তাহলে তর্কটা জমবে কাদের ঘিরে, মেসি ব্যস্ত মায়ামিতে চোট সারাতে। সা পাওলোতে থাকা নেইমারও শুধুই দর্শক। আকাশিতে লাওতারো মার্টিনেজ নেই, হলুদে অনুপস্থিত অ্যালিসান বেকার! তারপরও আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল ম্যাচ বলে কথা, বছর বছর তো আর হয় না। সেখানে কিছু বিতর্ক থাকে, যা শাশ্বত। কিছু আবেগ জড়িয়ে থাকে, যা আপসেও ভাগাভাগি হয় না। তেমনই এক আপন অনুভূতি নিয়েই দর্শকদের সামনে আরও একটি ‘সাউথ আমেরিকান সুপার ক্ল্যাসিকো’ অপেক্ষা করছে। 

বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৬টায় বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুর্ভাগ্য এই যে বাংলাদেশ থেকে কোনো টেলিভিশন চ্যানেলে ম্যাচটি দেখা যাবে না, তবে বিশ্বফুটবলের আকণ্ঠ পিপাসা যাদের, তারা জানেন মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন স্পোর্টস হাব সাইটে খেলা দেখা যায়।

তারা এটাও জানেন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের এই দ্বৈরথে পয়েন্টের অঙ্কটাই বা কি? ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে হারাতে পারলেই ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট হাতে চলে আসবে আর্জেন্টিনার। ম্যাচটি ড্র করলেও অবশ্য ২৯ পয়েন্ট নিয়ে টিকিট মিলবে। আর ব্রাজিল জিতলে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লাতিন তালিকার দ্বিতীয়তে চলে আসবে। ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা পরের বিশ্বকাপের টিকিট নিয়ে বিশেষ উদযাপন করতে চায়। 

বুয়েন্স আয়ার্সের স্তাদিও মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামের গ্যালারির প্রায় ৮৫ হাজার টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকঢোল সঙ্গে নিয়ে গ্যালারিতে তারা ‘ভামোস ভামোস আর্জেন্টিনা.

..’ সুর তুলতেও তৈরি। তবে ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনিয়াহ ব্রাসিলিয়া থেকেই তাদের এই আয়োজন মাটি করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন। ‘আমরা যাচ্ছি তাদের মাঠে তাদেরকে হারাতে।’ 

আসলে বছর দুই আগে এই আর্জেন্টিনার কাছেই মারাকানায় হার কষ্ট দিয়েছিল ব্রাজিলকে। ‘মারাকানায় সেদিন ওটামেন্ডির গোলে আমাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। সেদিন আমিও খেলেছিলাম কিন্তু দলের জন্য কিছু করতে পারিনি। তবে এবার সুযোগ এসেছে আর্জেন্টাইনদের সামনে তাদের মাঠে তাদের দলকে হারানোর।’ 

রাফিনিয়াহর এ আত্মবিশ্বাসের কারণ আগের ম্যাচেই কলম্বিয়ার বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন তিনি। ফর্মে আছেন তাঁর সঙ্গী ভিনিসিয়ুসও। বার্সা ও রিয়ালের এই দুই তারকাকে নিয়েই ব্রাজিল উজ্জ্বল। গৌরবময় অতীতের সঙ্গে বতর্মানটাও স্মরণীয় করে রাখতে চান তারা। তবে ব্রাজিলিয়ানদের এমন হুঙ্কারে ভয় পাওয়া দল নয় আর্জেন্টিনা। 

‘প্রতিপক্ষ যে-ই হোক আমরা একই মানসিকতা নিয়েই খেলতে চাই। পেরু ও বলিভিয়াকে আমরা যেমন সম্মান জানিয়ে ও দায়িত্ব নিয়ে খেলেছি, ব্রাজিলের বিপক্ষেও তাই করব।’ বক্তার নাম এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বর দলকে তিনি ৭ ও ৯ নম্বর দলের মতো করেই দেখছেন!

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

গণহত্যার প্রতিবাদ করে গাজাবাসীর জন্য রাইখানদের প্রার্থনা

গণহত্যার প্রতিবাদ করে জালিম ইসরায়েলের আগ্রাসন থেকে মজলুম গাজাবাসীর মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেছে পটুয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায়।

গাজায় গণহত্যা ও নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের শিকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জন্য কুয়াকাটায় মাহা সাংগ্রাই জলকেলি উৎসবে এক মিনিট নীরাবতা পালন করে রাখাইন সম্প্রদায়।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুক্রবার রাখাইন জলকেলি উৎসবের শুরুতে গাজায় গণহত্যার শিকার ফিলিস্তিনিদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ছবি: রাইজিংবিডি 

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব
বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে

অবশেষে জিম্বাবুয়ে সিরিজ সম্প্রচারকারী চ্যানেল পেলো বিসিবি

শুক্রবার দুপুরে (১৮ এপ্রিল) কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার-সংলগ্ন রাখাইন মাঠে জলকেলি উৎসবের প্রারম্ভে সবাই দাঁড়িয়ে এই নীরবতা পালন করেন।

রাখাইনদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গাজাবাসীর জন্য বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয় বলেও জানিয়েছেন সম্প্রদায়টির ধর্মগুরুরা।

গণহত্যা অভিযানে গাজা ও ফিলিস্তিন নিশ্চিহ্ন করতে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রাখাইনদের এসব উদ্যোগ মানবতার জন্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য দৃষ্টান্ত বলে মনে করছেন সেখানকার মানুষ।

রাখাইন জলকেলি উৎসব দেখতে আসা কলাপাড়ার আলীপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হোসেন মিয়া বলেন, “আজ জলকেলি দেখতে রাখাইন মাঠে এসেছি। এখানে এসে একেবারেই অবাক হয়েছি। তারা অনুষ্ঠানের শুরুতেই গাজাবাসীর জন্য নীরবতা পালন করেছে।”

“নিপীড়িত গাজাবাসীর জন্য তাদের সহমর্মিতা আমাকে আপ্লুত করেছে,” বলেন হোসেন মিয়া।

মহিপুর থেকে আসা মো. আবদুস সালাম বলেন, “এমনিতেই রাখাইনদের সঙ্গে আমাদের একটি সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। আজ তারা গাজাবাসীর জন্য প্রার্থনা করেছে। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আরো বেড়ে গেল।”

মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধবিহারের উপাধ্যক্ষ উত্তম মহাথের বলেন, “আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে গাজাবাসীর জন্য প্রায়ই বিশেষ প্রার্থনা করি। শুধু গাজাবাসীই নয়, পৃথিবীর সকল দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ যুদ্ধ বন্ধ হোক- এটাই আমাদের প্রার্থনা।”

“ আমরা মানুষ হিসেবে সবাইকে সবার প্রতি সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অনুরোধ জানাচ্ছি,” বলেন উত্তম মহাথের।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, “গাজাবাসীর প্রতি রাখাইন সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে মানবতার সঙ্গে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্প্রীতি তারা দেখিয়েছেন, এ জন্য তাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

“রাখাইন সম্প্রদায় ভিন্ন ধর্মালম্বী হলেও মানবতার ধর্ম সবার এক। তাই রাখাইন সম্প্রদায় এই নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে আজ ফিলিস্তিনের পক্ষে তাদের সম্প্রীতি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করল।”

শুক্রবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাখাইন জলকেলি উৎসব, যাতে শামিল হচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বিদেশিরাও।

উৎসব শুরুর দিন ঐতিহ্যবাহী জলকেলিতে মেতে উঠতে দেখা যায় রাখাইনদের। তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দ করতে দেখা যায়। উৎসবে সহায়তা করছে স্থানীয় প্রশাসন।

ঢাকা/ইমরান/রাসেল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ