সংবাদ সম্মেলনের প্রথম পর্ব শেষ। তখনই অন্যরকম একটা মুহূর্ত গতকাল দেখা গেল শিলংয়ের পাঁচতারকা হোটেলে। ভারতের কোচ মানোলো মার্কুইজের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন বাংলাদেশ কোচ ক্যাবরেরা। ভারত লড়াইয়ের অন্য লড়াই হতে যাচ্ছে ডাগআউটে। মস্তিষ্কের লড়াইয়ে মানোলো ও ক্যাবরেরা; দু’জনের জন্মই স্পেনে।

ভারতের কোচ মানোলো মার্কুইজের বেড়ে ওঠা বার্সেলোনায়। আর বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার বেড়ে ওঠা মাদ্রিদে। স্পেনের ফুটবলে দুটি ক্লাবই একে অপরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। আজ বাংলাদেশ-ভারত এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ডাগআউটে দৃষ্টি থাকবে দুই কোচের দিকে। অভিজ্ঞতায় ক্যাবরেরার চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারতের মানোলো। স্পেনের দ্বিতীয় স্তরের ক্লাবকে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। এর বাইরে আইএসএলে ভারতের ক্লাব গোয়ার ম্যানেজার ছিলেন মানোলো। 

কোচ ক্যাবরেরার কোচিং অভিজ্ঞতা বলতে বাংলাদেশ দল। সাড়ে তিন বছর ধরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। এই প্রথম ভারতের বিপক্ষে ডাগআউটে দাঁড়াবেন ক্যাবরেরা। যেখানে তাঁর প্রতিপক্ষ স্বদেশি মানোলো। 

প্রতিপক্ষ দলের কোচ প্রসঙ্গে এভাবেই কথা বলেন ক্যাবরেরা, ‘তাঁর মতো কোচের বিপক্ষে দাঁড়ানোটা আমার জন্য ভালোলাগা কাজ করছে। আমি মনে করি, আগামীকাল (আজ) সবার জন্য একটা খুব উপভোগ্য ম্যাচ হতে চলেছে।’ 

ভারতের কোচ মানোলোর কথাতেও উঠে এসেছে ক্যাবরেরার নাম, ‘এটা ঠিক আমরা এমন দুই শহরে জন্ম নিয়েছি, যে দুটি দলের (বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ) লড়াই সবাই জানে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক য বর র র

এছাড়াও পড়ুন:

সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বেড়ে ১৮৯ টাকা

ব্যবসায়ীদের বাড়ানো সয়াবিন তেলের দাম মেনে নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত রোববার সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৪ টাকা ও পাম তেলের দাম ১২ টাকা বাড়ল।

নতুন দাম অনুসারে, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে খরচ করতে হবে ১৮৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা।

বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম হবে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা ছিল ১৫৭ টাকা।

এদিকে, এই একই দাম কার্যকর করতে গত রোববার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর একদিন পরে একই দাম ঘোষণা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য সচিবের রুমে ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করার পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে দাম বাড়ানোর কথা জানান।

এর আগে ঈদের ছুটির পর ৬ এপ্রিল ও ৮ এপ্রিল তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দুই দফা বৈঠক করা হয়েছিল। তবে ওই সময় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এরপর ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ১৩ এপ্রিল। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণার পরপর থেকেই নতুন দর কার্যকর হবে জানায় সংগঠনটি।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে কেন ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “এটা তারা করতে পারে না। আজ দাম চূড়ান্ত হয়েছে। তারা যদি আগে ঘোষণা দেয়, সেটা বেআইনি।”

তবে এ ঘোষণার পর বৈঠকের জন্য ডাকা হয় ব্যবসায়ীদের। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে তলব করে চিঠি পাঠিয়ে টিকে, মেঘনা, সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। চিঠি পাঠানো হয় ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান এবং ভোজ্যতেল কারখানা মালিক সমিতির সভাপতির কাছেও। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার তৃতীয় দফায় বৈঠক হলো। যে বৈঠকে ব্যবসায়ীদের দামি মেনে দাম বাড়ানো হলো।

এদিকে, ঈদের আগে ২৭ মার্চ প্রথম নতুন করে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন মিল মালিকেরা। তখন বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা। আর খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়াতে চান লিটারে ১৩ টাকা। ওই সময় ভোজ্যতেলের কর-সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরদিন ১ এপ্রিল থেকে এই দর কার্যকরের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে এর দাম কার্যকর করা বেআইনি ছিল। এখন ওই প্রস্তাবের চেয়ে কিছুটা কমিয়ে অনুমোদন দেওয়া হলো।

এপ্রিলের শুরু থেকেই কর সুবিধার সময় শেষ হওয়া ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়াতে চান। ওই দিন দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা সংগঠনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল। এরপর থেকেই সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়।

জানা যায়, গত রমজানের আগে ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে সরকার ভোজ্যতেলের ওপর যে শুল্ক-করে ছাড় দিয়েছিল, তার মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়ায় এই দাম বাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপর ঈদের ছুটি শেষে গত সপ্তাহের শুরু থেকে দফায় দফায় আলোচনা শুরু হয়। তখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি হবে নাকি কম, তা নিয়ে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা চলে।

এদিকে, কারখানার মালিকদের দাবির আগেই ভোজ্যতেলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কর ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন। তবে এনবিআর এ বিষয়ে সায় দেয়নি।

এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন লিটারপ্রতি দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ