কিশোরগঞ্জে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহতের ঘটনায় বিএনপির দুই নেতাকে অব্যাহতি
Published: 25th, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আশিক খান (২২) নামে ছাত্রদলের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির দুই নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসানের সই করা এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই নেতারা হলেন কটিয়াদী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আশিকুজ্জামান নজরুল এবং উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জজ আদালতের এপিপি রিয়াজুল ইসলাম।
আজ মঙ্গলবার অব্যাহতির আদেশ কপি উপজেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন খান ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমানের কাছে এসে পৌঁছায়। পরে তাঁরা সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তাঁদের অব্যাহতির কারণ হিসেবে পদে থাকা অবস্থায় সংঘাত সৃষ্টি ও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এর কমিটি গঠন নিয়ে দেড় যুগ ধরে একাধিক পক্ষের মধ্যে বিরোধ আছে। বর্তমানে পরিচালনা পর্ষদ গঠন নিয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নুরুজ্জামান চন্দন ও উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিকুজ্জামান নজরুল পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে। তাঁরা উভয়ই সভাপতির পদ চান। এ নিয়ে এলাকাবাসী দুই বিভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। কিছুদিন আগে অ্যাডহক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত হোসেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে তিনজনের নামের প্রস্তাব পাঠান। তিনজনের মধ্যে নুরুজ্জামান চন্দনকে ১ নম্বরে, আলী হায়দার নামের এক ব্যক্তিকে ২ নম্বরে এবং আ.
নামের সিরিয়াল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় দুই ব্যক্তি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার বেলা দুইটার দিকে ঢাকা বোর্ডের একটি দল তদন্ত করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে আসে। এই তথ্য উভয় পক্ষ আগে থেকে জানত। এ নিয়ে উভয় পক্ষের কয়েক শ লোক সকাল থেকে কলেজের আশপাশে অবস্থান নেন। তদন্ত চলার একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় দায়ের কোপে ছাত্রদল নেতা আশিক খান ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হেমায়েত হোসেন গুরুতর আহত হন। দুজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে আশিক মারা যান।
গত রোববার অব্যাহতি পাওয়া দুই ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আশিকের মা রিতা বেগম। এতে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আলী হায়দার ও হান্নান মিয়া নামের দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, মামলা হওয়ার পর অপর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
ঘটনার পর থেকে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় আশিকুজ্জামান নজরুল ও রিয়াজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে তাঁদের রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠজনেরা জানান, কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির মধ্যে দুটি পক্ষ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক মাঠেও পক্ষ দুটির বিরোধ রয়েছে। তারা পরস্পরকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে চায়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ব এনপ র গঠন ন য় স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে স্বৈরতন্ত্র উচ্ছেদ হবে না: জেএসডি
পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করা সম্ভব হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তিনি বলেছেন, বিদ্যমান রাজনীতি ও রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের সপক্ষে বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে জনগণের মধ্যে বীরোচিত ঐক্য স্থাপিত হয়েছে। এই বাস্তবতা রাজনৈতিক দলগুলোকে উপলব্ধি করতে হবে।
শনিবার বেলা ১১টায় ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জেএসডির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ এ কথা বলেন। সংসদে উচ্চকক্ষ, প্রদেশ, স্বশাসিত স্থানীয় সরকার এবং জাতীয় সনদ প্রণয়নের দাবিতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের বিজয় ধরে রাখতে না পারলে এবং জনগণের অভিপ্রায়ভিত্তিক প্রজাতন্ত্র নির্মাণে ‘জাতীয় সনদ’ গৃহীত না হলে রাজনৈতিক নৈরাজ্য বা রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়বে। তিনি বলেন, শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবীদের ক্ষমতার অংশীদারত্ব না দিলে যেকোনো মুহূর্তে চরম সংকট দেখা দিতে পারে। তা বিবেচনায় নিয়েই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রবর্তন করতে হবে।
সভায় জেএসডির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি তানিয়া রব বলেন, ব্যাপক কাঠামোগত সংস্কার এবং রাজনৈতিক-সংস্কৃতির সংস্কার ছাড়া আওয়ামী দুঃশাসনের চরম প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে জনগণ নিরাপদ হতে পারবে না। স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা অক্ষত রেখে কোনো ধরনের আপস জনগণ মেনে নেবে না।
জেএসডির ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি মিয়া হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির সহসভাপতি মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আমির উদ্দিন, ফারজানা দিবা, সাইফুল ইসলাম, তাজউদ্দিন সবুজ, গোলাম ফারুক, তানজিদুর রহমান, শামসুদ্দিন, ছাত্রনেতা সোহেল রানাসহ প্রমুখ।