ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে তেল কিনলেই শুল্ক আরোপ করবেন ট্রাম্প
Published: 25th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যে সব দেশ ভেনেজুয়েলার কাছ থেকে খনিজ তেল বা প্রাকৃতিক গ্যাস কিনবে, তাদের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
গতকাল সোমবার ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে এ হুমকি দেন। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির ওপরও নতুন শুল্ক আরোপ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। খবর এপির।
ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ভেনেজুয়েলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘খুবই শত্রুভাবাপন্ন’। ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কিনলে ওই দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে যে কোনো ধরনের বাণিজ্যে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হবে। আগামী ২ এপ্রিল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
আরো পড়ুন:
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং: বাংলাদেশ নিয়ে যা বললেন মুখপাত্র
ইউক্রেন ইস্যুতে সৌদি আরবে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া
মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের ২০২৪ সালের বিশ্লেষণ অনুসারে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রভাবে চীনের ওপর আরোপির কর আরো বেড়ে যাবে। চীন ২০২৩ সালে ভেনেজুয়েলার রপ্তানিকৃত তেলের ৬৮ শতাংশ কিনেছিল। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ভেনেজুয়েলা থেকে তেল গ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে স্পেন, ভারত, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনামও রয়েছে।
এমনকি ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া সত্ত্বেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও দেশটি থেকে তেল কিনে। আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলা থেকে ৮ দশমিক ৬ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আমদানি করেছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলার ওপর আগে থেকেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে দেশটির সঙ্গে কোনো ধরনের বাণিজ্য করতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন নিতে হয়। এমন কড়া নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার পরেও ভেনেজুয়েলার বাণিজ্যসঙ্গী দেশগুলোকে শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই শুল্ক আরোপ করছে ‘বিভিন্ন কারণের জন্য, যার মধ্যে একটি হলো ভেনিজুয়েলা কৌশলে ও প্রতারণার মাধ্যমে হাজার হাজার উচ্চ পর্যায়ের অপরাধী ও অন্যান্য অপরাধীদের গোপনে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে।
তিনি আরো জানান, সব নথিপত্র স্বাক্ষরিত ও নিবন্ধিত হবে এবং এই শুল্ক আগামী ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ‘মুক্তি দিবসে’ কার্যকর হবে। ট্রাম্প এই দিনটিকে বিশেষ উপাধি দিয়ে উল্লেখ করেন। কারণ তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, সেদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে, যা ওয়াশিংটনের মতে, অন্যায্য বাণিজ্য চর্চার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া। এরই মধ্যে তিনি চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে মারাত্মক ফেন্টানিল প্রবাহ বন্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে এবং বাণিজ্য ভারসাম্যের অসঙ্গতির যুক্তি দেখিয়ে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনকে মিথ্যা, বানোয়াট বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের নিয়মিত বৈঠক সম্পর্কিত ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনের তথ্য নাকচ করে বলেছে, সংবাদমাধ্যমটি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার আইএসপিআরের এক প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নজরে এসেছে যে ইন্ডিয়া টুডে আবারও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠিত একটি নিয়মিত বৈঠক সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।’
এতে বলা হয়েছে, আজ (২৫ মার্চ ২০২৫) প্রকাশিত ‘প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের সম্ভাবনার মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জরুরি বৈঠক করেছে’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি অপসাংবাদিকতার চর্চা এবং একসময়ের খ্যাতিমান সংবাদমাধ্যমটির বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহকারী হিসেবে পতিত হওয়ার একটি উজ্জ্বল নজির।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র বা যাচাইযোগ্য প্রমাণবিহীন এই প্রতিবেদন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানোর আরেকটি প্রচেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে। এতে উপস্থাপিত তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ‘আসন্ন অভ্যুত্থান’ সম্পর্কিত দাবি সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘ইন্ডিয়া টুডে’ বারবার দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার নীতিমালা উপেক্ষা করে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে যাচ্ছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।
আইএসপিআরের প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ইন্ডিয়া টুডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা এটিই প্রথম নয়। এর আগে ‘২০২৫ সালের ১১ মার্চ আমরা এক প্রতিবাদলিপিতে এই ধরনের বিভ্রান্তিকর ও তথ্যগতভাবে ভুল প্রতিবেদনের বিষয় উন্মোচন ও খণ্ডন করেছি।’
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া ইন্ডিয়া টুডের সম্পাদকীয় নীতির ব্যাপারে উদ্বেগজনক ইঙ্গিত দেয়, যা সত্য প্রচারের পরিবর্তে চাঞ্চল্য সৃষ্টির দিকে ধাবিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সেবায় এবং গণতন্ত্র ও শান্তি রক্ষার নীতি সমুন্নত রাখার জন্য তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা ইন্ডিয়া টুডেসহ সকল সংবাদমাধ্যমকে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা করতে এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় বিভেদ ও অবিশ্বাস তৈরি করে এমন ভিত্তিহীন ও ক্ষতিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’