বাজারে নানা ধরনের মেকআপ রিমুভার রয়েছে। মেকআপ পরিষ্কার করতে অনেকেই এসব রিমুভার ব্যবহার করেন। অনেকের হয়তো জানা নেই, মেকআপ রিমুভার শুধু মেকআপ পরিষ্কার করে, ত্বকের খেয়াল রাখে না। এ কারণে ঘরে থাকা সাধারণ উপাদান দিয়েই মেকআপ ও মুখ পরিষ্কার করুন।

দুধ : দুধের মধ্যে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে, ত্বকের রন্ধ্রে প্রবেশ করে মেকআপ, ময়লা, ব্যাকটেরিয়া, মৃত কোষ, ব্ল্যাকহেডস সব পরিষ্কার করে দেয়। এমনকী দুধ ত্বকে পুষ্টি জোগায়, ত্বককে টানটান এবং কোমল রাখে। কাঁচা দুধ মুখে মেখে নিন কিংবা দুধে তুলো ডুবিয়ে মুখে বুলিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

নারকেল তেল : নারকেল তেল মেকআপ রিমুভার হিসেবে দারুণ কার্যকর। ওয়াটার মেকআপ এক নিমেষে তুলে দেয়। কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে মুখে হাল্কা হাতে মালিশ করলেই সব মেকআপ উঠে যাবে। এর পর ভিজে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিন। ত্বক পরিষ্কার ও সুন্দর রাখতে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। 

শসার রস : গরমে মুখ থেকে মেকআপ তুলতে এবং ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে শসার রস ব্যবহার করুন। সেনসিটিভ ত্বকের জন্য আদর্শ এই প্রাকৃতিক মেকআপ রিমুভার। মুখে শসার রস মেখে মিনিট পনেরো বসে থাকুন। এর পর হালকা হাতে মালিশ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। শসার রস মেকআপ তোলার পাশাপাশি ত্বকে কুলিং এফেক্ট এনে দেবে। গরমকালে ত্বক পরিষ্কারের জন্য এই রস খুবই উপকারী। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম কআপ র ম ভ র

এছাড়াও পড়ুন:

'দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই'

‘বাহে, শনিবার রাইত ১০টার সময় ছাওয়াটার ব্যথা ওঠে। সে কি ব্যথা, আতালি পাতালি। গ্রামের দাই আসি অনেক চেষ্টা করিল। কই, কিছুই তো হইল না। এলা কি করং, অতো রাইতত হাসপাতাল যাইম কেমন করি! গাড়ি, ঘোড়া, রিকশা-কিছুই নাই। তারপর একখান অটোরিকশা জোগাড় করি ভোর ৫টার সময় ফুলবাড়ি থাকি লালমনিরহাট রওনা হইনো। শহরের সাপটানা বাজারের ক্লিনিকে হাজির হই হামরাগুলা। ক্লিনিকের লোকজন অপারেশন করি মোর ছোট নাতনিক দুনিয়ার মুখ দেখায়ছে।'

নববর্ষের প্রথম প্রহরে জন্ম নেওয়া নাতনির সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন জমিলা বেগম। বলতে থাকেন, ''বাহে, হামরা গরিব মানুষ, অতো কিছু বুঝি না, তোমরাগুলা এই গরিবের ছাওয়াক যে সম্মান কইরলেন, তাতে মনটা ভরি গ্যালো। হাউস করি নাতনির নাম রাখমো ‘বৈশাখি’।’’

লালমনিরহাট শহরের খোদেজা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সোমবার সকাল ৬টায় শাহ আলম ও হামিদা দম্পতির কোলজুড়ে আসে কন্যাশিশু। বাংলা বছরের প্রথম দিনে সন্তান উপহার পেয়ে তাদের পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। এটি তাদের দ্বিতীয় কন্যাসন্তান। বড় মেয়ে শিমু নার্সারি শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার নাওডাঙ্গা কুমারপাড়া গ্রামের শাহ আলম মিয়া বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পুরোনো খাতাপত্র, পত্রিকা, ভাঙ্গা টিন কিনে শহরে তা বিক্রি করেন। দিনে তিন থেকে চারশ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। পাঁচ শতকের বসতভিটায় তিন ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে তিনি বসবাস করেন। বসতভিটার ওইটুকু জায়গা ছাড়া আর কিছুই নেই তার। তাই সন্তানকে ক্লিনিকে রেখে টাকার সন্ধানে ছুটছেন। কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে হবে। শাহ আলম বলেন, ‘মুই বাহে হকার, দিন আনি দিন খাই। হামার নববর্ষ বলি কিছু নাই। দোয়া কইরবেন ছাওয়াক মুই নেখাপড়া শিখাইম। দুই বেটি নিয়া হামার কোনো কষ্ট নাই। আল্লাহ সুস্থ রাখছে, তাতে হামরা খুশি।'

শাহ আলমের এসব কথা শুনে ক্লিনিকের বিছানায় শুয়ে থাকা নবজাতকের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘আমি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করেছি। বাবা অটোরিকশা চালান। অভাবের সংসারে ইচ্ছা থাকার পরও লেখাপড়া করতে পারিনি। ২০১৪ বিয়ে হয়। পরের বছর প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।' দুই মেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান তিনি। 

ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বজিৎ জানান, বাড়িতে অনেক চেষ্টা করেও হামিদার নরমাল ডেলিভারি করাতে পারেনি পরিবার। সময় ক্ষেপণ করায় বেশ সমস্যা হয়েছিল। পরে অস্ত্রোপচার করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য। তাকে সহায়তা করেন ডা. হাবিব। ডা. ভোলানাথ ভট্টাচার্য্য জানান, মা ও শিশু এখন সুস্থ রয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ