তুরস্কে কারাবন্দী ইমামোগলু বিরোধীদলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মনোনীত
Published: 25th, March 2025 GMT
তুরস্কের বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) কারাবন্দী ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে আনুষ্ঠানিকভাবে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে।
সিএইচপির একজন মুখপাত্র সোমবার এ ঘোষণা দেন। খবর: এএফপি
২০২৮ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরদোয়ান সরকারের কঠোর ধরপাকড়ের মধ্যেই ইমামোগলুকে প্রার্থী ঘোষণা করল সিএইচপি।
সিএইচপির এই সিদ্ধান্তের পরপরই দেশজুড়ে বিক্ষোভের মাত্রা আরও বেড়েছে। এরদোয়ান প্রশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে রাজধানী আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত পাঁচ দিনে ১ হাজার ১৩৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে বার্তা সংস্থা এএফপির একজন ফটোসাংবাদিকসহ ১০ জন সাংবাদিকও রয়েছেন।
রোববার দলীয় প্রাইমারিতে ভোটাভুটি আয়োজন করে সিএইচপি। ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই ভোটে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগ দেয় দলটি। এতে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ভোট দেন, যাদের মধ্যে ১ কোটি ৩২ লাখের বেশি দলটির সদস্য নন। ভোটে ইমামোগলুই একমাত্র প্রার্থী ছিলেন।
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহযোগিতার অভিযোগে ইমামোগলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রোববার আদালত তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। আদালতের এই রায়ের পর ইমামোগলুকে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদ থেকেও অপসারণ করা হয়েছে।
কারাগারে পাঠানোর আগে আইনজীবীদের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ইমামোগলু বলেন, ‘আমি একটি সাদা জামা পরেছি, যে জামায় তোমরা দাগ লাগাতে পারবে না। আমার একটি শক্তিশালী হাত রয়েছে, যা তোমরা মচকাতে পারবে না। আমি সামান্যতমও মাথা নত করব না। এই লড়াইয়ে আমি জয়ী হব।’
এদিকে ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইমামোগলুকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক আঘাত।’
বিরোধীদল সিএইচপি এই গ্রেপ্তারকে ‘রাজনৈতিক ক্যু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দলের নেতারা জানিয়েছেন, ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আ’লীগকে গণতান্ত্রিক সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবতে পারি না
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একাত্তরে রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। মানুষকে অরক্ষিত রেখে কোনো দিকনির্দেশনা না দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা পালিয়ে গিয়েছিলেন। চব্বিশেও তারা নেতাকর্মীকে রেখে হেলিকপ্টারে ভারতে পালিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করত না। আওয়ামী লীগকে আর কোনো গণতান্ত্রিক সুবিধা দেওয়ার কথা চিন্তা করতে পারি না।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি এ সভার আয়োজন করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছু কিছু মানুষ, কিছু কিছু দল বোঝানোর চেষ্টা করছে, ১৯৭১ সালে কোনো ঘটনাই ছিল না। যারা সে সময় হত্যাযজ্ঞে সহযোগিতা করেছে, তারা এখন গলা ফুলিয়ে কথা বলে। আমি কারও নাম বলতে চাই না, তিক্ততাও সৃষ্টি করতে চাই না। ইতিহাস ইতিহাসই। ইতিহাস কেউ বিকৃত করতে
পারবে না।
সংসদ নির্বাচন বিলম্বিত করতে নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনের বিকল্প নেই। কারণ, নির্বাচনের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের পথে যেতে হবে। কিন্তু নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে; যেন এই প্রক্রিয়া (নির্বাচন) পিছিয়ে যায়, বিলম্বিত হয়।
তিনি আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু নতুন নতুন ‘কুতুব’ আবির্ভূত হয়েছে। তারা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চান, জানি না।
এনসিপি নেতা সারজিস আলমের শোডাউনের ঘটনার ইঙ্গিত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যারা একশ গাড়ি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করতে যায়, তারা কী করবে– সেটা আমরা ভালো বুঝি। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে পর্যন্ত বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে, যা আমরা কোনোমতেই মেনে নিতে পারি না।
দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।