সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য ২০২৭ এফসি এশিয়ান কাপে খেলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামতে যাচ্ছে। প্রথমবারের মতো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেলা হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠে নামতে যাচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক ফুটবলের অবসর থেকে ফিরে এসেছেন ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রী। বুধবার (১৯ মার্চ) মালদ্বীপকে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে দীর্ঘদিনের জয় ক্ষরা কাটিয়েছে মানোলো মারকেজের দল।

স্বাধীনতার পর থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত ফুটবল ছিল বাংলাদেশের প্রাণের খেলা। এরপর সংগঠকদের হটকারীতাতেই ফুটবল আড়ালে পড়ে যায় ক্রিকেটের। তবে হামজা ফিরে আসাতে আবারও সেই পুরোনো ফুটবল প্রেম দেখা গেল জনগণের মাঝে। ব্যাপারটা অনুমেয়ই যে, আজ রাতে বাংলাদেশের সকল ফুটবলপ্রেমীদেরই চোখ থাকবে ভারতের শিলংয়ে।

আরো পড়ুন:

হাসিনাবিরোধী অভ্যুত্থান সম্পর্কে জানলেও ভারতের কিছু করার ছিল না: জয়শঙ্কর

ভারতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অর্থপাচার, গ্রেপ্তার ৪

বাংলাদেশ একবারই এশিয়া কাপের মুল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছিল। কুয়েতে সেই আসরটি হয়েছিল ১৯৮০ সালে। তবে এবারের বাছাই পর্বের ফরম্যাট ও প্রতিপক্ষ বিবেচনা করলে, আবারও মূল পর্বে খেলার ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের। সেই সম্ভাবনা আরও বেড়েছে হামজা দলের সাথে যোগ দেওয়ায়। তবে সেই স্বপ্ন সত্য করতে হলে বাংলাদেশকে আজ হারাতে হবে প্রতিবেশী দেশ ভারকে। যারা ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ১২৬তম অবস্থানে আছে।

মানে এবং র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ কখনোই ভারতের বিপক্ষে খারাপ খেলে না। সবশেষ ৫ ম্যাচের ৪টি ড্র করাই যার প্রমাণ দিচ্ছে। আজ আবার হাভিয়ের কাবরেরার দলে আছেন হামজা। তবে বাস্তবতা হচ্ছে একজন প্লেয়ার গোটা দলের ফুটবল আমূলে বদলে ফেলতে পারবেন না। তাছাড়া ম্যাচটা ভারতের ঘরের মাঠে এবং পাহাড়ী অঞ্চলে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ফুটবল দল অন্তত শেষ এক দশক গণ মানুষের আগ্রহের আড়ালে থেকে খেলেছে। এক হামজার আগমনে সেই ফুটবলই এখন দেশের মূল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। এই প্রত্যাশার চাপে হাভিয়ের কাবরেরার দলের কেমন খেলে সেটা এখন দেখার বিষয়।

ভারত ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৬ ম্যাচে জিতেছে মাত্র ১টি। বাধ্য হয়ে অবসর ভেঙ্গে ফিরে এসেছেন ছেত্রী। আজকের ম্যাচের উপর ভারতের ফুটবলেরও তাই অনেক কিছু নির্ভরশীল। এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ‘সি’ গ্রুপের র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল তারাই। দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে একচ্ছত্র রাজত্ব করা ভারত সাম্প্রতিক সময়ে টানা হারছিল। ছেট্রির আগমনেই তারা মালদ্বীপকে ৩-০ বযবধানে উড়িয়ে দিয়েছে।

সেই ছেত্রীকে আটকানোর ভার কিছুটা হামজার উপর থাকবে। ইংল্যান্ডের শীর্ষ স্তরে খেলা মিডফিল্ড বক্স টু বক্সই খেলবেন। ধারণা করা হচ্ছে সোয়েপার রোলে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ড থেকে আক্রমণভাগেও দেখা যাবে হামজাকে। হামজা ও জামাল ভুঁইয়া একসাথে খেললে গোটা বাংলাদেশ দলের খেলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তারা।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা

মুরাদনগরে বৈশাখী মেলা ঘিরে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। সারা বছর এই কাজের কদর না থাকলেও বৈশাখ রাঙাতে এই সময়টাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় আগের মতো চাহিদা নেই মৃৎশিল্পের। এই পেশায় নেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। তাই প্রায় সারাবছরই অধিকাংশ নারী মৃৎশিল্পীকে অবসর সময় কাটাতে হয়। পুরুষ মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশ চলে গেছেন অন্য পেশায়। তবে নববর্ষের আগে সব কাজ ফেলে তারা ছুটে আসেন পুরোনো এই পেশায়। মৃৎশিল্প থেকে সারা বছর কারিগররা আয়ের মুখ না দেখলেও বৈশাখী মেলা ঘিরে থাকে বাড়তি উপার্জনের সম্ভাবনা। এবারও মাসজুড়ে প্রতিটি কুমারপাড়ায় ছিল ব্যস্ততা।

কামাল্লা ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের পালপাড়ায় দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। জরাজীর্ণ আবাসগুলোতে কেউ মাটি ঘুটছেন, কেউ সেই মাটি ছাঁচে দিয়ে তৈজসপত্র তৈরি করছেন। কেউবা খেলনা শুকানোর পর রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুদের চাহিদা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িপাতিল, মাটির চুলা, শিলপাটা, কড়াই, কলস, কুলা, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, নৌকা, টিয়া, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, মাছ, হাঁসসহ নানা রকম ফল, ফুল আর বাহারি মাটির ব্যাংক, প্লেট, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ। এ ছাড়া রয়েছে মাটির তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্র।

কামাল্লা গ্রামের সন্ধ্যা রানী পাল ও শিখা রানী পাল জানান, এখন মাটির জিনিসের তেমন কদর না থাকায় সারাবছর টানাপোড়েনের মধ্যে চলে তাদের সংসার। পূর্বপুরুষের পেশা হওয়ায় ইচ্ছা হলেও ছাড়তে পারছেন না। সারাবছর অবসর সময় পার করলেও বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও জিনিসপত্রের চাহিদা থাকায় এই সময়ে ব্যস্ততা থাকে তাদের।
কথা হয় মৃৎশিল্পী হরি ভূষণ পালের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বছরের এই একটি উৎসব ঘিরে তাদের অনেক আশা থাকে। বৈশাখ মাস এলে মেলায় মাটির খেলনা সামগ্রীর চাহিদা বাড়ে। তাই এ সময় কিছু আয় হয়। তিনি হতাশার সুরে বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করত, তাহলে ব্যবসাটা ভালোভাবে করতে পারতাম।’
মৃৎশিল্পী কানন বালা জানান, পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। এই মেলা থেকে শখের বসে অনেকে মাটির সামগ্রী, বিশেষ করে মাটির খেলনা কেনেন। তাই এই সময়ে কর্মব্যস্ততা বাড়ে তাদের।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের খুশি পাল বলেন, ‘আমার বয়স ৫০ ছুঁই ছুঁই। বিয়ের পর থেকেই এই পেশার সঙ্গে জড়িত। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন নেই। এই শিল্পের সঙ্গে আমাদের জীবনজীবিকা নির্ভরশীল।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমানের ভাষ্য, আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্প যে হারিয়ে গেছে, বিষয়টি তা নয়। বরং আধুনিকতার ছোঁয়ায় শিল্পকারখানার মাধ্যমে তৈরি হওয়া মাটির তৈজসপত্রর চাহিদা এখন প্রচুর। মুরাদনগরে যদি বেসরকারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এসব মৃৎশিল্পীকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে অবশ্যই এই শিল্প থেকে ভালো সুফল পাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি মৃৎশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে বিআরডিবি ও সমবায় কার্যালয় থেকে যেন সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু মুরাদনগরে কোনো মৃৎশিল্পের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নেই, তাই মৃৎশিল্পীদের এই পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে সহজে সরকারি সহায়তা দিতে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রনেতাকে ৪৭ দিন গুম করে রাখার মামলায় চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান সোহায়েলকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
  • চীনের আগমনে বাংলাদেশের পানিসম্পদ নিয়ে নতুন দৃশ্যপট
  • বৈশাখে শতবর্ষীয় বাঁশির সুর বাজে যে গ্রামে
  • মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা