বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবাল আগের চেয়ে অনেকটাই ভালো অনুভব করছেন। আজ সকালে কেবিনে একজনের সহায়তায় হাঁটার চেষ্টা করেছেন তিনি। তবে শারীরিক অবস্থা ‘আশাব্যঞ্জক’ হলেও এই মুহূর্তে তাকে অন্য কোথাও স্থানান্তর করা ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

তামিমের শারীরিক উন্নতি হওয়ায় তার পরিবার চেয়েছিল তাকে সাভারের কেপিজে হাসপাতাল থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হোক। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হলে আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডা.

আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর এবং কেপিজে হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডা. রাজিব। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘তামিম ইকবালের বর্তমান অবস্থা আশাব্যঞ্জক। তবে তার হৃদযন্ত্রে যে রিং বসানো হয়েছে, সেটি একটি ‘ফরেইন বডি’। যদিও শঙ্কা খুবই কম, তবে এর কারণে কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি সাময়িকভাবে বন্ধও হয়ে যেতে পারে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘থ্রম্বোসিস’ নামে পরিচিত। তাই এই মুহূর্তে তাকে স্থানান্তর না করাই শ্রেয়।’  

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে তামিমের পরিবারও আপাতত তাকে কেপিজে হাসপাতালেই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণের কারণে আগামীকাল এবং পরশুদিনও তাকে সেখানেই থাকতে হবে। এরপর অন্য হাসপাতালে নেওয়া হলেও এক সপ্তাহের আগে তাকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এক সপ্তাহ পর তিনি হাঁটাচলা করতে পারবেন, তবে চিকিৎসকদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

গতকাল (২৪ মার্চ) বিকেএসপিতে ঢাকা লিগের ম্যাচ চলাকালে ফিল্ডিং করার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম। শুরুতে মাইনর, পরে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয় তার। দ্রুত কেপিজে হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। তাকে ২২ মিনিট ধরে সিপিআর ও তিনটি ডি-সি শক দিতে হয়। পরে জরুরি এনজিওগ্রামে দেখা যায়, তার হৃদযন্ত্রের একটি আর্টারিতে শতভাগ ব্লক রয়েছে। দ্রুত রিং পরানো হলে তার জীবন রক্ষা পায়।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে ১০-১৫ শতাংশ রোগী হাসপাতালে পৌঁছাতেই পারেন না। তামিম ভাগ্যবান যে সময়মতো হাসপাতালে এসেছেন এবং তার পাশে অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা ছিলেন। কার্ডিয়াক ম্যাসাজ দেওয়ার ফলে তার হার্ট স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পেরেছে। দ্রুত এনজিওগ্রাম ও ব্লক খুলে দেওয়ার কারণে তিনি নতুন জীবন পেয়েছেন।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

রোমের হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন পোপ ফ্রান্সিস

গুরুতর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর রোমের জেমেলি হাসপাতাল থেকে আজ ছাড়া পাচ্ছেন পোপ ফ্রান্সিস। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাকে ভ্যাটিকানে ফিরে কমপক্ষে দুই মাস বিশ্রামে থাকতে হবে।

চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮৮ বছর বয়সী পোপের অবস্থা দুইবার সংকটাপন্ন হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পোপের চিকিৎসা তত্ত্বাবধানে থাকা ড. সার্জিও আলফিয়েরি।

ড. আলফিয়েরি বলেন, “আজ আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে পারি যে তিনি বাড়ি ফিরবেন।”
তিনি বলেন, পোপ ফ্রান্সিসের জীবন বিপন্ন হলেও কখনো তাকে ইনটুবেট করতে হয়নি এবং তিনি সবসময় সচেতন ও সজাগ ছিলেন।

হাসপাতাল ছাড়ার আগে, পোপ ফ্রান্সিস হাসপাতালের জানালা থেকে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে আশীর্বাদ প্রদান করবেন। এটি হবে তার পাঁচ সপ্তাহ পর প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পোপের নিউমোনিয়া পুরোপুরি সেরে উঠেছে এবং তিনি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন। বর্তমানে তিনি আর রাতের বেলা যান্ত্রিক ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন অনুভব করছেন না। কেবল নাসারন্ধ্রের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করছেন, এবং দিনে তুলনামূলক কম উচ্চ-প্রবাহ অক্সিজেন ব্যবহার করছেন।

তবে দীর্ঘমেয়াদি অক্সিজেন গ্রহণের কারণে পোপের কণ্ঠস্বর কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ড. আলফিয়েরি বলেন, বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে, স্বাভাবিক কণ্ঠস্বর ফিরে পেতে কিছুটা সময় লাগবে।

চিকিৎসকরা আশা প্রকাশ করেছেন, যদি উন্নতির এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে পোপ ফ্রান্সিস শিগগিরই নিজের কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারবেন।

এর আগে, কার্ডিনাল ভিক্টর ফার্নান্দেজ বলেছিলেন, অক্সিজেন থেরাপি পোপের গলার টিস্যু শুষ্ক করে ফেলেছে, যার কারণে আবার কথা বলতে শেখার প্রয়োজন হতে পারে।

প্রায় ১২ বছর ধরে রোমান ক্যাথলিক চার্চের নেতৃত্বে থাকা পোপ ফ্রান্সিস অতীতেও স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে তার ফুসফুসের সমস্যা ধরা পরে, যা তাকে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ আরও সংবেদনশীল করে তোলে।

সম্প্রতি, ভ্যাটিকান থেকে প্রকাশিত এক ছবিতে পোপকে হাসপাতালে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। এছাড়া, সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পোপের স্প্যানিশ ভাষায় রেকর্ড করা একটি অডিও বার্তা বাজানো হয়, যেখানে তিনি তার জন্য প্রার্থনা করায় সকলকে কৃতজ্ঞতা জানান।

পোপ ফ্রান্সিসের সুস্থতা কামনায় ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাঁটা-চলা করছেন, কেবিনে থেকে আবার সিসিইউতে তামিম
  • এবারের লড়াইটা তামিমের নিজের সঙ্গেই 
  • কীর্তনখোলার তীরে পড়ে ছিল তোয়ালে মোড়ানো শিশু, পাশে ঝুড়ি ও ফিডার
  • কীর্তনখোলার তীরে পড়ে ছিল তোয়ালে মোড়ানো নবজাতক, পাশে ঝুড়ি ও ফিডার
  • রোমের হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন পোপ ফ্রান্সিস