Prothomalo:
2025-04-15@04:58:55 GMT

শবে কদরেও যারা ক্ষমা পাবে না

Published: 25th, March 2025 GMT

মাকাসিদে শরিয়াহ বা ইসলামি বিধানাবলির উদ্দেশ্য হলো জীবনের সুরক্ষা, সম্পদের সুরক্ষা, জ্ঞানের সুরক্ষা, বংশধারার পবিত্রতার সুরক্ষা, বিশ্বাস ও ধর্মকর্মের সুরক্ষা। এসব সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইসলাম সব ক্ষতিকর জিনিসকে নিষিদ্ধ করেছে। সেই আলোকেই মদ ও মাদক মাকাসিদে শরিয়াহ বা শরিয়তের উদ্দেশ্যাবলির পরিপন্থী।

মদ ও মাদক পাপাচারের শিকড় এবং অন্যতম কবিরা গুনাহ (তাবরানি ও বায়হাকি)। মদ্যপান ও মাদক সেবন এমন পাপ, যা সব ধরনের অপরাধের দরজা খুলে দেয়। এ জন্যই সব ধরনের মদ, মাদক ও নেশাদ্রব্য ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বা হারাম।

মহানবী (সা.

) বলেন, ‘যেকোনো পানীয় (বা বস্তু) নেশা উদ্রেক করে, তা হারাম।’ (বুখারি: ২৪১)

ধূমপান মাদক সেবনের প্রথম ধাপ। ধূমপান ও তামাক এক পর্যায়ে আসক্তি বা নেশায় পরিণত হয়, যা ছাড়া ধূমপায়ী ও মাদকসেবী থাকতে পারে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর সম্পূর্ণ ঘৃণ্য বস্তু; শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। শয়তান তো মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ আদায় থেকে বিরত রাখতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?’ (সুরা মায়িদা, আয়াত ৯০-৯১)

জাহান্নামের তিনটি বৈশিষ্ট্য—আগুন, ধোঁয়া ও দুর্গন্ধ। এই তিনটির সমাহার ঘটে ধূমপানে। মদ, মাদক, ধূমপান ও তামাক শুধু ব্যবহারকারীর নয়, বরং অন্যদেরও ক্ষতি করে। এটি দেশ, জাতি ও সমাজের জন্য সর্বনাশা শত্রু। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা সতর্ক থাকো এমন ফিতনার ব্যাপারে, যা শুধু জালিম অপরাধীদের ওপরই আপতিত হবে না (বরং সামগ্রিকভাবে সবার ক্ষতি হবে)। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সুরা আনফাল, আয়াত ২৫)

মদ্যপায়ী ও মাদকসেবীদের দোয়া কবুল হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘এই রাতে আল্লাহ তাআলা মাখলুকাতের প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকান, মুমিনদের ক্ষমা করে দেন, কাফির-মুশরিকদের তওবা করার সুযোগ দেন; কিন্তু মদ্যপায়ীদের তওবা ছাড়া ক্ষমা করেন না।’ (বায়হাকি, শুআবুল ইমান, কিতাবুস সুন্নাহ, খণ্ড: ৩, পৃষ্ঠা: ৩৮২)। শবে কদরেও তাদের দোয়া কবুল হয় না—‘মদ্যপায়ী বা মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী, পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, ইচ্ছাকৃত নামাজ পরিত্যাগকারী, শরিয়তসিদ্ধ কারণ ছাড়া মুসলমানদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নকারী।’ (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ, তাফসিরে কাশফুল আসরার, খণ্ড: ১, পৃ. ৫৬৪)।

ধূমপান ও তামাক সেবন ক্ষতিকর এবং অপচয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং তোমরা কিছুতেই অপচয় কোরো না; নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা বনি ইসরায়েল, আয়াত ২৬-২৭)। কিয়ামতের দিনে হাশরের ময়দানে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোনো আদমসন্তান এক কদমও নড়তে পারবে না। যথা জীবন, যৌবন, আয়, ব্যয়, জ্ঞান। ব্যয়ের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা পানাহার করো কিন্তু অপব্যয় কোরো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত ৩১)

ধূমপানে রোজা ভঙ্গ হয়। তাই ধূমপায়ীরাও রমজানে দিনের বেলায় ধূমপান করেন না। অনুরূপভাবে যাঁরা বিভিন্নভাবে তামাক সেবন করেন, তঁারাও রোজা অবস্থায় তা থেকে বিরত থাকেন। রমজানে প্রতিদিন দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ ঘণ্টা ধূমপান, তামাকসহ সব ধরনের মাদক থেকে দূরে থাকেন। তাই রমজান মাস ধূমপান, তামাকসহ সব ধরনের মাদক বর্জনের সুবর্ণ সুযোগ।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম

[email protected]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ ত আল সব ধরন র ক স বন শয়ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মামা খুন, ভাগনেসহ গ্রেপ্তার ৩

রাজশাহীতে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মামাকে খুনের অভিযোগে ভাগনেসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল সোমবার বিকেলে মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‍্যাব রাজশাহী ও মাদারীপুর ক্যাম্পের সদস্যরা যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেন।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরের ঘোড়া চত্বর এলাকায় সুরুজ আলীকে (৪৫) মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতেই নিহত ব্যক্তির বাবা রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা করেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার বহরমপুর এলাকার মৃত আনিচুর রহমানের ছেলে মো. হিরো (৪০) ও আশরাফ আলী (৪৫) এবং তাঁদের মা জাহানারা বেগম (৬০)।

নিহত ব্যক্তির নাম সুরুজ আলী (৪৫)। তিনি নগরের নতুন বিলসিমলা এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। সুরুজ পেশায় একজন মাইক্রোবাসচালক ছিলেন।

র‍্যাব জানিয়েছে, নিহত সুরুজ আলীর সঙ্গে আসামিদের জমিসংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় সুরুজসহ চারজন অটোরিকশায় লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে নতুন বিলসিমলার দিকে যাচ্ছিলেন। পথে ঘোড়া চত্বর এলাকায় পৌঁছালে আসামিরা তাঁদের পথ রোধ করেন। সেখানে জমি নিয়ে কথা–কাটাকাটি ও বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আশরাফ আলীর নির্দেশে হিরো ইট দিয়ে সুরুজের মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে আসামিরা তাঁর বুক, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারেন। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যান।

পরে আহত সুরুজকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক ছিলেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে র‍্যাব রাজশাহী সিপিসি-১-এর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘটনার পর মামলা হলে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরে অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের রাজপাড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ