স্বাস্থ্য খাতবিষয়ক সংস্কার কমিশন কাজ শেষ করতে পারেনি। তাই কমিশন নির্ধারিত সময় ৩১ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারছে না। কমিশন সরকারের কাছে আরও দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে।

প্রতিবেদন চূড়ান্ত না হওয়ার কারণ হিসেবে কমিশনের সদস্যদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খানকে প্রধান করে গত বছরের ১৭ নভেম্বর ১২ সদস্যের স্বাস্থ্য খাতবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কমিশন কাজ শেষ করতে না পারায় সরকার সময় এক মাস বাড়িয়ে ৩১ মার্চ করে। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।

আরও পড়ুনচিকিৎসকদের জন্য ‘বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসেস’ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন২৪ মার্চ ২০২৫

একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে বলেছে, কমিশন কাজ শেষ করতে পারেনি। একাধিক বিষয় নিয়ে কমিশনের সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ এখনো নিষ্পত্তি হয়নি।

একজন সদস্য বলেছেন, কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদনের বিভিন্ন অংশ লিখেছেন ইংরেজিতে। কিন্তু পুরো প্রতিবেদন বাংলায় অনুবাদ করতে হবে, তা সম্পাদনা করতে হবে। দাপ্তরিক ভাষায় অনুবাদ করা, তা সম্পাদনা করা ও অনুবাদ হওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন সদস্যদের পড়তে দেওয়ার পর তাঁদের মতামত নিতে সময় লাগবে।

অসমর্থিত একটি সূত্র বলেছে, একটি দাতা সংস্থার অর্থায়নে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য খাত সংস্কার নিয়ে ঢাকায় গত দুই মাসে বেশ কয়েকটি সেমিনার ও গোলটেবিল বৈঠক করে। এসব সেমিনার ও গোলটেবিল বৈঠক থেকে উঠে আসা সংস্কার প্রস্তাব ও সুপারিশ কমিশনের প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করার কথা আছে। ওই প্রতিষ্ঠানটি খুব শিগগির নিজস্ব প্রতিবেদন কমিশনকে দেবে।

অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের সংস্কার প্রতিবেদন না পেলে এই আলোচনা বাধাগ্রস্ত হতে পারে—এমন কথা স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কারবিষয়ক কমিশনের একজন সদস্য।

আজ মঙ্গলবার কমিশনের একাধিক সদস্যের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। একজন সদস্য বলেছেন, কমিশন আগামী ১৫ এপ্রিলের আগে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে না।

আরেকজন সদস্য বলেছেন, ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটিসহ নানা কারণে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য।

আরও পড়ুনস্বাস্থ্য খাত সংস্কারে কমিশনের কাছে প্রস্তাব জমা দিল বিএনপি০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কমিশনের প্রধান এ কে আজাদ খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেদনে কমিশনের সব সদস্যের স্বাক্ষর দরকার। কমিশনের কোনো কোনো সদস্য পবিত্র ওমরাহ করতে যাওয়ায় স্বাক্ষর নেওয়া বাকি আছে।

আরও পড়ুনস্বাস্থ্য খাত সংস্কার: চাই সেবার উন্নয়ন, বৈষম্যের নিরসন১৯ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনস্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের আলোচনায় যা উঠে এল২১ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক জ শ ষ করত ন সদস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও

বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ জেলে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জালিয়াঘাটাস্থ সরল ইউপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন জেলেরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই ইউপি কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জেলেরা সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।

জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে ৬৯১ জন জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি করে ৩৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার ২৬ টন চাল উত্তোলন করে বাকি চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নুরুল ইসলাম নামের এক জেলে। রোববার জেলেদের চাল বিতরণের নির্ধারিত তারিখ ছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে কয়েকশ জেলে পরিষদে চাল নিতে গেলে তাদের ফেরত দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা।

জেলে নুরুল ইসলাম জানান, জেলেদের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ হলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একবার ৩২ কেজি চাল দিয়ে বাকি চাল আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে অনেক জেলে সেই ৩২ কেজিও পাননি। চাল না পেয়ে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সরল ইউনিয়নের জেলে মনির উদ্দিন, মোহাম্মদ তৈয়ব, বাবুল দাশ, আবদুল আজিজ, মোহাম্মদ হাসানের ভাষ্য, মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও কাউকে কাউকে ২৮ কেজি ও ৩২ কেজি চাল দেন। অধিকাংশ জেলেকে চাল না দিয়ে ফেরত দেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিবের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফের চাল অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারকে অনিয়ম দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছেন সরল থেকে বদলি করা ইউপি সচিব হারুন। কিছু দিন অরুণ জয় ধর নামে শীলকূপ ইউনিয়নের সচিবকে সরল ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও বর্তমানে রহিম উল্লাহ নামে একজনকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও পাসওয়ার্ডসহ পুরো নিয়ন্ত্রণ হারুনের হাতে। সরলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেকে সরকারের একজন সচিবের চাচি বলেও পরিচয় দিচ্ছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার জানান, জেলেদের জন্য তিনি ২৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি ৩৮ কেজি করে দিয়েছেন। যেসব জেলে এখনও চাল পাননি, তারাও চাল পাবে। সেলিম নামে একজন ইউপি সদস্য লোকজনকে উস্কে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেন তিনি।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, সরল ইউনিয়নে জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ছবি তোলার নাম করে একজন প্রেম নিবেদন করে বসলেন’
  • লক্ষ্মীপুরে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
  • নোবেলজয়ী সাহিত্যিক মারিও বার্গাস য়োসা আর নেই
  • আখাউড়ায় চুরির অপবাদে তিন নারীর চুল কেটে নির্যাতন, একজন আটক
  • বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
  • ঐতিহ্যের উজ্জ্বল কান্ডারি
  • নতুন আইটেম গানে প্রশংসিত তামান্না কত টাকা নিলেন?
  • দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত বিএনপির ২ নেতার পদ স্থগিত
  • চাঁদাবাজির প্রতিবাদকারীর নামে মামলা দিলেন জবি ছাত্রদল নেতা
  • চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও