তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাতের আকাশে কাঁদানে গ্যাসের ঝাঁজালো গন্ধ। তবু রাজপথ ছাড়ছেন না নগরের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থক আন্দোলনকারীরা। তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে আগেও কয়েকবার আন্দোলন হয়েছে। তবে এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্নই মনে হচ্ছে। তুরস্কের দীর্ঘদিনের নেতার মধ্যে এবার কিছুটা অস্বস্তির আভাসও দেখা যাচ্ছে।

রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বীদের অন্যতম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এমন পরিণতি শুধু তাঁর ক্ষেত্রে হয়েছে, এমন নয়। এরদোয়ান যাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন, তাঁদের তিনি নানাভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছেন। অতীতে এমনটি নানা সময় দেখা গেছে।

ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয় মেয়র কারাবন্দী একরেম ইমামোগলু বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও অনেক দূর যেতে পারেন।

মেয়রের বিরোধী রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) একরেমের পক্ষ নিয়েছে। তাঁর সমর্থনে দলটি তাদের নেতা-কর্মীদের রাজপথে নামিয়ে এনেছে। তারাও আশা করছে, এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন রকম হবে, পরিস্থিতি অনেক দূর গড়াবে।
একরেম ইমামোগলু সব সময় দক্ষতার সঙ্গে যেকোনো ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা বেশ ভালোভাবেই নিয়ে থাকেন। এমনকি তাঁকে গ্রেপ্তারের তোড়জোড় যখন চলছিল, তখনো তিনি তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এরদোয়ানের ওপর পরিস্থিতির ফায়দা বেশ ভালোভাবেই নিয়েছেন।

২০২৮ সালে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একরেম ইমামোগলু ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকের সমর্থন আদায় করেছেন। মুক্ত হলে তিনি যে এরদোয়ানের বিপক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হচ্ছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তবে এ ঘটনা শুধু এখানেই থেমে থাকবে না। ইস্তাম্বুলের মেয়রের ভাগ্যে আরও অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। তিনি ক্যারিশমাটিক নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও সবকিছু যে তাঁর অনুকূলে যাবে, সেটা বলা যাচ্ছে না।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এরদ য় ন র পর স থ ত ত রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

খান ব্রাদার্সের কারসাজি: এবাদুলের ৩ সহযোগীর বিও হিসাব স্থগিত

পুঁজিবাজারে বিবিধ খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে তিন ব্যাক্তির বিও হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

অভিযুক্তরা হলেন- মো. আজাদ হোসেন পাটোওয়ারি, নাসির উদ্দিন আকন্দ ও মো.আখতার হোসেন।

তারা সবাই খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত বিকন ফার্মারসিউটিক্যালস পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ এবাদুল করিমের সহযোগী।

গত মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিএসইসির ৯৪৯তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত এক সাংবাদিক বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন সভায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেনে কারসাজি সন্দেহে মো. আজাদ হোসেন পাটোওয়ারি, নাসির উদ্দিন আকন্দ ও মো.আখতার হোসেনের বিও হিসাবে ডেবিট ট্রানজেকশন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এছাড়া, সভায় বিষয়টি অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এদিকে, সম্প্রতি খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৮ ব্যক্তি ও ৩ প্রতিষ্ঠানকে মোট ৮৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি। এ কারসাজিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিকন ফার্মার এমডি মোহাম্মদ এবাদুল করিম। এ কারসাজিতেও আজাদ হোসেন পাটোওয়ারি, নাসির উদ্দিন আকন্দ ও মো.আখতার হোসেন ছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ মার্চ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত এবং একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে মোহাম্মদ এবাদুল করিমসহ তার সহযোগীরা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্টিজের শেয়ারের দাম যোগসাজস করে বাড়ায়। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনে বিএসইসি।

কোম্পানিটির শেয়ার কারসাজিতে সহযোগীদের মধ্যে রয়েছেন- এবাদুল করিমের দুই সন্তান, তার তিন প্রতিষ্ঠান এবং চার বিনিয়োগকারী। একে অপরের সঙ্গে যোগসাজস করে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকার মুনাফা হাতিয়ে নিয়েছেন।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ থেকে ১২ নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্টিজের শেয়ারের দাম কারসাজি করে বাড়ানোর দায়ে সাত ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে ৭ লাখ টাকা, তার মেয়ে রিসানা করিমকে ৮ লাখ টাকা, তার প্রতিষ্ঠান বিকন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে ৬ লাখ টাকা, বিকন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড ইমপ্লোয়িজ সিপিএফকে ৭ লাখ টাকা, বিকন মেডিকেয়ারকে ৭ লাখ টাকা, ব্যক্তি বিনিয়োগকারী মো. সোহেল আলমকে ৬ লাখ টাকা, আক্তার হোসেনকে ১ লাখ টাকা, মো. মিজানুর রহমানকে ৫ লাখ টাকা, মো. নাসির উদ্দিন আকন্দকে ১ লাখ টাকা এবং আজাদ হোসেন পাটোয়ারীকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সে হিসাবে আলোচ্য সময়ে শেয়ার কারসাজির জন্য মোট ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

এদিকে, ৫ মার্চ ২০২৩ থেকে ১৩ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কারসাজি করে বাড়ানোর দায়ে তিন ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদ এবাদুল করিমকে ৬ লাখ টাকা, তার মেয়ে রিসানা করিমকে ৬ লাখ টাকা, তার ছেলে উলফাত করিমকে ৬ লাখ টাকা, তার প্রতিষ্ঠান বিকন ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডকে ৬ লাখ টাকা, বিকন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড ইমপ্লোয়িজ সিপিএফকে ৬ লাখ টাকা এবং বিকন মেডিকেয়ারকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেহিসেবে আলোচ্য সময়ে শেয়ার কারসাজির জন্য মোট ৩৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

গত ২৫ মার্চ খান ব্রাদার্সের শেয়ার সর্বশেষ ১৫৯.৩০ টাকা দরে লেনদেন হয়। এদিন কোম্পানি ৭৫৫ বারে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৭টি শেয়ার লেনদেন করে। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বনিম্ন ৭৬.১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০৮.৩০ টাকা দরে লেনদেন হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ার রয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৮৭৭টি। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৯৮ কোটি ৮ লাখ টাকা।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ