ইতিকাফ অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। নারীদের জন্য ইতিকাফ সহজও বটে। নারীরাও ইতিকাফ করতে পারেন। আয়শা (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) ইন্তেকাল পর্যন্ত রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করেছেন। তার ইন্তেকালের পর তাঁর স্ত্রীরা ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ২,০২৬; মুসলিম, হাদিস: ১,১৭২)
তবে কারও স্বামী এমন অসুস্থ বা অক্ষম হন যে তার নিবিড় শুশ্রূষার প্রয়োজন, তাহলে তার ইতিকাফে বসা উচিত হবে না। কিংবা কারও ছোট ছোট সন্তান থাকলে যদি দেখা দেখার কেউ না থাকে, তবে তারও উচিত হবে না ইতিকাফে বসা। (আহকামে রমজান ও জাকাত, ৬৪)
নারীর ইতেকাফের বিধান
রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ নারীর জন্য মোস্তাহাব। রাসুলের স্ত্রীরা ইতিকাফ পালনের জন্য রাসুলের অনুমতি চেয়েছেন। এতে প্রমাণ হয়, ইতিকাফের জন্য অভিভাবকের অনুমতি নেওয়া জরুরি। নারীদের ইতেকাফের পরিবেশ হতে হবে পুরুষের সংস্পর্শ থেকে দুস্তর ব্যবধানে। (আলবানি, কিয়ামু রমজান, ২৯)
ইতিকাফের জন্য বিবাহিতা নারীর স্বামীর অনুমতি নিতে হবে। স্বামীর উচিত যুক্তিসংগত ও গ্রহণযোগ্য কারণ ছাড়া স্ত্রীর ইতিকাফ বারণ না করা, তাদের ইতিকাফের সওয়াব থেকে বঞ্চিত না করা। (বাদায়েউস সানায়ে, ২/২৭৪; ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪২৯)
অনুমতি দেওয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে ইতিকাফে বাধা দিতে পারবে না। বাধা দালে স্ত্রীর সে বাধা মান্য করা কর্তব্য নয়। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪২৯; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি, ১/২১১)
আরও পড়ুনমহানবীর (সা.) ইতিকাফ২০ মার্চ ২০২৫
কোথায় ইতিকাফ করবেন
নারীরা ইতিকাফ করবেন ঘরের নামাজের জন্য নির্ধারিত স্থানে। এমন নির্ধারিত স্থান না থাকলে ইতেকাফের জন্য একটি স্থান নির্ধারিত করে নেবেন। তবে মসজিদে ইতিকাফ করাও তাদের জন্য বৈধ—যেভাবে রাসুলের (সা.) সঙ্গে তাঁর স্ত্রীরা মসজিদে নববিতে ইতিকাফ করেছেন। (হেদায়া, ১/২৩০; ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি ১/২১১; বাদায়েউস সানায়ে, ২/২৮২)
নির্ধারিত স্থান থেকে মানবিক প্রয়োজন ছাড়া বের হতে পারবেন না, তাহলে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। অর্থাৎ, পেশাব-পায়খানা বা অজুর জন্য বাইরে যেতে পারবেন। খাবার পৌঁছে দেওয়ার লোক না থাকলে খাবার আনার জন্য বাইরে যেতে পারবেন। পানাহারও সেই নির্ধারিত স্থানে করতে হবে। (হেদায়া, ১/২৩০)
ইতিকাফের স্থান থেকে অন্যদের সাংসারিক কাজের নির্দেশনা দেওয়া যাবে। তবে বাইরে যাওয়া যাবে না। রান্নার লোক না থাকলে ইতেকাফের স্থানে বসে রান্না করা সম্ভব হলে করা যাবে। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া, ১৫/৩৩৪)
দরকার হলে সেখানে বাইরের কাউকে ডাকতে পারবেন, কথা বলতে পারবেন। (বাদায়েউস সানায়ে, ২/২৮২; ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৩৫)
আরও পড়ুনরমজানে ইতিকাফের নিয়ম ২৯ মার্চ ২০২৪তিনটি জরুরি বিধান
১. ইতিকাফ অবস্থায় দিন-রাতে কখনো স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়া যাবে না। তবে তিনি চাইলে পাশে থাকতে পারবেন। (বাদায়েউস সানায়ে, ২/২৮৫; ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৪৪২)
২. শিরক বা কুফরি কাজে লিপ্ত হলে এবং অজ্ঞান বা পাগল হয়ে গেলে বা মাতাল হয়ে পড়লে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে।
৩. ঋতু হলে, সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে বা গর্ভপাত হলে ইতিকাফ বহাল থাকবে না। (আহসানুল কাতাওয়া, ৪/৫০২)
আরও পড়ুন ইতিকাফ আল্লাহর ঘরে, আল্লাহর সঙ্গে০৪ এপ্রিল ২০২৩উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে যুবককে গুলি, আটক ২
লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে রুবেল হোসেন নামে এক যুবক আহত হয়েছেন। গুলিটি তার বাম হাতের কব্জিতে লেগেছে। এ ঘটনায় আজাদ হোসেন বাবলু ও আলমগীর হোসেন রাব্বি নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পূর্ব চৌপল্লী গ্রামের বেপারি বাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
শনিবার (১২ এপ্রিল) চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
ঝিনাইদহে ছাত্রদল নেতাসহ কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর, মালামাল লুট
জামিন: জেল গেটে হামলার শিকার সাবেক এমপি আব্দুল আজিজ
আহত রুবেল পূর্ব চৌপল্লী গ্রামের বেপারি বাড়ির আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার, মাদক কারবার নিয়ে রুবেল ও কদু আলমগীরের মধ্যে বিরোধ চলছে। দুইজনই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত শুক্রবার বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে রুবেলকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠান।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় রুবেল জানান, চৌপল্লী বাজার থেকে তিনি বাড়ি যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থল পৌঁছলে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার বাম হাতের কব্জিতে বিদ্ধ হয়। কে বা কারা গুলি করেছে তিনি তা দেখেননি। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়ে যান।
তিনি বলেন, “অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কদু আলমগীর আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। এলাকায় থাকতে হলে টাকা দিতে হবে, তা না হলে আমাকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দিয়েছে। কয়েকবার বাড়িতে লোকজন পাঠিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছে।”
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কমলাশীষ রায় বলেন, “বাম হাতের কব্জিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একব্যক্তি হাসপাতালে আসেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদক ব্যবসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে রুবেলকে গুলি করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বলেন, “গুলিবিদ্ধের ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ