তামিমের অবস্থা ‘আশাব্যঞ্জক’, তবে স্থানান্তর ঝুঁকিপূর্ণ
Published: 25th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো অনুভব করছেন। আজ সকালে কেবিনে একজনের সহায়তায় হাঁটার চেষ্টা করেছেন তিনি। তবে শারীরিক অবস্থা ‘আশাব্যঞ্জক’ হলেও এই মুহূর্তে তাকে অন্য কোথাও স্থানান্তর করা ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তামিমের শারীরিক উন্নতি হওয়ায় তার পরিবার চেয়েছিল তাকে সাভারের কেপিজে হাসপাতাল থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হোক। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হলে আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডা.
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘তামিম ইকবালের বর্তমান অবস্থা আশাব্যঞ্জক। তবে তার হৃদযন্ত্রে যে রিং বসানো হয়েছে, সেটি একটি ‘ফরেইন বডি’। যদিও শঙ্কা খুবই কম, তবে এর কারণে কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি সাময়িকভাবে বন্ধও হয়ে যেতে পারে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘থ্রম্বোসিস’ নামে পরিচিত। তাই এই মুহূর্তে তাকে স্থানান্তর না করাই শ্রেয়।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে তামিমের পরিবারও আপাতত তাকে কেপিজে হাসপাতালেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণের কারণে আগামীকাল এবং পরশুদিনও তাকে সেখানেই থাকতে হবে। এরপর অন্য হাসপাতালে নেওয়া হলেও এক সপ্তাহের আগে তাকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এক সপ্তাহ পর তিনি হাঁটাচলা করতে পারবেন, তবে চিকিৎসকদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
গতকাল (২৪ মার্চ) বিকেএসপিতে ঢাকা লিগের ম্যাচ চলাকালে ফিল্ডিং করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। শুরুতে মাইনর, পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয় তার। দ্রুত কেপিজে হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। তাকে ২২ মিনিট ধরে সিপিআর ও তিনটি ডি-সি শক দিতে হয়। পরে জরুরি এনজিওগ্রামে দেখা যায়, তার হৃদযন্ত্রের একটি আর্টারিতে শতভাগ ব্লক রয়েছে। দ্রুত রিং পরানো হলে তার জীবন রক্ষা পায়।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে ১০-১৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে পৌঁছাতেই পারেন না। তামিম ভাগ্যবান যে সময়মতো হাসপাতালে এসেছেন এবং তার পাশে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা ছিলেন। কার্ডিয়াক ম্যাসাজ দেওয়ার ফলে তার হার্ট স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পেরেছে। দ্রুত এনজিওগ্রাম ও ব্লক খুলে দেওয়ার কারণে তিনি নতুন জীবন পেয়েছেন।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়া গেলেন গবির ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
দেশে ভেটেরিনারি পড়ুয়া কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথমবারের মতো ইন্টার্নশিপের উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়ায় গেছেন সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষার্থীরা। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস অনুষদের নবম ব্যাচের ইন্টার্ন চিকিৎসক।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে করে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্য দেশ ছেড়েছে শিক্ষার্থীরা। মালয়েশিয়ার খ্যাতনামা ‘ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া কেলান্টানে’ নবম ব্যাচের মোট ছয়জন শিক্ষার্থী ১৫ দিন ইন্টার্ন করবে। তবে সময়সীমা বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।
ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরাই প্রথমবারের মতো মালয়েশিয়ায় ইন্টার্নি করতে যাচ্ছি। নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করছি। এমন সুযোগগুলো আমাদের বহুমুখী উচ্চতর জ্ঞানার্জনের দ্বার উন্মোচিন করে। পাশাপাশি নিজ দেশ ও বাহিরের দেশের ভেটেরিনারি পেশার তুলনামূলক জ্ঞানার্জন সম্ভব হয়। ইন্টার্নশিপের এত সুন্দর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমাদের ডিন মহোদয় ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।”
অনুষদটির অধিকর্তা অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম খান বলেন, “ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া কেলান্টান অনেক পুরাতন একটি বিশ্ববিদ্যালয়। আমি দীর্ঘদিন যাবৎ সেখানে শিক্ষকতা করেছি। দেশের অভ্যন্তরে ইন্টার্নশিপের পাশাপাশি বিদেশে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা ওই দেশের ভেটেরিনারি পেশা সম্পর্কে জ্ঞান ও তাদের সাংস্কৃতি অনুধাবন করতে পারবে। বিদেশের আধুনিক প্রযুক্তি ও কীভাবে তারা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে, তা জানতে পারবে।”
তিনি বলেন, “আশা করি, বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভেটেরিনারি সেবা দিতে পারবে। মালয়েশিয়ায় ইন্টার্নিশিপে যাওয়ার মাধ্যমে আমাদের অনুষদ সফলতার পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেল বলে আমি বিশ্বাস করি।”
ইন্টার্নশিপের বিষয়ে নেপাল, মালয়েশিয়া ছাড়াও জাপান ও অস্ট্রেলিয়াতেও যোগাযোগ চলছে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, নবম ব্যাচের আরও ১৩ জন শিক্ষার্থী আগামী ২০ এপ্রিল (রবিবার) ইন্টার্নশিপে নেপালের অ্যাগ্রিকালচার এবং ফরেস্টি ইউনিভার্সিটিতে যাবেন। এর আগে পঞ্চম ব্যাচের মোট ২৫ জন শিক্ষার্থী নেপালের খ্যাতনামা ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও অষ্টম ব্যাচের অ্যাগ্রিকালচার এবং ফরেস্টি ইউনিভার্সিটিতে ২১ জন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপে গিয়েছিলেন।
২০১৬ সালের মে মাসে দেশের প্রথম ও একমাত্র বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গবিতে ভেটেরিনারি শিক্ষা শুরু হয়। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দেয়। তবে পরে আসন সংখ্যা ৫০-এ উন্নীত হয়। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে আটটি ব্যাচ স্নাতক সম্পন্ন করেছে।
ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী