন ইনফেকশন করে।
আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখবে সকালের এই ৫ অভ্যাস০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫অপরিচ্ছন্নতা ও পানি কম খাওয়া
মূত্রনালি সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা, অপরিচ্ছন্ন কাপড় পরা ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ায়। যাঁরা দিনে এক লিটার বা এর চেয়ে কম পানি খান, তাঁদের বারবার ইউটিআই হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
করণীয় কী
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কী কারণে হচ্ছে, এটা খুঁজে বের করতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা নিতে হতে। কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
প্রতিদিন কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের জুস, যেমন ক্র্যানবেরি জুস ও দই বা ল্যাকটোব্যাসিলাসসমৃদ্ধ খাবার ইউরিন ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে।
প্রস্রাবের বেগ এলেই প্রস্রাব করতে হবে, বেশিক্ষণ আটকে রাখা যাবে না।
টয়লেট করার পর ভালো ভাবে পরিষ্কার করতে হবে। সুতির অন্তর্বাস পরিধান করতে হবে ও নিয়মিত সাবানপানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে।
যৌন মিলনের আগে ও পরে অবশ্যই প্রস্রাব করতে হবে এবং ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
মেনোপজের পর অনেক সময় চিকিৎসকেরা ইস্ট্রোজেন থেরাপি দেন, এটি কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।
ডা.
আফলাতুন আকতার জাহান, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ইনফ কশন প রস র ব স ক রমণ ব রব র
এছাড়াও পড়ুন:
তারা কি ফিরিবে আর...
‘যারা স্বর্গগত তারা এখনো জানে
স্বর্গের চেয়ে প্রিয় জন্মভূমি
এসো স্বদেশ ব্রতের মহা দীক্ষালোভী
সেই মৃত্যুঞ্জয়ীদের চরণচুমি’
গানের এই চরণগুলো ভেসে আসছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে। এই গান শুনে মনে প্রশ্ন জাগে, মোহিনী চৌধুরীর কথাগুলো আজ কেন শহীদ মিনারে।
একটু এগিয়ে গিয়ে দেখা যায়, মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়েছে। ২৫ মার্চ কালরাতের শহীদদের স্মরণে গান গাইছেন একদল শিল্পী। গানটি শেষ হতে না হতেই আবারও তাঁরা গেয়ে উঠলেন—
‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল’
সে সময় তাঁদের চেহারায় মোমবাতির আভা। সেই চেহারায় ফুটে উঠছে নানা দাবি। গোবিন্দ হালদারের গানের কথায় যেন সেই দাবিগুলোই তুলে ধরছিলেন—
‘আর দেরি নয় উড়াও নিশান
রক্তে বাজুক প্রলয় বিষাণ
বিদ্যুৎ গতি হউক অভিযান
ছিঁড়ে ফেলো সব শত্রু জাল, শত্রু জাল’
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘ভুলি নাই ভুলি নাই মৃত্যুমিছিল: জেনোসাইড একাত্তর দায়বদ্ধতা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মোমবাতি প্রজ্বালন শেষে এভাবেই সব প্রজন্মের কাছে একাত্তরের গণহত্যার ইতিহাস তুলে ধরেন শিল্পীরা। স্মরণ করেছেন কালরাতের শহীদদের।
মোমবাতি প্রজ্বালন ও শহীদ স্মরণের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ। অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সন্জীদা খাতুনের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মোমবাতি প্রজ্বালনের আগে বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তুলে ধরতে আজকের এই আয়োজন করেছি। একই সঙ্গে ২৫ মার্চ কালরাতের নির্মম গণহত্যা আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি লাভের দাবি জানাচ্ছি।’
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়